খলিল উদ্দিন ফরিদ, ভোলা
ভোলার লালমোহনের বিভিন্ন স্থানে অস্বাস্থ্যকর নোংরা ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে তৈরি হচ্ছে লাচ্ছা সেমাই। আসন্ন ইদুল ফিতরকে সামনে রেখে উপজেলাজুড়ে লাচ্ছা সেমাই তৈরির ধুম পড়ে গেছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে লাচ্ছা সেমাই তৈরির শতাধিক কারখানা। তবে এসব কারখানায় একেবারে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে এবং নিম্নমানের সব উপকরণ সামগ্রী দিয়ে লাচ্ছা সেমাই করা হচ্ছে। মূলত অধিক মুনাফার লোভে সেমাই তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে মানবদেহের জন্য মারাত্মক সব ক্ষতিকর উপকরণ।
শনিবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলার ফরাজগঞ্জ ৪নং ওয়ার্ড কিশোরগঞ্জ গ্রামের মো. ফারুকের ফারুক লাচ্ছা ও মো. সিটাজের আল মিজান লাচ্ছা এবং ফায়ার সার্ভিস ভবনের পেছনের হেলাল উদ্দিন ভূঁইয়ার মিনা ফুড প্রোডাক্টসের কারখানা ঘুরে দেখেন এই প্রতিবেদক।
সরেজমিনে দেখা যায়, লাচ্ছা সেমাই তৈরিতে ব্যস্ত শ্রমিকরা। যদিও তাদের হাতে নেই কোনো গ্লোবস, মুখে নেই মাস্ক। জমে থাকা তেলের গাদে ময়লা হয়ে আছে খামির রাখার ট্রে। প্রচণ্ড গরম আর লাচ্ছার চুলোর তাপে পোশাক খুলে কাজ করছে শ্রমিকরা। এতে লাচ্ছা তৈরির খামির মধ্যে দেহের ঘাম ঝরে পড়ছে।
অন্য দিকে নিম্ন মানের ময়দার সঙ্গে পোড়া তেল ও নিম্ন মানের ডালডা দিয়ে ভাজা হচ্ছে লাচ্ছি সেমাই। তেল ও পানি মিশে নোংরা হয়ে রয়েছে মেঝে; যদিও পরিষ্কারের কোনো বালাই নেই।
আরও পড়ুন : ‘স্রোতের বিপরীতে চলা তরুণদের উদ্যোগটি সত্যিই প্রশংসনীয়’
খাদ্য তৈরির ক্ষেত্রে বিএসটিআইয়ের কোনো অনুমোদন না থাকলেও প্রতি বছর ইদকে সামনে রেখে অধিক মুনাফার আশায় লাচ্ছি সেমাইয়ের কারখানা গড়ে তুলেন এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী।
কারখানা মালিকদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, কাজ করতে গেলে একটু-আধটু নোংরা হবেই। তবে লাচ্ছির উৎপাদন সামগ্রী ভাল মানের। অন্যান্য বছর ভোক্তা অধিকার ও উপজেলা প্রশাসন থেকে অভিযান দেওয়া হয়েছিল। এ বছর এখন পর্যন্ত কেউ আসেনি।
লালমোহন পৌরসভার স্যানিটরি অফিসার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, গত সপ্তাহে দিনের বেলায় অভিযানে গিয়েছিলাম, কাউকে পাওয়া যায়নি। আর রাতে জেলা থেকে ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তাগণ এসে অভিযান পরিচালনা করা দুষ্কর।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের ভোলা জেলা সহকারী পরিচালক মাহবুবুল হাসান বলেন, আমরা অভিযানে গিয়েছিলাম। পূর্বে যেসব স্থানে কারখানা ছিল, সেগুলোর অনেকটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। আর নতুন করে যেসব কারখানা গড়ে উঠেছে, ওগুলোর তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে যেগুলোকে পাওয়া গিয়েছে, সেগুলোকে সাবধান করে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন : ইদ উপহার পেয়ে হাসি ফুটল অসহায়দের মুখে
লালমোহন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পল্লব কুমার হাজরা বলেন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য সামগ্রী তৈরির বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ওডি/কেএইচআর
সম্পাদক: মো: তাজবীর হোসাইন
সহযোগী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118241, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড