মিজানুর রহমান, টেকনাফ
কক্সবাজার সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সাইক্লোন শেল্টারটি জেলেপল্লীর প্রায় চার হাজারের অধিক মানুষের প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ে একমাত্র আশ্রয়স্থল। কিন্তু সাইক্লোন শেল্টার ভবনটি নাফনদীর বেড়িবাঁধের বাইরে হওয়ায় প্রতিনিয়ত জোয়ারের ধাক্কায় মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে। ভবনটি এখন নাফনদের গর্ভে বিলীনের পথে।
বর্তমানে ভবনটির নিচতলার বিভিন্ন অংশ নদের পানিতে ধসে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় প্রাকৃতিক দুর্যোগে সাধারণ মানুষের শেষ আশ্রয়স্থলটিও অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। জালিয়াপাড়া এলাকার প্রায় আড়াইশ শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা নিয়ে যেমন অনিশ্চয়তায় রয়েছে।
এই ভবনটি নাফনদে বিলীন হয়ে গেলে শিশুদের পড়ালেখা যেমন বন্ধ হওয়ার আশংকা রয়েছে, তেমনি পাশাপাশি দুর্যোগের সময়ে আশ্রয়ের স্থানও পাবে না।
স্থানীয়রা জানায়, আমাদের ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখার স্থান ও আমাদের দুর্যোগের আশ্রয়স্থান হচ্ছে এই ভবনটি। তাই সরকারের কাছে আমাদের দাবি এই সাইক্লোন শেল্টার ও স্কুলভবনটি যেন রক্ষা করা হয়।
নাফনদের জোয়ারের পানি বিদ্যালয় ভবনে তীব্র বেগে আঘাত হানছে। জোয়ারের ধাক্কায় তিনতলবিশিষ্ট সাইক্লোন শেল্টার ভবনটির নিচতলার নদের অংশে ভাঙন শুরু হয়েছে। দিন দিন সে ভাঙন আরও বড় হচ্ছে। পাশাপাশি বিদ্যালয়ের দ্বিতল ও একতলাবিশিষ্ট আরও দুটি ভবনও নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার উপক্রম। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আগামী বর্ষা মৌসুমের আগে দ্রুত কোনো পদক্ষেপ না নিলে অচিরেই ভবনটি নদের গর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
জালিয়াপাড়া স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাস্টার আব্দুর রহিম জানান, বিদ্যালয়টিতে প্রায় আড়াইশর মতো ছাত্র-ছাত্রী লেখাপড়া করে। এখন ভবনটি অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাব্যবস্থা রক্ষা করতে বিদ্যালয় ভবনটি রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তিনি সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা ও সাবরাং ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুস সালাম জানান, জালিয়াপাড়ায় অবস্থিত সাইক্লোন শেল্টারটি নাফনদের জোয়ারের আঘাতে এখন অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ভবনগুলো নাফনদের বেড়িবাঁধের বাইরের অংশে পড়ে যায়। যে কারণে নাফনদের জোয়ারের পানি নিয়মিত ভবনে আঘাত করছে। এখন ভবনটি রক্ষা করতে হলে নাফনদের অংশে বিদ্যালয় অংশ পর্যন্ত জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ নির্মাণ করতে হবে। বর্ষার বাকি আর অল্প কয়েকদিন, এরই মধ্যে যদি বাঁধ নির্মাণ করে ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে হান্ড্রেড পারসেন্ট স্কুল ও সাইক্লোন শেল্টারটি বিলীন হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, সাইক্লোন শেল্টারটি শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে বিদ্যালয় ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু বিদ্যালয় খোলার পর এমন পরিস্থিতিতে এ ভবনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করাও অনেক ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে। দুর্যোগের সময়ে এই ভবনটিতে হাজার হাজার মানুষ আশ্রয় নেয়। কিন্তু এখন সেই আশ্রয়স্থানটি অনিরাপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইতোমধ্যে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি এবং বর্ষার আগে যেন ভবনটি রক্ষা করতে সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী অফিসার কায়সার খসরু মুঠোফোনে জানান, বিদ্যালয় ও সাইক্লোন শেল্টারটির বিষয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। অলরেডি চিঠি চলে গেছে। আশা করি সমাধান হবে।
ওডি/ওএইচ
সম্পাদক: মো: তাজবীর হোসাইন
সহযোগী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118241, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড