শাকিল মুরাদ, শেরপুর
'আমার বড় নাতি রনি। তার টাকায় চলতো তাদের সংসার। ছোট নাতীর পড়াশোনাসহ সকল খরচ দিত রনি। সেই রনি এখন আর নেই, আগুনে পুড়ে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে মারা গেছে। নাতিটা ছুটি নিয়ে বাড়ি আসতে চাইলো, পরে আমরা না করছি। আজ যদি ছুটি নিয়ে বাড়িতে চলে আসতো, তাহলে আগুনে পুড়ে মরতে হতো না'। এভাবেই কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন রনির সত্তরোর্ধ দাদা ইউনুস আলী।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, দেড় বছর আগে ফায়ার সার্ভিসে যোগ দেন রনি। সর্বশেষ বদলি হয় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ফায়ার স্টেশনে। সেখানে তিনি আট মাসে আগে বিয়ে হওয়া বউকে নিয়ে সেখানে ভাড়া থাকতো।
শনিবার (৪ জুন) রাতে অগ্নিকাণ্ডের খবর শুনে দায়িত্ব পালনে বাসা থেকে গেঞ্জি পরেই বেরিয়ে যায় রনি। এরপর থেকে রোববার সকাল ১০টা পর্যন্ত তার মোবাইল ফোন বন্ধ পায়। পরে রনির বউ কয়েকবার ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ও চট্টগ্রামে মেডিক্যালে রনিকে খোঁজতে যায়। কিন্তু বার বার গেলেও রনির কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। এক পর্যায়ে বিকৃত লাশের মাঝে গেঞ্জি দেখে তার লাশ শনাক্ত করে স্ত্রী রূপা খাতুন। এ ঘটনার পর রবিবার (৫ জুন) বিকালে তার বাবা কারাগারে থাকায় ছোট ভাই, চাচা আবুল কাশেম ও তার মা চট্টগ্রামে রনির মরদেহ আনতে যায়।
রনির জেঠি সাদিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, সংসারডা রনি চালায়, এখন আর চালাতে পারবে না। সংসারডা এখন কিভাবে চলবে আমি জানি না। সরকার যদি এই পরিবারের দিকে না তাকায় তাহলে খুব মুশকিল হয়ে যাবে।
রনির চাচা চরশেরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য মো. জামান মিয়া বলেন, রনির টাকা দিয়েই সংসারটা চলত। তার বাবা একটি মামলায় কারাগারে রয়েছেন প্রায় তিন মাস ধরে। ছেলের মৃত্যুতে সাতদিনের জন্য জামিনে বের হয়েছে। তবে, রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ছেলের মৃত্যুর খবর বাবাকে দেয়নি পরিবার ও স্বজনরা দাবি তার।
ওডি/ওএইচ
সম্পাদক: মো: তাজবীর হোসাইন
সহযোগী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118241, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড