আনোয়ার পারভেজ, নাটোর
নাটোরের সিংড়ায় নকল স্বর্ণের মূর্তি বিক্রিতে জড়িত সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব নাটোর ক্যাম্পের সদস্যরা। গতকাল সোমবার গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে সিংড়া থানায় প্রতারণার মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
নাটোর র্যাব ক্যাম্পে কোম্পানি অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফরহাদ হোসেন ও কোম্পানি উপ অধিনায়ক সহকারী পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, জেলার লালপুর উপজেলার সালামপুর গ্রামের মহসিন আলীর ছেলে তরিকুল ইসলামের সঙ্গে রাজশাহীর বাঘা শাহদোলা মাজার জিয়ারতের সময় গ্রেফতার একজনের সাথে পরিচয় হয়। এরপর এক পর্যায়ে মোবাইল নম্বর আদান প্রদান হয়। পরবর্তীকালে প্রতারক বিবাদী ভুক্তভোগীকে বিভিন্ন সময় ফোন দিয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং তাদের বাড়িতে দাওয়াত দেয়।
তারা জানান, ভুক্তভোগী গত আগস্ট তার বাড়িতে গিয়ে দাওয়াত খেয়ে আসেন। পরে বিবাদী ভুক্তভোগীকে ফোন দিয়ে জানান তার এক নিকট আত্মীয় পুকুর খনন করতে গিয়ে একটি স্বর্ণের পুতুল পেয়েছেন। পুতুলটি সে ভুক্তভোগীর কাছে অল্প দামে বিক্রি করার প্রস্তাব দেন।
এরপর বিবাদীর কথা মতো ভুক্তভোগী সিংড়ার পিপলসন দড়িপাড়া এলাকায় বিবাদীর বাড়িতে আসলে গ্রেফতারকৃত ও অন্যান্য অভিযুক্তদের সহায়তায় পুতুলটি ভুক্তভোগীকে দেখানো হয়। পরে এটি খাঁটি সোনা কি-না তা পরীক্ষার জন্য পুতুলের ডান হাতের সামান্য অংশ কেটে বাদীকে বাড়িতে গিয়ে পরীক্ষা করতে বলা হয়।
ভুক্তভোগী পুতুলের সামান্য কাটা অংশ স্বর্ণকারের দোকানে পরীক্ষা করে কাটা অংশ স্বর্ণ বলে নিশ্চিত হন। পরবর্তীকালে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে দুই লক্ষ বিশ হাজার টাকার বিনিময়ে পুতুলটি কিনে নিজের এলাকার স্বর্ণকারের দোকানে পরীক্ষা করালে স্বর্ণকার তাকে জানায় এই পুতুলের মধ্যে স্বর্ণের কোনো অস্তিত্ব নেই। যার প্রেক্ষিতে গত রবিবার বিকালে তিনি পুতুল নিয়ে অভিযুক্তদের কাছে আসেন। পুতুল ফেরত দিয়ে তার দেওয়া টাকা ফেরত চাইলে অভিযুক্তরা তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন।
এরপর তিনি সেখান থেকে পালিয়ে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের জামতলি বাজারে এসে র্যাবের টহল দলকে দেখতে পেয়ে বিষয়টি জানালে র্যাব রাতেই সিংড়ার ডাহিয়া ইউনিয়নের পিপলসন দড়িপাড়া এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযানে নকল স্বর্ণের মূর্তি বিক্রির সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেফতার ও নকল মূর্তিটি উদ্ধার করে র্যাব।
অভিযানে গ্রেফতারকৃতরা হলেন- পিপলসন (দড়িপাড়া) গ্রামের মো. মন্টু (৪০), মো. মুকুল (৪৪), মো. শফিকুল (৩০), মোহাম্মদ আলী (৪০), মো. জাহিদুল ইসলাম (৫৫), মো. রজিম আহম্মেদ (২২) এবং বগুড়া জেলার শেরপুর থানার লাঙ্গল মোড়া গ্রামের মো. আনোয়ার হোসেন (৩৮)। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি নকল স্বর্ণের মূর্তি, ৯টি মোবাইল ফোন ও মোবাইলের ১১টি সিম উদ্ধার করা হয়। এ সময় প্রতারক চক্রের চার সদস্য কৌশলে পালিয়ে যায়।
গ্রেফতারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে জানান, আটক ও পলাতক সকলেই একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। দীর্ঘদিন থেকে তারা পরস্পর যোগসাজশে দেশের বিভিন্ন এলাকার লোকজনকে মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন লোককে সোনালি রঙয়ের পুতুলকে স্বর্ণের পুতুল বলে বিশ্বাস করিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে স্বর্ণের পুতুল প্রদান করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড