হারুন আনসারী, ফরিদপুর
চলচ্চিত্রের গল্প মনে হলেও বাস্তবে ফরিদপুরের সালথায় দুই পুলিশ কর্মকর্তার কাছ থেকে এক আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় নারীদের হামলার শিকার হন ওই দুই পুলিশ। রবিবার (১ মে) দুপুরে উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের খারদিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আসামি তারা মিয়া যদুনন্দি ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের সমর্থক।
ছিনিয়ে নেওয়া আসামি তারা মিয়া খারদিয়ার ছয়আনি পাড়ার বাসিন্দা মৃত মো. মোফাজ্জেল মিয়ার ছেলে। তিনিও পুলিশের ওপর হামলা ও মামলার আসামি। এছাড়া ২০১৯ সালের একটি এবং ২০২০ সালের আরও দুটি মামলা রয়েছে তার নামে।
জানা গেছে, গ্রামের ছয়আনি পাড়া থেকে পুলিশের ওপর হামলা-মামলার আসামি তারা মিয়াকে (৫৩) গ্রেফতার করেন সালথা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও এলাকার বিট কর্মকর্তা মো. নাজমুল এবং সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. লিয়াকত হোসেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গ্রামের ছয়আনি পাড়া থেকে পুলিশের উপর হামলা-মামলার আসামি তারা মিয়াকে (৫৩) গ্রেফতার করেন সালথা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এলাকার বিট কর্মকর্তা মো. নাজমুল ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. লিয়াকত হোসেন। গ্রেফতার অভিযানের সময় তাদেরকে ঘিরে ফেলে সেখানকার একদল মহিলা। ওই ১৫ থেকে ২০ জন নারী চড়াও হয়ে ওই দুই পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি করে তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয় ওই আসামিকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খারদিয়া গ্রামের একাধিক বাসিন্দা জানান, যদুনন্দী ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর মিয়ার সাথে বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধের জেরে ওই এলাকায় বেশ কয়েকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গত ২১ এপ্রিলের খারদিয়া এলাকায় এই দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষ থামাতে আহত হয় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য। এ ঘটনায় পরে পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে মামলা হয়। মামলার আসামি হিসেবে ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর মিয়া গ্রেফতার হন। গত বৃহস্পতিবার উভয়েই আদালত থেকে জামিন পেয়ে এলাকায় ফিরে আসেন।
এ ঘটনা জানতে যদুনন্দী ইউপি চেয়ারম্যান মো. রফিক মোল্যার বক্তব্য নেওয়ার জন্য তাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে সালথা থানার উপপরিদর্শক (এসআই)ও ২ নম্বর যদুনন্দী বিট অফিসার নাজমুল হুসাইন বলেন, খবর পেয়ে আসামি তারা মিয়াকে ধরতে যাই। হাতেনাতে ধরতে পারি নাই। কাছাকাছি গিয়ে দেখি আসামি তারা মিয়া বসে আছে। হঠাৎ করে ১০ থেকে ১২ জন মহিলা এসে সামনে বাধা দেয়। এ সুযোগে আসামি পিছন থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ নিয়ে অনেকেই বিভিন্ন গুজব ছড়িয়েছে।
এ ব্যাপারে সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শেখ সাদিক বলেন, সংশ্লিষ্ট এসআই আসামি ধরেছিল। এ সময় গ্রামের মহিলারা হৈচৈ শুরু করে। তখন আসামি পালিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: ইদের জামা কিনে দিতে নিয়ে দুই মেয়েকে হত্যা
এ বিষয়ে ফরিদপুরের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) সুমিনুর রহমান বলেন, পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুল ও লিয়াকত আসামি তারা মিয়াকে ধরে ফেলেছিল। কিন্তু এ সময় ওই এলাকার প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন নারী এগিয়ে এসে পুলিশের ওপর ঝাপিয়ে পড়েন। তখন আসামি তারা মিয়া সুযোগ বুঝে কৌশলে পালিয়ে যায়।
ওডি/এমকেএইচ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড