তুষার আহমেদ, নারায়ণগঞ্জ
২০১৬ সালের ৯ই আগস্ট একনেকে পাশ হয় ডিএনডি’র মেগা প্রকল্প। যা বাস্তবায়নে কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। তবে নানা জটিলতার কারণে এখনো সমাপ্ত হয়নি ডিএনডি প্রজেক্টের খাল উদ্ধার কাজ।
ডিএনডি সেচ উপ বিভাগের সহকারী মো. মশিউর রহমান দৈনিক অধিকারকে জানিয়েছেন, ‘ডিএনডি প্রজেক্টের আওতাভুক্ত মোট খালের দৈর্ঘ্য ৯৩ দশমিক ৯৮ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৮৯ কিলোমিটার খাল উদ্ধার এবং সীমানা নির্ধারণ করা গেছে। এখনো ৪.৯৮ কিলোমিটার খাল উদ্ধার করা যায়নি।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ডিএনডি প্রজেক্টের সূত্রগুলো জানিয়েছে, ‘উদ্ধার না হওয়া এই ৪.৯৮ কিলোমিটার খালগুলোর কিছুটা ঢাকার শনিরআখড়া এবং বাকিটা রয়েছে ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জে। এর মধ্যে ঢাকার শনির আখড়ায় উদ্ধার না হওয়া খালটি তিতাস গ্যাসের জমিতে পড়েছে। তা নিয়ে রয়েছে জটিলতা।
এছাড়াও ফতুল্লার তক্কার মাঠ থেকে পাগলা সড়কের পাশে প্রবাহিত খালটিও ডিএনডি প্রজেক্টের ম্যাপে উঠে আসেনি। একই ভাবে তক্কার মাঠ থেকে উকিলবাড়ীর দিকে যেই খাল প্রবাহিত ছিলো, তাও উঠে আসেনি প্রজেক্ট ম্যাপে। ইসদাইর থেকে লিংক রোড ভেদ করে বয়ে যাওয়া খালটিও তালিকায় আসেনি।
যদিও গতবছর সরেজমিন প্রতিবেদন প্রকাশের পর একাধিক মিটিং ও আলোচনা সাপেক্ষে প্রজেক্টের বাইরে গিয়ে ওই খাল খননে কাজ করেছে সেনাবাহিনী।
ডিএনডি প্রজেক্টের বিশেষ সূত্র জানিয়েছে, ৪.৯৮ কিলোমিটারের এসব খালের বিভিন্ন অংশ দখল করে গড়ে উঠেছে ১০টি স্কুল, ১৮টি মসজিদ, একটি মন্দির, ৬টি মাদরাসা, ৩টি পেট্রোল পাম্প, বসত বাড়ীর স্থাপনা, একটি পুলিশ ফাঁড়ী এবং আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়। খালে গড়ে উঠা এসব স্থাপনার বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএনডি সেচ উপ বিভাগের সহকারী মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির এগুলো ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে সরকারি স্কুল যা রয়েছে, তা প্রয়োজন অনুযায়ী উচ্ছেদ করা হবে। সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ছাড় দেওয়ার বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে। খালের পানি প্রবাহে বড় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ হবে। তেমন সমস্যা না হলে উচ্ছেদ করার প্রয়োজন নেই।’
উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘যেমন একটি মসজিদের ৩ ফুট স্থাপনা খালের উপর পড়েছে, ওই খালের প্রশস্ত ধরুন ১৪০ ফিট, ১৪০ থাকা সত্বেও ৩ ফুট স্থাপনা ভাঙ্গার কোনো প্রয়োজন নেই। মন্ত্রণালয় থেকেই একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। ওই কমিটিই বিবেচনা সাপেক্ষে উচ্ছেদ কার্যক্রম চালাবে।’ সচেতন মহল বলছেন, উদ্ধার না হওয়া খালগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে উদ্ধার করা এবং যেসকল খাল উদ্ধার হয়েছে, সেগুলো যাতে পুনরায় ভরাট না হয়, তা নিশ্চিত করা গেলেই মুক্তি মিলবে জলাবদ্ধতা থেকে। তাছাড়া জলাবদ্ধতা দূরকরণে এলাকার অভ্যন্তরীণ ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নেরও বিকল্প নেই।
জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট একনেকে পাশ হয় ডিএনডির মেগা প্রকল্প। নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি প্রকল্পের কাজ। প্রকল্পের মেয়াদ যেমন বেড়েছে, তেমনই বেড়েছে প্রকল্প ব্যয়ও। ৫১৮ কোটি ১৯ লক্ষ টাকার প্রকল্প ২০২০ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২শ’ ৯৯ কোটি টাকা।
ওডি/ওএইচ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড