শিব্বির আহমদ রানা, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম)
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার স্থানীয় বিভিন্ন হাঁট-বাজারগুলোতে জমে উঠেছে বাংলার আপেলখ্যাত পেয়ারার বাজার। সকাল হলেই উপজেলার হাঁট-বাজারগুলোতে ভরে যায় এ উপজেলার পূর্ব পাহাড়ি অঞ্চলে উৎপাদিত দেশীয় ও বিদেশি জাতের পেয়ারায়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকাররা এসে ভিড় জমায় এখানে। সকাল থেকেই চলে পাইকার আর খুচরার ব্যবসায়ীদের এ বিকিকিনির হাঁট।
দেশের বিভিন্ন স্থানে পেয়ারা কেজিদরে বিক্রি হলেও এখানে পাইকাররা কিনে ভারপ্রতি ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা। খুচরা বিক্রেতারা বড় সাইজের প্রতি ডজন পেয়ারা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, মাঝারি সাইজের পেয়ারা ৬০ থেকে ৭০ টাকা এবং ছোট সাইজের পেয়ারা ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
এছাড়া আনোয়ারা-বাঁশখালী-পেকুয়া সংযোগ আঞ্চলিক সড়কে চলাচলরত যানবাহন থামিয়ে যাত্রীরা তরতাজা পেয়ারা ক্রয় করছে। পেয়ারার মৌসুম শুরু হওয়ায় বর্তমানে দাম কিছুটা বেশি। মাঝামাঝি সময়ে দাম কমলেও মৌসুমের শেষ দিকে আবারও পেয়ারার দাম বেশি হবে বলে জানান স্থানীয় কয়েকজন পেয়ারা বিক্রেতা।
বাঁশখালী উপজেলার পূর্ব পাহাড়ি অঞ্চলে বিশেষ করে পুকুরিয়া, সাধনপুর, কালীপুর, জঙ্গল জলদী, শীলকূপ, চাম্বল, পুঁইছড়ি এলাকায় পেয়ারার চাষ হয়ে থাকে। নিজস্ব বাগানে ক্ষুদ্র পরিসরে পেয়ারার চাষ করা হলেও অনেকে বাণিজ্যিকভাবে পেয়ারা চাষ করে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করছে।
এ অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হওয়ায় পাহাড় ও পাহাড়ের পাদদেশে নতুন পলি জমার কারণে এখানকার মাটি খুব উর্বর হয়। এর ফলে পেয়ারা চারা রোপণ থেকে শুরু করে গাছ বড় হওয়ার পর পেয়ারা ফলন আসা ও পরিপক্ব পেয়ারা সংগ্রহ করা পর্যন্ত গাছের গোড়ায় রাসায়নিক সার প্রয়োগ ও গাছে কোনো রকম কীটনাশক ছিটানো প্রয়োজন হয় না বাগান মালিক ও চাষিদের। এ কারণে এই পেয়ারাকে স্বাস্থ্যসম্মত বা (অর্গানিক) পেয়ারা বলে।
তাছাড়া চাষিরা ডাঁটা ও পাতাসহ পেয়ারা সংগ্রহ করে এ কারণে ফরমালিন ও রাসায়নিক দ্রব্য মেশানো ছাড়াই ৪-৫ দিন অনায়াসে এ পেয়ারা সংরক্ষণ করা যায়।
বাঁশখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবু সালেক দৈনিক অধিকারকে জানান, পেয়ারা চাষ খুবই লাভজনক এবং উচ্চমূল্যের বাণিজ্যিক ফসল। প্রযুক্তিগত ও বৈজ্ঞানিক উপায়ে চাষ করতে পারলে লাভবান হবার সুযোগ আছে। বিশেষ করে থাই পেয়ারা-৫, থাইপেয়ারা-১০ এবং থাই স্পেশাল জাতের পেয়ারা গুলো বর্তমানে অধিক লাভজনক। এ অঞ্চলের পাহাড়ি পাদদেশে এ জাতের পেয়ারার চাষাবাদ হয়ে থাকে। উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলে পেয়ারা চাষ করে লাভবান হচ্ছে চাষিরা। বিশেষ করে পুঁইছড়ি এলাকায় পেয়ারার বাগান অনেক বেশি। এখানে অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে চাষ করেছে।
তিনি বলেছেন, কৃষি অফিস থেকে এসএসিপি (sacp) এবং এনএটিপি-২ (NATP-2) প্রকল্প থেকে প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনী স্থাপনের মাধ্যমে কৃষক কে গতানুগতিক কৃষি থেকে এ ধরনের উচ্চমূল্যের, লাভজনক কৃষিতে উদ্বুদ্ধকরণ করা হচ্ছে। বাঁশখালীতে প্রায় ৭০ হেক্টর জমিতে পেয়ারার চাষ আছে। পুঁইছড়ীতে পাহাড়ি এলাকায় চাষটা বেশি। ফলন ভাল হওয়ায় ও বাজারমূল্য ভাল থাকায় এ অঞ্চলের পেয়ারা চাষিরা লাভবান হবে।
সম্পাদক: মো. তাজবীর হোসাইন
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড