শিব্বির আহমদ রানা, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম)
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার পুঁইছড়ি ইউনিয়নের পূর্ব পুঁইছড়ি মোজাফফর আহমদ চৌধুরী সড়কের প্রায় ২ কিলোমিটার জুড়ে ফরেস্ট ডিপার্টমেন্ট সড়কের অংশ থেকে মোজাফফর আহমদ সড়কের বশিরাবাড়ি স্টেশন পর্যন্ত বেহাল দশা। ১৫ বছর ধরে সড়কটি সংস্কারবিহীন অবস্থায় পড়ে থাকলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির টনক নড়েনি।
নির্বাচন আসলেই প্রতিশ্রুতি দেন, আর ভোট চলে গেলে প্রতিশ্রুতি ভুলে যান নেতারা। এক সময় ব্রিক সলিংয়ের সড়ক ছিল এটি। এখন একটা ব্রিকের চিহ্নও নাই বললে চলে।
প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে স্থানীয় বালি সিন্ডিকেটের একটা প্রভাবশালী মহল প্রতিদিন পুর্বাঞ্চলে পাহাড়ী মাটি কেটে ও ছড়ার বালি উত্তোলন করে বড় বড় ট্রাক-ডাম্পার নিয়ে চলাচল করায় সড়কটির অবস্থা হয়ে পড়ে আরও বেহাল। বর্ষা চলে আসলে কাদা-জ্বলে একাকার হয়ে যায় সড়কটি।
পুঁইছড়ির ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার ২টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার লোকজনের যাতায়তের একমাত্র বিকল্প সড়ক এটি। দুর্ভোগের ১৫ বছর গড়িয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত সংস্কারের মুখ দেখেনি সড়কটি। বিভিন্ন সময় ভুক্তভোগীরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে সড়ক সংস্কারের জন্য ধর্ণা দিলেও কোনো সুরাহা হয়নি।
এ সড়ক দিয়ে এলাকার সাধারণ লোকজনের যাতায়ত যেমন ব্যহত হচ্ছে তেমনি কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বিশেষ করে দু'গ্রামের বিশাল জনগোষ্টির গলার কাটা এ কাঁচামাটির সড়কটি। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন পুইঁছড়ি ইসলামিয়া কামিল মাদরাসা, মাস্টার নজির আহমদ কলেজ, পুইঁছড়ি ইজ্জতিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, পূর্ব পুঁইছড়ি হাফেজিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতায়ত করেন। গ্রীষ্মে ধুলাবালির রাজ্য আর বর্ষায় জলে-কাদায় নাকাল অবস্থায় দুর্বিসহ যাতায়ত করতে হয় এলাকার ২০ হাজারের অধিক জনবসতির লোকজনকে।
স্থানীয় শামিম উল্লাহ্ আদিল জানান, অতীব গুরুত্ব পূর্ণ গ্রামিণ এ সড়কটি দেড় যুগের কাছাকাছি সময় ধরে সংস্কার বিহীন পড়ে আছে। আমাদের যাতায়তে প্রচন্ড ভোগান্তি পোহাতে হয়। বিশেষ করে পুঁইছড়ি ইউনিয়নের দু'টি অংশের একটি পুর্ব পুঁইছড়ি। সরকারের গ্রাম হবে শহর প্রতিপাদ্যে দেশ এগিয়ে গেলেও অবহেলিত পুর্ব পুঁইছড়ি এলাকায় এ যাবৎকালে উন্নয়নের কোন ছোঁয়া লাগেনি।
তিনি আরও বলেন, এ সড়ক সংস্কারের জন্য এলাকার সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে এলাকাবাসী মানববন্ধন করেও কোনো প্রতিকার পায়নি। বহুবছর ধরে আমরা উন্নয়ন ও সুবিধাবঞ্চিত হয়ে পড়ে আছি। আমরা জনদুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত সড়কটির সংস্কার চাই। বালু খেকো সিন্ডিকেটের বড় বড় ট্রাক-ডাম্পার চলাচল বন্ধ চাই।
আমির হোছেন নামে একজন বলেন, পূর্ব পুঁইছড়ি বশিরা বাড়ি আমার নানার বাড়ি। শুধু এই রাস্তা দিয়ে যাতায়ত করতে হয় বিধায় নানার বাড়িতে যাওয়া হয় না তেমন। এ সড়কে স্বাভাবিক ভাবে চলাচল করা কষ্টসাধ্য। আশা করি এবার এ সড়ক সংস্কারের পথ দেখবে। দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘবে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
পূর্ব পুঁইছড়ির ৫ নম্বর ওয়ার্ডের স্থানীয় ব্যবসায়ী, মোহাম্মদ ইউনুস বলেন পূর্ব পুঁইছড়ি বশিরা বাড়ি স্টেশন এলাকায় দোকান করছি আজ প্রায় ১৬ বছর। এখানে দোকানের মালামাল নিয়ে আসতে হিমশিম খেতে হয়। ছেলে-মেয়ে স্কুল-মাদরাসায় যাতায়তের সময় এ রাস্তায় চলাচল করতে খুবই কষ্ট হয়। ব্যবসায়ী ইউনুসের দাবি- পূর্ব পুইছড়ি বশিরা বাড়ি স্টেশন পর্যন্ত সড়কের যেন দ্রুত সংস্কার করা হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য এম খাইনে আলম চৌধুরী দৈনিক অধিকারকে বলেন, সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। প্রায়ই হাঁটাচলার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। আমি বার বার সড়ক সংস্কারের জন্য পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে বললেও কোন কাজ হয়নি।
তিনি আরও বলেন, সড়কটি সংস্কারের জন্য বাঁশখালীর সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এমপি'র নিকট বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করেও কোন প্রতিকার পাইনি। এ মেয়াদে আর কয়েকদিন আছি। আজ বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) থেকে রাস্তার পার্শ্ব ভরাটের কাজ শুরু করে দিবো।
ওডি/কেএইচআর
সম্পাদক: মো. তাজবীর হোসাইন
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড