টেন্ডার নিয়ে ছাত্রলীগ নেতার তাণ্ডব, হাসপাতাল ভাঙচুর

নরসিংদীর বেলাবতে টেন্ডারবাজি নিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সারোয়ার হোসেন অপু তাণ্ডব চালিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার উপর হামলা চালানো হয় বলে জানা যায়।

বুধবার (১৬ নভেম্বর) বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ভাঙচুর ও হামলার ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার পরপর হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নিজ নিজ কক্ষ তালা মেরে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যায় এবং কর্ম বিরতি পালনসহ মানববন্ধন করে।

জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের খাদ্য সরবরাহ, ধোলাই ও মালামাল সরবরাহে পৃথক তিনটি ক্যাটাগরিতে টেন্ডার আহবান করা হয়। বুধবার ১৬ই নভেম্বর উক্ত টেন্ডার গুলো লটারি ড্র করার নির্ধারিত দিন ছিল। টেন্ডারগুলোকে কেন্দ্র করে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সারোয়ার হোসেন অপু ও সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার তৌফিক তাদের দলবল নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসে এবং স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নুর আসাদের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে।

এক পর্যায়ে অপু তার দলবল নিয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার ওপর আক্রমণ করে এবং হাসপাতালে ভাঙচুর শুরু করে। এই সময় হাসপাতালের সিসিটিভির সংযোগকারী তার ছিঁড়ে ফেলে, হাসপাতালের দরজা জানালার গ্লাস ভেঙে ফেলে ও হাসপাতালের ভিতরে রক্ষিত বিভিন্ন সরকারি সম্পদ নষ্ট করে পুরো হাসপাতাল জুড়ে সন্ত্রাসী তাণ্ডব চালায়।

খবর পেয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনিরুজ্জামান খান ও মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শারমিন আক্তার খালেদা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। তখন অপু তার সন্ত্রাসী দলবল নিয়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে চলে আসে।

বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভাঙচুর ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তার উপর হামলার প্রতিবাদে হাসপাতালে কর্মরত সকল ডাক্তার, সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী যাবতীয় কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে নিজ নিজ কক্ষ তালাবন্ধ করে বের হয়ে আসে এবং হাসপাতালের সামনে মৌন মানববন্ধন করেন।

এ সময় তাদের হাতে "বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সন্ত্রাসী হামলা, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রাণনাশের অপচেষ্টার প্রতিবাদে মানববন্ধন" লিখিত একটি প্রিন্টেড কাগজ ছিল কিন্তু মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী কেউ মুখ গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে কোন মুখ খোলেনি। যেন কোন এক অপশক্তির ভয়ে এক নীরব প্রতিবাদ।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ কোনো ডাক্তার ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে সাংবাদিকদের কাছে কোনোরকম বক্তব্য দিতে অনীহা প্রকাশ করে।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নুর আসাদ বলেন, উপর মহলের নির্দেশে আমরা এই মুহূর্তে কোন বক্তব্য দিতে পারবো না। তবে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করা হবে।

এ ব্যাপারে বেলাব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহমেদের সাথে কথা বলতে তার মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার ফোন দিলে তিনি তা রিসিভ না করায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।