মো. রাফিকুর রহমান লালু, রাজশাহী
মহামারি করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত হয়েছে রাজশাহী। চলতি মাসে করোনা আক্রান্ত কোনো রোগী পাওয়া যায়নি রাজশাহীতে। এর ফলে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় চালুকৃত রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের বিশেষায়িত ওয়ার্ড ‘করোনা ইউনিট’ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৩ মে) এই ওয়ার্ডটি বন্ধ ঘোষণা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ২০২১ সালের ১৪ জুলাই একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছিলো ২৫ জনের। একই সালের ২৮ জুনও মৃত্যু ছিলো ২৫ জন। মারা যাওয়া ২৫ জনের মধ্যে সাতজন করোনা পজিটিভ ছিলেন। করোনার উপসর্গ নিয়ে ১৪ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। আর চারজন শ্বাসকষ্ট নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছিলেন। তারা করোনা নেগেটিভ ছিলেন। মারা যাওয়া ২৫ জনের মধ্যে রাজশাহীর ছিলো ১২ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিন, নাটোরের তিন, নওগাঁর দুই, পাবনার তিন, কুষ্টিয়ার একজন এবং যশোরের একজন রোগী ছিলেন। ওই বছরের জুন মাসে করোনা ইউনিটে মোট ৩৫৪ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন।
তারা জানায়, রাজশাহী মেডিক্যালে ২০২১ সালের মাঝামাঝিতে করোনায় সর্বোচ্চ মৃত্যু ও সংক্রমণ ছিলো। হাসপাতালের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিলো। হাসপাতালে মোট করোনা ডেডিকেটেড শয্যার সংখ্যা দাঁড়িয়েছিলো ৪৫৪টিরও বেশি। তবে হাসপাতালে শয্যা সংখ্যার দ্বিগুণের বেশি রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিলো। করোনা ইউনিটের প্রতিটি ওয়ার্ডের মেঝে ও বারান্দা কানায় কানায় পূর্ণ ছিলো। প্রতিদিনই ছিলো করোনায় মৃত রোগীর স্বজনদের আহাজারি।
জানা গেছে, এ বছরের শুরু থেকেই করোনায় মৃত্যু ও সংক্রমণ নিম্নমুখী হতে থাকে। মে মাসে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিলো মাত্র ৩ থেকে ৬ জন। সংক্রমণের পরিমাণ মাসের প্রথম থেকেই শূন্য। শুক্রবার (১৩ মে) সংক্রমণ ও মৃত্যু দুটিই ‘শূন্য’।
২০২০ সালের মার্চের দিকে এই হাসপাতালে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশেষায়িত ‘করোনা ইউনিট’ তৈরি করা হয়েছিলো। দীর্ঘ দু’বছরে সকলের তিক্ত অভিজ্ঞতার অবসানে করোনামুক্ত হয়েছে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, করোনাকালের লোমহর্ষক সেই মৃত্যুর দৃশ্য এখন আর নেই। সে সময় করোনা আক্রান্ত রোগীর কষ্ট এবং স্বজন হারানোর আহাজারি ছিলো নিত্যদিনের বিষয়। মাত্র ২০ শয্যার আইসিইউ আর শতাধিক রোগীর অপেক্ষার প্রহর। মহামারি পরিস্থিতির সেই টালমাটাল জনজীবন এখন স্বাভাবিক।
তিনি আরও জানান, শুক্রবার (১৩ মে) মেডিক্যালের করোনা ইউনিটটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে মাত্র দু’তিনজন করোনার লক্ষণ নিয়ে ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। ১২ মে তারা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আপাতত এখন কোনো রোগী নেই। তবে যদি দু’জন রোগী করোনার লক্ষণ নিয়ে আসে তাহলে তাদেরকে রাজশাহী সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে (আইডিএইচ) পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।
ওডি/ওএইচ
সম্পাদক: মো: তাজবীর হোসাইন
সহযোগী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118241, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড