মো. রাফিকুর রহমান, রাজশাহী
রাজশাহীর দুর্গাপুর অঞ্চলে জামাতের শেকড় নামেই বেশি পরিচিত দুর্গাপুর ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আলতাফ হোসেন। তিনি দুর্গাপুর ফাজিল মাদরাসায় যোগদান করার পর থেকে এ পর্যন্ত চারজনের বেশি সদস্য সেই মাদরাসায় নিয়োগ দিয়েছেন।
ভাতিজা ভাগিনাসহ নিকট আত্মীয়দের দুর্গাপুর ফাজিল মাদরাসার বিভিন্ন পদে চাকরি দিয়ে এরই মাঝে তিনি আলোচনায় চলে এসেছেন।
সম্প্রতি তার মেয়ে জামাইয়ের ভাইকে আবারো নিয়োগ দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন জামাত নেতা অধ্যক্ষ আলতাফ হোসেন। জানা গেছে, সেই প্রার্থী একই থানার আলীপুর এক কলেজের অধ্যক্ষের জামাই। অভিযোগ উঠেছে সেই প্রার্থীর নিকট থেকে পূর্বেই মোটা অংকের লেনদেন করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুর্গাপুর ফাজিল মাদরাসার একটি সূত্র জানায়, শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার অজুহাতে পূর্বে দুটি বরাদ্দ লোপাট করেছেন অধ্যক্ষ নিজেই। এছাড়াও পূর্বে তারই সুপারিশে ফাজিল মাদরাসার সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন তারই দলের ব্যক্তি। যিনি দুর্গাপুরের শিবিরের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। সরকারি দলের উপর যারা হামলা কটূক্তি করেন তাদের দুর্গাপুরে নিজের বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করেছেন সেই শিবির সভাপতি।
অভিযোগ রয়েছে, সেই শিবির ক্যাডারকে সাথে নিয়ে ফাজিল মাদরাসার অর্ধকোটি টাকা গায়েব করেছেন এই আলতাফ হোসেন। বিএনপি-জামায়াত রাজত্ব করা কালে তার ছোটভাইকে ক্ষমতার বলে পানানগর ইউনিয়নের একটি মাদরাসায় নিয়োগ পাইয়ে দেন আলতাফ হোসেন।
সূত্র বলছে, কালো উপায়ে উপার্জনে অর্থ দিয়ে তিনি ক্রয় করেছেন কোটি টাকা মূল্যের জায়গা। নামে বেনামে ব্যাংকে জমিয়েছেন বিপুল অর্থ। সম্প্রতি সময়ে ফাজিল মাদরাসায় নতুন নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে অনেকেই ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন। সরকারি দলের একাধিক ব্যক্তি তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। কিভাবে তিনি জামায়াত-বিএনপির সময় থেকে এখন পর্যন্ত নিজের দাপট দেখিয়ে নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়ম করে চলেছেন সেটি রয়েছে ধুয়াশায় ঢাকা।
সূত্র আরও জানায়, তার এমন অপকর্মের কারণে দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পর্যন্ত তার উপর সন্তুষ্ট নয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের একটি সূত্র বলে- দুর্গাপুর ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এতো পরিমাণ অভিযোগ জমা হয়েছে যে অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লজ্জিত হবে।
দুর্গাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের একজন প্রবীণ ব্যক্তি গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন অধ্যক্ষ আলতাফ হোসেনের অনিয়ম নিয়ে এরই মাঝে আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি।
তিনি বলেন, কয়েক দিনের মধ্যেই আমরা অভিযোগের কপি আপনাদের হাতে দিব। ঢাকা মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে যোগাযোগ করা হলে সেখান কার একজন কন্ট্রোলার মুঠো ফোনে বলেন, দুর্গাপুর ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আলতাফ হোসেনকে আমি চিনি। এখানেও তার নামে অভিযোগ রয়েছে।
এ সময় মুঠো ফোনে কথা না বলার জন্য তিনি অনুরোধ করেন। অধ্যক্ষ আলতাফ হোসেনের বিরুদ্ধে উঠা নানা অনিয়ম নিয়ে কথা বলার জন্য তাকে ফোন করলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়েই ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, আলেম-ওলামাদের পেছনে কেন পড়ে থাকেন আপনারা? তিনি রাগান্বিত হয়ে বলেন- আমি নিজেও সাংবাদিক, তিনি কোনো পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন এমন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তিনি একজন আওয়ামী লীগ নেতার নাম বলে ফোন কেটে দেন।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড