• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

পাওনা টাকা চাওয়ায় অংশীদারকে পেটালেন চেয়ারম্যান

  কাজী কামাল হোসেন, নওগাঁ

১৩ নভেম্বর ২০২২, ১৪:৩৫
পাওনা টাকা চাওয়ায় অংশীদারকে পেটালেন চেয়ারম্যান

নওগাঁর পত্নীতলায় ইটভাটার ব্যবসায়িক পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে চেয়ারম্যানের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন এক অংশীদার। মারধরের শিকার হাফিজুর রহমান বর্তমানে নওগাঁ সদর হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। এর আগে গত শুক্রবার বিকালে উপজেলার গৌরাদিঘী গ্রামের বিআরবি ইটভাটায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম স্থানীয় আমইড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।

ইটভাটার অংশীদার সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ও কান্তা গ্রামের মৃত ইছাহাক আলীর ছেলে ইয়াসিন আলী মণ্ডল ইটভাটার ব্যবসা শুরু করে। পরবর্তীকালে স্থানীয় কান্তা কিসমত গ্রামের মৃত আব্দুস ছাত্তারের ছেলে জিয়াউর রহমান ও মহাদেবপুর উপজেলার কানলা গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে হাফিজুর রহমান ব্যবসায় যোগ দেয়।

ইযাসিন আলী, জিয়াউর রহমান এবং হাফিজুর রহমান অর্ধেক ও চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম একাই বাঁকি অর্ধেক অংশের মালিক হিসেবে ব্যবসা করে আসছিলেন। এ পর্যন্ত উভয় পক্ষ ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছে। ব্যবসায় বিনিয়োগের পর দ্বন্দ্বের কারণে এ পর্যন্ত তিনজন মিলে ৯০ লাখ টাকা ফেরত পেয়েছেন। কিন্তু বাকি ৪০ লাখ টাকাসহ লভ্যাংশের হিসেব দিতে গড়িমসি শুরু করেন চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম।

এ নিয়ে চলতি বছরের ২২ জুন অংশীদার জিয়াউর রহমান ও ২৩ সেপ্টেম্বর ইয়াসিন আলী মণ্ডল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। এমনকি উপজেলা ইট ভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের চৌধুরী মন্টুর কাছেও অভিযোগ গেলেও তিনি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে ইটভাটায় হিসেব চাইতে গেলে হাফিজুর রহমানকে চেয়ারম্যান ও তার লোকজন লোহার রড ও বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। খবর পেয়ে জিয়াউর রহমান ও ইয়াসিন আলী মণ্ডলসহ পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

গুরুত্বর আহত হাফিজুর রহমান বলেন, লাভ ও পাওনা টাকার হিসেব চাওয়ায় আমাকে মারাত্মকভাবে মারধর করেছে চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ও তার লোকজন। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

অংশীদার ইয়াসিন আলী মণ্ডল বলেন, আমাদের তিনজনের প্রায় এক কোটি ৩০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা আছে। এর মধ্যে ৯০ লাখ টাকা বুঝে পেয়েছি আমরা। বাকি ৪০ লাখ টাকা ও লাভের কোন হিসাব দেয়নি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়েছিলাম কিন্তু পুলিশ কোন সমাধান করে দিতে পারেনি। এসআই নজরুল ইসলাম উল্টো আমাদের বলে যে ইটভাটায় গেলে আপনাদের সমস্যা হবে।

জিয়াউর রহমান নামের আরেক অংশীদার বলেন, থানায় অভিযোগ করেছিলাম এসআই জাফর আহম্মেদকে দায়িত্ব দেয়া ছিল। কিন্তু তিনি কোন ব্যবস্থা না নিয়ে আমাদের উল্টাপাল্টা কথা বলতো চেয়ারম্যানের পক্ষ নিয়ে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পত্নীতলা থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম বলেন, থানায় অভিযোগ করার পর তাদের উভয় পক্ষকে নিয়ে বসেছিলাম। প্রথমবার বসে সুহারা না হওয়ায় পরবর্তীতে আবার আরেকটি দিন বসার জন্য বলা হলে তারা পরবর্তী সময়ে থানায় আসেনি।

থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) জাফর আহম্মেদ বলেন, জিয়াউর রহমান যখন অভিযোগ করেন, সে সময় তৎকালীন ওসি ছিলেন শামসুল আলম শাহ স্যার। উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের চৌধুরী মন্টুকে নিয়ে ওসি স্যার নিজেই বসে মন্টুকে চৌধুরী দায়িত্ব দিয়েছিলেন সুরাহার জন্য। পরবর্তী কি হয়েছে তা আমার জানা নেই। আর আমি কোনো পক্ষপাতিত্ব করিনি।

অভিযুক্ত চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি হাফিজুর রহমানকে মারধর করেনি। একটু ধাক্কা-ধাক্কির ঘটনা ঘটেছে। তারা কোনো টাকা পাবে না। তাদের হিসাব অনেক দিন আগেই মিটিয়ে দিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।

উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের চৌধুরী মন্টুর সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

পত্নীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা বলেন, আমি থানায় কিছুদিন পূর্বে যোগদান করেছি। মারধরের ঘটনা জানা নেই। যদি থানায় অভিযোগ করা হয়, তবে সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড