হারুন আনসারী, ফরিদপুর
ফরিদপুরের সালথায় ভাওয়াল ইউনিয়নের ভরদুপুরে একটি ভুতুড়ে জাম গাছ থেকে আকস্মিকভাবে ছিটকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে এক স্কুল ছাত্রের। যুগের পর যুগ ধরে ওই জাম গাছটি নিয়ে গ্রামে কুসংস্কার জড়িয়ে আছে। শিশুটি ওই কুসংস্কারকে থোড়াই কেয়ার করে গাছে উঠেছিল। বুধবার (৮ জুন) দুপুরে উত্তর পুরুরা গ্রামে এ মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে।
নিহত শিশুটির নাম আবির শেখ (১০)। সে মিরাকান্দা গ্রামের কৃষক বিল্লাল শেখের দুই ছেলের মধ্যে ছোট। আবির পুরুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উত্তর পুরুরা গ্রামের বাসিন্দা ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ত্রিশোর্ধ্ব এক গৃহবধু বলেন, বুধবার দুপুরে আবির ওই জাম গাছে উঠে জাম পাড়তে যায়। তাকে গাছে চড়তে বারণ করা হয়েছিল। কিন্তু সে তাতে কান দেয়নি। এরপর হঠাৎ সে গাছ থেকে ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।
উত্তর পুরুরা গ্রামের বাসিন্দা ও আবীরের ভগ্নীপতি শাহিন জানান, গাছটি নিয়ে প্রাচীনকাল থেকে কুসংস্কার জড়িয়ে আছে। গ্রামের মুরুব্বীরা বলেন, ওই গাছে কেউ চড়লে তাকে প্রথমে নিচে সাতটি জাম ফেলতে হয়। নিচের একজনকে ওই জাম গাছের গোড়ায় ডলতে হয়। নইলে যে গাছে চড়ে তার ক্ষতি হয়।
এমন কুসংস্কারকে উপেক্ষা করেই আবির ওই জাম গাছে চড়েছিল বলে শাহিন জানান।
ভাওয়াল ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মামুন সরদার বলেন, গ্রামটি হিন্দু পাড়া। ওই গাছটি অনেক পুরনো আর বড়। এলাকার হিন্দুরা ওই গাছতলায় পূজাও দেয়। ৮৮'র বন্যার সময় সেখানে ছিল সত্য মেম্বার। তখন আমি ছোট। তবে সেই সময় মানুষ ওই গাছতলায় অনেক কিছু দেখেছে বলে আমরা শুনেছি।
অবশ্য এর আগে এমন নিয়ম না মানায় অনেকে গাছ থেকে পড়ে গেলেও কখনো মারা যায়নি। আবিরই প্রথম এভাবে মারা গেল বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এ ব্যাপারে ভাওয়াল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ফারুকুজ্জামান বলেন, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। তিনি নিজেও ছোটবেলায় গাছে চড়ে অনেকবার পড়ে গিয়েছেন। তবে শিশুটির মৃত্যুর খবরটি দুঃখজনক। বিষয়টি জানতে পেরে তারা ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তরের ব্যবস্থা করেন।
ওডি/ইমা
সম্পাদক: মো: তাজবীর হোসাইন
সহযোগী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118241, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড