এম এ মোতালিব ভুইয়া, দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ)
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় ফের দ্বিতীয় দফায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে উপজেলার সব কয়টি নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যায় তলিয়ে গেছে উপজেলার সাথে ইউনিয়নের যোগাযোগের সবকটি প্রধান সড়ক। পানি বন্দি হয়েছে প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রামে মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের মধ্যে দোয়ারাবাজার সদর, সুরমা, মান্নারগাঁও, লক্ষীপুর ও নরসিংপুর ইউনিয়নের নিম্ন এলাকার অধিকাংশ মানুষ পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। বন্যা ও অতি বৃষ্টির কারণে ঘরবন্দী হয়ে বেকার সময় কাটাচ্ছেন শ্রমজীবী মানুষ। তৃণভূমি ও ফসলি জমি তলিয়ে যাওয়ায় প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকায় গো খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন গ্রামের কৃষকেরা।
এদিকে বন্যার কারণে উপজেলার অধিকাংশ এলাকার গ্রামীণ রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। তলিয়ে গেছে ছাতক-দোয়ারাবাজার সড়কের কয়েকটি অংশ ও উপজেলার উপজেলা সদরের সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে সুরমা, বোগলাবাজার, লক্ষীপুর, বাংলাবাজার ও নরসিংপুর ইউনিয়নের। দোয়ারাবাজার-লক্ষীপুর সড়কের শরীফপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের অংশ পানিতে তলিয়ে গেছে, দোয়ারাবাজার-বাংলাবাজার বৃটিশ সড়কের উপর দিয়েও পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
ভুজনা গ্রামের বাসিন্দা হাবীবুল্লাহ জানান, ভুজনা, কালিকাপুর ও কদমতলি গ্রামের প্রায় সবকটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে মানবেতর দিন পার করছেন। বাড়ির চারপাশে পানি থাকায় বাইরে বের হওয়া যাচ্ছে না।
সুরমা ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুর রউফ বলেন, আমার ওয়ার্ডের একদিকে সুরমা আরেকদিকে খাসিয়ামারা নদী ও কানলার হাওরের অবস্থান। সামান্য বৃষ্টিপাত হলে বা নদীর পানি বাড়লেই প্রথম ধাক্কাতেই আমার এলাকার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখনোওপ্রায় ৫০টি পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় আছে। কিন্তু আমরা যেই সরকারি ত্রাণ সহায়তা পাই তা অপ্রতুল। অধিক বন্যা কবলিত এলাকা হিসেবে নূরপুর, সোনাপুর ও নন্দীগ্রামকে অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি জানাই।
দোয়ারাবাজার সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ বলেন, আমার ইউনিয়নের মাইজখলা, সুন্দরপই, বড়বন্দ, তেগাঙ্গা, মাছিমপুর, মাজেরগাঁওসহ বেশির ভাগ মানুষ প্রথম দফার বন্যার শুরু থেকেই পানিবন্দী। এতোদিন পানি কিছুটা কমতি ছিল। কিন্তু এখন আবার কয়েক দিন ধরে পানি বাড়ছে। সরকারি ত্রাণ সহায়তা বাড়ানো দরকার। মানুষ অনুপাতে পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা পাওয়া যাচ্ছে না।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পঞ্চানন কুমার সানা জানান, অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি উঠেছে। পানির কারণে কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ২০ কোটি টাকার মূল্যের সরকারি ভূমি উদ্ধার
দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা প্রিয়াংকা জানান, এখনও বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে, নদ নদীর পানি বাড়ছে। উপজেলায় মোট ১৪ টি আশ্রয়ণ কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। আমরা বেশ কিছু পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছি।
ওডি/এমকেএইচ
সম্পাদক: মো: তাজবীর হোসাইন
সহযোগী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118241, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড