• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

দৌলতপুরে ব্যবসায়ীর জমি নিয়ে টানাটানি!

  তরিকুল ইসলাম তরুন, কুষ্টিয়া

২৩ নভেম্বর ২০২২, ১৭:০৬
দৌলতপুরে ব্যবসায়ীর জমি নিয়ে টানাটানি!

মালিকানাধীন জমির হিসাব খতিয়ে দেখা হচ্ছে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান বিশ্বাস গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুজ্জামান বিশ্বাস ও তার স্ত্রী সেলিনা বিশ্বাসের। তারা আইন বহির্ভূতভাবে কৃষি জমি অর্জন ও ব্যবহার করছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে, এরই মধ্যে শুনানি হয়েছে সহকারী কমিশনারের কার্যালয়ে।

১৯৮৪ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী কৃষি জমি মালিকানার ঊর্ধ্বসীমা ১শ' বিঘা থেকে কমিয়ে ৬০ বিঘা ধরা হয়, যাতে সুস্পষ্ট বলা হয়েছে কোনো ব্যক্তি বা এক সাথে বসবাসরত পরিবার ৬০ বিঘার বেশি কৃষি জমি ধারণ করতে পারবে না।

কিন্তু নুরুজ্জামান বিশ্বাস এবং তার স্ত্রী মিলে অন্তত ৮৮ বিঘা কৃষি জমির মালিক। এছাড়াও নামে-বেনামে আরও অনেক কৃষি জমি দখলে রয়েছে পরিবারটির। চাষাবাদি জমি ব্যবহার করা হচ্ছে শিল্প বাণিজ্যের প্রয়োজনে। এতে এক দিকে যেমন প্রাপ্য প্রকৃত রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার, অন্য দিকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষি উৎপাদন।

দেশের সীমান্তবর্তী বিশাল আয়তনের দৌলতপুর উপজেলায় নুরুজ্জামান বিশ্বাসের জমি জমার হিসাব তদারকির পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকজন ধনাঢ্য ব্যক্তিকে সতর্ক করে তথ্য চাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে সংশ্লিষ্ট দাপ্তরিক সূত্রে।

সম্প্রতি ব্যবসায়ী দম্পতি নুরুজ্জামান বিশ্বাস ও সেলিনা বিশ্বাসের নামে অতিরিক্ত জমির সন্ধান পেলে তা যাচাই-বাছাই শুরু হয়। এই ব্যবসায়ীর পক্ষে দৌলতপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) - এর কার্যালয়ে আইনি শুনানিতে অংশ নিয়েছেন কোম্পানির কর্মকর্তা নাহারুল ইসলাম মিনু।

জানা গেছে- এখনো ভূমি কর্তৃপক্ষের হিসাবে থাকা অতিরিক্ত জমির সুষ্ঠু ব্যাখ্যা দিতে পারেনি বর্তমান মালিকেরা। সুষ্ঠু জবাবের জন্য আরও সময় চেয়েছেন তারা। এ দিকে নুরুজ্জামান বিশ্বাস পরিবারের জমি ক্রয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকেরা।

ষাট বিঘার উপরে থাকা সকল কৃষি জমি সমর্পণ করতে হবে সরকারকে তবে সমর্পিত জমি কোনটি হবে তা নির্ধারণ করবেন ব্যক্তি নিজেই। অতিরিক্ত জমি স্বেচ্ছায় সরকারকে না দিলে, সেক্ষেত্রে সরকার নিবে সরকারের সুবিধা মতো।

এ প্রসঙ্গে দৌলতপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আফরোজ শাহীন খসরু বলেন, আমরা তথ্য যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে নুরুজ্জামান বিশ্বাসের অনুকূলে অতিরিক্ত জমির খোঁজ পাই, এ বিষয়ে শুনানি হয়েছে, উপজেলার আরও কয়েকজনকে নোটিশ দেয়া হয়েছে।

তবে পর্যাপ্ত তথ্য থাকলেও শুনানিতে অংশ নেয়ার কথা অস্বীকার করেছেন নাহারুল ইসলাম মিনু, গণমাধ্যমের সাথে কথা বলতে নারাজ নুরুজ্জামান বিশ্বাস।

স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি জমির মালিকানায় ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণের বিষয়টি আইনভূক্ত রাখেন। প্রেসিডেন্সিয়াল ওই অর্ডারে ঊর্ধ্বসীমা ছিল ১শ’ বিঘা, সময়ের প্রয়োজনে যা পরে নেমেছে ষাট বিঘায়।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সিরাজুল ইসলাম জানান, দৌলতপুরে সিলিং বহির্ভূত জমির খবর পেয়েছি। জেলায় এধরণের জমি আছে কি-না তা নিয়মিত তদারকি করা হয়।

সম্প্রতি দৌলতপুরে নদী ভাঙন সংক্রান্ত নিয়ম ও মালিকানা হীন বা পড়ে থাকা কৃষিজমি খাস খতিয়ান ভুক্ত করার কার্যক্রমে অন্তত ৩শ' একর জমি সরকারের মালিকানায় যাচ্ছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে তথ্য পাওয়া গেছে। যে-সব মানুষের কাছে কৃষি জমির সিলিং (সর্বোচ্চ পরিমাণ সীমা) বহির্ভূত জমি রয়েছে তাদের জমি নিয়ে নিবে সরকার।

উল্লেখ্য, করোনা মহামারী পরবর্তী সময় এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে খাদ্যদ্রব্যের পর্যাপ্ত উৎপাদন ও মূল্যবৃদ্ধির লাগাম ধরতে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও কৃষি জমি সংরক্ষণে গুরুত্ব বাড়িয়েছে সরকার।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড