মোঃ রাফিকুর রহমান লালু, রাজশাহী:
স্বামী ও দুটি কন্যা সন্তান রেখে রাজশাহীর বাঘায় এক কলেজ ছাত্রের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন করেছে এক গৃহবধু।
গত মঙ্গলবার (২৬ শে জুলাই) রাত ৮ টায় স্বামী-সন্তান রেখে ওই যুবকের বাড়িতে আসে গৃহবধু। তাকে না পেয়ে শুরু করে অনশন ।
এই ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়নের মহদিপুর পন্ডিত পাড়া গ্রামে।
প্রত্যাক্ষদর্শী সুত্রে জানা গেছে, বিয়ের দাবিতে মঙ্গলবার রাতে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী নাঈমের বাড়িতে যায় দুই কন্যা সন্তানের জননী। কিন্তু সেখানে কলেজ ছাত্র নাঈমকে বাড়িতে না পেয়ে তার বাড়িতেই অবস্থান নেয় ওই গৃহবধু । তাদের দুই জনের বাড়ি একই এলাকায়। তার দুইটি কন্যা সন্তান আছে। বড় মেয়েটির বয়স ৬ বছর ও ছোট মেয়ের বয়স ২ বছর ৬ মাস।
গতকাল বুধবার (২৭ জুলাই) সেখানে গিয়ে ওই গৃহবধূ ও নাঈমের অসুস্থ মা ও বোন ছাড়া কাউকে পাওয়া য়ায়নি। ওই গৃহবধুর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, পরিচয়ের সুত্র ধরে গত রমজান মাস থেকে নাঈমের সাথে আমার ফোনে কথা বলা শুরু হয়। কথা বলার এক পর্যায়ে আমাদের প্রেমের সম্পর্কে গড়ে ওঠে। এর মাঝে ইমুতে কথা বলার কোনো এক সময় আপত্তিকর কিছু ছবি নিয়ে আমাকে ব্লাকমেইল করে নাঈম।
সেই আপত্তিকর ছবির ভয় দেখিয়ে শারিরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেয় নাঈম। কোথায়, কিভাবে জানতে চাইলে নাঈম বলে তোমাকে দেওয়া ঘুমের ঔষধ রাতে তোমার স্বামীকে খাওয়ানোর আমার বাড়িতে চলে আসো। আমার আব্বা-আম্মুকে আমি ম্যানেজ করবো । তার কথা মতে তার দেওয়া ঘুমের ঔষধ আমার স্বামীকে খাইয়ে রাতে তার বাড়িতে আসি । সেই রাতে আমাদের শারিরিক সম্পর্ক হয়। সেখান থেকেই নাঈম আমাকে বিয়ে করবে এবং আমার মেয়েদের দায়িত্ব নেবে বলে আশ্বাস দেয় । পরে তার কথা মত মঙ্গলবার রাতে আমি নাঈমের বাড়িতে আসি। তাকে না পেয়ে তার বাড়িতেই অবস্থান করছি ।
সর্বশেষ এখন কি করতে চান জানতে চাইলে ওই গৃহবধু বলেন, নাঈম না আসা পর্যন্ত আমি এখানেই অনশন করবো। তার সাথে আগে যে ঘটনা ঘটেছে, তার একটি সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি ।
এই বিষয়ে কলেজ ছাত্র নাঈমের বোন সালমা খাতুন বলেন, ওই মেয়েটি যখন আসে তখন তার সাথে ৮/১০ জন ছেলে আসে । তারা আমাদের বাড়ির সামনের ইটের প্রাচীর ও গেট ভেঙ্গে ওই গৃহবধুকে আমাদের বাড়ির ভেতরে ঢুকিয়ে দিয়ে তারা চলে যায় । তাদের বাড়িতে থাকা বড় একটি ছাগল কে বা কারা নিয়ে গেছে। তার ধারনা,যারা তাদের বাড়িতে এসেছিল, তারা নিয়ে যেতে পারে। পলাতক ওই ছেলের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
গৃহবধুর স্বামী সাগর আলীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, এমন স্ত্রীকে আমি আর আমি ফিরিয়ে নেব না । আমাকে যে ঘুমের বড়ি খাওয়াতে পারে সে আমাকে বিষ খাওয়াতেও পারে।
এই ঘটনা জানার পর স্থানীয় ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক বলেন, বিষয়টি জানার পর চেয়ারম্যানকে এবং থানাকে অবগত করেছি । পুলিশ এসে স্থানীয়ভাবে সমাঝোতার কথা বলে চলে গেছে।
মনিগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি শোনার পর সেখানে সকালে আমি গিয়েছিলাম। ওই গৃহবধূকে ছেলের বাড়ির লোকদের জিম্মায় রেখে এসেছি এবং সেই ছেলেকে হাজির করতে বলে এসেছি । সে আসলে একটা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
এই ব্যাপারে আরও জানতে চাইলে, বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বিষয়টি জানার পরে ঘটনাস্থলে ফোর্স পাঠানো হয়েছিল। তাদের মধ্যে পারিবারিক ঝামেলা রয়েছে। তাই স্থানীয়ভাবে সমাধান করতে বলা হয়েছে। আর যদি লিখিত অভিযোগ করে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে ৫ টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গৃহবধু ওই কলেজ ছাত্র নাঈমের বাড়িতে অবস্থান করছিল বলেও জানান তিনি।
সম্পাদক: মো. তাজবীর হোসাইন
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড