এস. এম. মিজানুর রহমান মজনু, ভালুকা (ময়মনসিংহ)
ময়মনসিংহের ভালুকায় প্রদীপ জুয়েলার্স নামে একটি স্বর্ণের দোকানে বোমা বিস্ফোরণ ও গুলি করে ফিল্মি স্টাইলে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ডাকাতদলের এলোপাতাড়ি আঘাত ও গুলিতে দোকান মালিক অধীর কর্মকার (৫৫) নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী গুরুত্বর আহত হন।
বুধবার (২০) রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে ভালুকা পৌর সদরের শহীদ নাজিম উদ্দিন সড়কে এ ঘটনা ঘটে। ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দোকান মালিক, স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে মুখোশধারী ডাকাত দলের চারজন অতর্কিত ভাবে প্রদীপ জুয়েলার্স দোকানে প্রবেশ করে দোকান মালিক অধীর কর্মকার ও তার বড় ভাই কৃঞ্চ কর্মকারকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মালামাল লুট করার চেষ্টা চালায়। এক পর্যায়ে দোকান মালিক অধীর কর্মকার ও তার বড় ভাই কৃঞ্চ কর্মকার বাধা প্রদান করলে, ডাকাতদল তাদেরকে এলোপাতাড়ি মারধর ও দোকানের সুকেশ ভাংচুর শুরু করে মালামাল লুট করতে থাকে। এ সময় দোকানের সামনে অবস্থানকারী ডাকাতদলের সদস্যরা ৪টি বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়।
এ সময় বোমা বিস্ফোরণের বিকট শব্দে ও ধোঁয়ায় পুরো এলাকায় আতংকের সৃষ্টি হয়। আশপাশের লোকজন কিছু বুঝে উঠার আগেই ডাকাতদল মালামাল নিয়ে দোকান মালিক অধীর কর্মকারের হাঁটুতে এক রাউন্ড ও ফাঁকা এক রাউন্ড গুলি ছুড়ে শহীদ নাজিম উদ্দিন সড়কের বিপরীত পাশে অবস্থানকারী একটি প্রাইভেট কারে উঠে গফরগাঁওয়ের দিকে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন পুলিশের একটি দল নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম পিন্টু ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
প্রদীপ জুয়েলার্সের দোকান মালিক অধীর কর্মকারের বড় ভাই কৃঞ্চ কর্মকার জানান, ডাকাতদলের মুখোশধারী চারজন দোকানে প্রবেশ করেই তারা কিছু বুঝে উঠার আগেই তাদেরকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে, লুটপাট চালাতে থাকলে তারা প্রথমে বাধা দেওয়ার চেষ্টা চালায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ও তার ভাইকে স্টিলের মোড়া দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর ও দোকানে ভাঙচুর চালায়। এ সময় সে দৌড়ে দোকানের পিছনদিক দিয়ে পালিয়ে যায়। তার ভাই অধীর কর্মকারের মাথা ফেটে গুরুত্বর আহত হয়। পরে গুরুত্বর আহত অবস্থায় অধীর কর্মকারকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রদীপ জুয়েলার্সের পাশের হার্ডওয়ার দোকান মালিক শাহিন জানান, পরপর তিনটি ককটেল বিস্ফোরণের কারণে বিকট শব্দে আশপাশের এলাকা ধোঁয়ায় আতঙ্কিত হয়ে যায়। পরে আমরা গিয়ে দেখি দোকান মালিক রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন এবং দোকানের সব স্বর্ণ লুট করে নিয়ে গেছে।
আহত দোকান মালিক অধীর কর্মকার জানান, তিনি ও তার ভাইকে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে জিম্মি করে প্রায় ৫০ ভরি স্বর্ণ লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাতদল। এ সময় হাতাহাতির এক পর্যায়ে তার পায়ে গুলি ও মাথায় আঘাত করে ডাকাতদল।
এ বিষয়ে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, আমরা ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছি। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজা খাতুন ও পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড