নাজিম উদ্দীন, স্টাফ রিপোর্টার (চট্টগ্রাম)
চট্টগ্রাম নগরীর পানি নিষ্কাশনের কাজে ব্যবহৃত অধিকাংশ নালা ও খাল এরই মধ্যে ভরাট হয়ে গেছে। আগামী বর্ষার আগে এসব জলাশয়পূর্ণ খনন ও নালা খালগুলো থেকে ময়লা আবর্জনা না সরালে প্রতিবছরের মতো এবারও বড় ধরনের জলাবদ্ধতার আশংকা করছে চট্টগ্রামের নগরবাসী। কোনো কোনো নালা খালগুলো দেখলে মনে হয় যেন খাল নালা নয়, ফসলের মাঠ।
সরেজমিনে দেখা যায়, কিছু কিছু খালের পানি অতিরিক্ত ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে কুচকুচে কালো হয়ে গেছে। প্রতিদিনের ফেলা ময়লা আবর্জনায় নগরীর অধিকাংশ নালা খালগুলো আবর্জনায় পূর্ণ হয়ে ভরাট হয়ে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে আছে।
এদিকে দখলের কারণে কোনো কোনো খালের প্রশস্ততা আশংকাজনক হারে কমেছে। গত বছর বর্ষায় নগরীর মুরাদপুরে নালায় পড়ে এক ব্যক্তি নিখোঁজ হওয়ার পর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সিডিএকে নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা করা হয়। চলতি বছর মুরাদপুরের সে নালার খনন ও প্রশস্ত বৃদ্ধিকরণ ২নং গেট থেকে বদ্দারহাট পর্যন্ত কাজ শুরু করা হলেও এখনো তা সম্পন্ন হয়নি। অন্যদিকে নগরীর অধিকাংশ নালা নর্দমাগুলোর পানি নিষ্কাশন প্রায় বন্ধ হয়ে অলস অবস্থায় পড়ে রয়েছে; এসব খাল নালাতে প্রতিদিনই ফেলা হয় গৃহস্থালির ময়লা আবর্জনা এবং অপচনশীল নানা প্লাস্টিক বর্জ্য।
নগরীর বিভিন্ন স্পটে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত ২৬৩ জায়গায় খোলা ডাস্টবিন রয়েছে। তার বাইরেও আরও শতাধিক স্পটে প্লাস্টিক ও কন্টেইনারের অস্থায়ী ডাস্টবিন থাকলে ও নাগরিকদের অসচেতনতার কারণে নির্দিষ্ট জায়গায় আবর্জনা না ফেলে নালা নর্দমায় ফেলা হয়। ভরাট উপকরণের বেশিরভাগই গৃহস্থী বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মালামাল প্লাস্টিক পলিথিন। তাছাড়া নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বেহাল দশা লক্ষ্যণীয়। দেশের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে ক্ষোভের শেষ নেই। প্রায় ৭০ লক্ষ মানুষের বসবাসের নগরী চট্টগ্রামে এখনো কোনো আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে উঠেনি।
নগরীর ৪নং চান্দগাঁও ওয়ার্ডের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থীরা নির্বাচনের সময় নগরবাসীকে সবচেয়ে বেশি আশ্বস্ত করেন জলাবদ্ধতা নিরসনে। কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে কোনো মেয়র এখনো পর্যন্ত জনদুর্ভোগ লাঘব করতে পারেনি।
আরও পড়ুন : সবজি নিয়ে আর বাজারে যাওয়া হলো না ওদের
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কর্মীরা জলাবদ্ধতা সমস্যা দূর করার জন্য সব সময় কাজ করে যাচ্ছেন। আগামী বর্ষায় জলাবদ্ধতা নিরসনে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় নালা নর্দমা এবং খালগুলো খনন কাজ অব্যাহত রয়েছে। যে সব জায়গায় মেগাপ্রকল্পের কাজের জন্য নালা খালের বিভিন্ন অংশে বাঁধ দিয়ে পানি নিষ্কাশন বন্ধ করা হয়েছে, সেগুলোর বাঁধ আগামী বর্ষার আগে খুলে দেওয়ার জন্য প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নালা নর্দমায় আবর্জনা না ফেলে সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত স্থানে ময়লা ফেলার জন্য অনুরোধ জানিয়ে সিটি মেয়র বলেন, নগরবাসীকে তাদের নাগরিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। শুধু সিটি করপোরেশনের দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না, সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
সরেজমিন দেখা যায়, নগরীর গুরুত্বপূর্ণ দুটো খাল চাক্তাই ও মহেশখাল ময়লা আবর্জনায় ভরাট হয়ে গেছে। তাছাড়া নগরীর মুরাদপুর, প্রবর্তক মোড়, বদ্দারহাট, ষোলশহর, নাসিরাবাদ, সাগরিকা, আগ্রাবাদ, হালিশহর এলাকার নালা নর্দমাগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে।
আরও পড়ুন : সাংবাদিকদের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচারের আহ্বান
তাই আগামী বর্ষার আগে ভরাট হয়ে যাওয়া খাল ও নালাগুলো খুলে দিয়ে নগরীর সমস্যা নিরসনের জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন নগরবাসী।
ওডি/কেএইচআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড