জে রাসেল, ফরিদপুর
সমকামিতায় বাধ্য করায় হত্যা করা হয় ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায় মো: কাউসার হোসেন খান (৪০) নামে বিদেশ ফেরত এক বালু ব্যবসায়ীকে। এ ঘটনায় হত্যার সাথে জড়িত ১৬ বছরের এক কিশোর ও তার বাবাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার হওয়া কিশোর হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে এবং নিহতের মোবাইলের পোড়া অংশ বিশেষ, গায়ে পরিহিত জ্যাকেট, পরিহিত শার্ট-প্যান্ট, হত্যায় ব্যবহৃত চাকু ও একটি মোটরসাইকেল আলামত হিসেবে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গতকাল রবিবার (২৭ নভেম্বর) বিকাল ৩টায় ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান (পিপিএম)।
গ্রেফতার ওই কিশোরের নাম সাফাওত হোসেন সিফাত। তার বাবার নাম শাহীন মোল্যা (৫০)। তাদের বাড়ি চরভদ্রাসন উপজেলা সদরের বিএসডাঙ্গী গ্রামে।
গত শুক্রবার রাতে চর ভদ্রাসনের চর হরিরামপুর ইউনিয়নের বিশাই মাতুব্বরের ডিঙিতে হত্যার পর বালি চাপা দিয়ে ফেলে রাখা হয় কাউসার হোসেনকে। পরেরদিন তার লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত কাউসার উপজেলা সদরের এমপিডিঙি গ্রামের জালাল খানের ছেলে। তিনি বালির এবং কাঠের ফার্নিচারের ব্যবসা করতেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান জানান, হত্যায় জড়িত থাকার সন্দেহে তাদের হেফাজতে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যা রহস্য উদঘাটন করা হয়।
তিনি জানান, সিফাত পেশায় একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। কাজের সুবাদে তার সাথে কাউসারের পরিচয় হয়। এরপর তাদের মাঝে সমকামিতার অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রায়ই এ কাজে লিপ্ত হতো তারা। যা সিফাতের মোটেই পছন্দ ছিল না। এ জন্য কাউসার সিফাতকে ভয়ভীতিও দেখাত।
পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার রাতে সিফাতকে ফোন করে ডেকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায় কাউসার। সেখানে সিফাতকে সমকামিতা কাজে বাধ্য করলে উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে কাউসার তার পকেট হতে সুইচ চাকু বের করে সিফাতকে ভয়ভীতি দেখাতে থাকলে সিফাত তার হাত ধরে ফেলে এবং উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে কাউসারের গলায় চাকুর আঘাত লাগে। এতে সে মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে গেলে সিফাত তার হাত থেকে চাকু কেড়ে নিয়ে তার পিঠের ওপর বসে পিঠে, গলায়, গর্দানে ও মাথার পেছনে উপর্যুপরি আঘাত করে তাকে হত্যা করে। এ ঘটনার পর তার মোবাইলফোন, মোটরসাইকেল এবং চাকু নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে সিফাত।
তিনি জানান, কাউসারকে হত্যা করে বাড়ি ফেরার পর তার মা-বাবা গায়ের রক্তমাখা কাপড়-চোপড় দেখে তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে তাদেরকে সবকিছু খুলে বলে। তখন তার বাবা শাহিন মোল্লা সিফাতের জামা-কাপড় ধুয়ে ফেলে। জ্যাকেটটি বসতবাড়ির মাটির মধ্যে পুতে ফেলে এবং কাউসারের মোবাইল ফোন পুড়িয়ে ফেলে। আর হত্যায় ব্যবহৃত চাকু বাড়ির পাশে পুকুরের মধ্যে ছুড়ে ফেলে এবং কাউসারের মোটরসাইকেলটি ফরিদপুরের চানমারিতে রেখে যায়।
সংবাদ সম্মেলনে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ ইমদাদ হোসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার, ওসি ডিবি মামুনুর রশীদ, চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিন্টু মণ্ডল উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড