শুভংকর পোদ্দার, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ)
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে প্রশাসনের বন্ধ করে দেওয়া দুইটি ইটভাটায় আবারও শুরু হয়েছে ইট তৈরি ও পোড়ানো। গত ১৮ এপ্রিল (সোমবার) হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম অভিযান চালিয়ে উপজেলার তিনটি অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ করে দেন।
ইটভাটাগুলো হলো-বলড়া ইউনিয়নের সততা ব্রিকস, আমিন ব্রিকস ও স্বাধীন ব্রিকস।
মহামান্য হাইকোর্টের দেওয়া ঢাকাসহ পাঁচ জেলার অবৈধ ইটভাটা সম্পর্কিত নির্দেশের প্রেক্ষিতে উপজেলার অবৈধ তিনটি ইটভাটা-সততা, আমিন ও স্বাধীন ব্রিকসের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু গত এক মাস যাবত আবারও ইটভাটার কার্যক্রম চালু করেছে সততা ও স্বাধীন ব্রিকস।
নিয়মিত ইট তৈরির পাশাপাশি দুইটি ভাটায় ইট পোড়ানোও হচ্ছে। নিষিদ্ধ হলেও ইট তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে ফসলি জমির মাটি। পোড়ানো হচ্ছে কাঠ।
গত বুধবার (১৬ নভেম্বর) সরজমিনে সততা ও স্বাধীন ব্রিকসে গিয়ে দেখা যায় দুইটি ভাটায়ই ইট পোড়ানো হচ্ছে। অর্ধ শতাধিক শ্রমিক দুইটি ইট ভাটায় মাটি প্রস্তুত, ইট তৈরি, শুকানো এবং পোড়ানোর কাজ করছেন। শ্রমিকদের সাথে কথা বললে তারা জানান, প্রায় এক মাস ধরে দুইটি ভাটার কাজ চলছে। তবে ইট পোড়ানো হচ্ছে সপ্তাহ খানেক ধরে।
তিন সপ্তাহ যাবত সততা ব্রিকসে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন বলে জানান ভেলাবাদ থেকে আসা লিটন। তিনি বলেন, ‘তিন সপ্তাহ যাবত ইট ভাটার কাজ চলছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সততা ব্রিকসের আরেক শ্রমিক বলেন, ‘তিন সপ্তাহ ধরে ভাটার কাজ চলছে। আমরা ১৯ জন শ্রমিক প্রতিদিন ৩০ হাজার করে ইট তৈরি করছি। এক সপ্তাহ ধরে ভাটায় ইট পোড়ানো চলছে।
স্বাধীন ব্রিকসের শ্রমিক আলামিন বলেন, ভাটার কাজ শুরু হয়েছে প্রায় মাসখানেক আগে। আমি চারদিন ধরে কাজে এসেছি। তিনদিন যাবত তিনটি চেম্বারে ইট পোড়ানো চলছে। প্রতিটি চেম্বারে ১৬ হাজার ইট ধরে।
ইট ভাটায় কাঠ পোড়ানোর ব্যাপারে তিনি বলেন, কয়লা দিয়ে ইট পোড়ানো হয়। তবে আগুন ধরানোর সময় কাঠ ব্যবহার করা হয়। প্রতিবার আগুন ধরাতে প্রায় ৩০০-৪০০ মণ কাঠ পুড়াতে হয়।
সততা ব্রিকসের মালিক ও বলড়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোসলেম উদ্দিন খান কুন্নু বলেন, আমরা হাইকোর্টে মামলা করেছি। মামলা চলছে। উপজেলায় রাস্তা তৈরি, ঘর নির্মাণসহ সরকারি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ চলছে। আমরা ইট প্রস্তুত না করলে সরকারি কাজই তো চলবে না।
অপর দিকে স্বাধীন ব্রিকসের মালিক শীতল চৌধুরী বলেন, ইটভাটায় আমরা চারজন অংশীদার। আমাদের ভাটার কাগজপত্র নবায়ন না থাকায় গতবছর প্রশাসন বন্ধ করে দিয়েছিল। এ বছর আমরা সব কাগজপত্র ঠিক করতে ঢাকায় পাঠিয়েছি। তবে ঠিক হয়ে এখনো আসেনি।
হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, তারা যদি আবার ভাটা চালু করে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মানিকগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক নুর আলম বলেন, দ্রুতই আমরা অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযানে নামবো।
জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ বলেন, তারা আবারও ভাটা চালু করেছে এটা জানা ছিল না। দ্রুতই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড