মোহাম্মাদ শাহআলম মিয়া, ঝিনাইদহ
অনিয়মসহ নানা দুর্নীতি করেও বহাল তবিয়তে রয়েছেন অগ্রণী ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা। এমনকি ওই দুই কর্মকর্তার হয়রানি, নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন ব্যাংকের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীও। বছরের পর বছর একই কর্মস্থলে থাকায় তারা জড়িয়ে পড়েছেন ঘুষবাণিজ্যসহ নানান অপরাধে। অভিযুক্তরা হলেন- অগ্রণী ব্যাংক ঝিনাইদহ আঞ্চলিক কার্যালয়ের সিনিয়র অফিসার নজরুল ইসলাম ও ঝিনাইদহ শাখার ক্যাশ অফিসার বিশ্বজিৎ কুমার সাহা।
জানা যায়, নজরুল ইসলাম ও বিশ্বজিৎ কুমার সাহা চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে দীর্ঘদিন ধরে একই কার্যালয়ে কর্মরত আছেন। যে কারণে প্রভাব খাটিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হয়রানি করে চলেছেন। অগ্রণী ব্যাংক ঝিনাইদহ আঞ্চলিক কার্যালয়ের সিনিয়র অফিসার নজরুল ইসলাম প্রায় ৫ বছর যাবৎ একই স্থানে কর্মরত। কিছুদিন আগে হামদহ শাখায় বদলি হয়ে যোগদানের পরদিন থেকে আবারও আঞ্চলিক কার্যালয়ে ফিরে আসেন।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি অফিসে না এসেও ব্যাকডেটে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি টাকার বিনিময়ে হামদহ বাসস্ট্যান্ড শাখায় সাইফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে প্রায় ১৪ লাখ টাকা ঋণের ভুয়া ফিজিবিলিটি রিপোর্ট দিয়ে ঋণ বিতরণের চেষ্টা করেন। বিষয়টি ব্যাংকের ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে কর্তৃপক্ষ ঋণ বিতরণ বন্ধ করে দেয়। এমন অনিয়ম করার পরও তার বিরুদ্ধে নেওয়া হয়নি কোনো বিভাগীয় ব্যবস্থা। যে কারণে তিনি দিনকে দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছেন। এছাড়া গত ২০ ও ২৩ জানুয়ারি হামদহ শাখায় অফিস না করেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন জোরপূর্বক; গ্রহণ করেন লাঞ্চ কুপন।
এদিকে ঝিনাইদহ অগ্রণী ব্যাংক লি.-এর ক্যাশ অফিসার বিশ্বজিৎ কুমার সাহার বিরুদ্ধে রয়েছে আরও গুরুতর অভিযোগ। আঞ্চলিক কার্যালয়ের পোস্টিং দেখিয়ে তিনি পুনরায় রিলিভিং ডিউটি পালন করছেন। তিনবছর যাবৎ এক কার্যালয়ে কর্মরত থাকার নিয়ম থাকলেও তিনি একই স্থানে রয়েছেন চার বছর। অফিসার (ক্যাশ) হিসেবে চাকরি করলেও তিনি ক্যাশ কাউন্টারে না বসে প্রভাব খাটিয়ে ক্যাশ রেমিটেন্সের দায়িত্ব পালন করছেন। যেখান থেকে তিনি প্রতিদিন ৫শ টাকা হারে ভাতাও গ্রহণ করছেন। তাছাড়া অফিসার সমিতির ব্যানারে প্রভাব খাটিয়ে প্রায় দুই শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অঞ্চল ও অঞ্চলের বাইরে বদলি করিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, ‘বিশ্বজিৎ কুমার সাহাকে চাহিদা মোতাবেক ঘুষ না দিলে তাদেরকে হয়রানি করা হয়। গত তিন বছর ব্যাংকের আ. লীগ সমর্থিত কর্মকর্তাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়েছে। ঢাকা কলেজে লেখাপড়া করাকালীন বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পরিষদের নেতা ছিলেন তিনি। ছাত্রদল নেতা হয়ে এখন আ. লীগের লোকজনকে হয়রানি করছেন।’
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তার কোনো সত্যতা নেই। অফিসে এসে আমার স্যারের সাথে কথা বলতে পারেন।’ বিশ্বজিৎ কুমার সাহা বলেন, ‘আপনাদের সাথে ফোনে কোনো কথা হবে না। পারলে ব্যাংকে আসেন। সামনাসামনি কথা হবে।’
জানতে চাইলে ঝিনাইদহ অগ্রণী ব্যাংক আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক মানস কুমার পাল বলেন, ‘ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে আমরা বুঝবো। এটা নিয়ে বাইরের কারো মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই।’
আরও পড়ুন : স্মার্টফোন কিনে না দেওয়ায় পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যা
বিষয়টি নিয়ে অগ্রণী ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর আনোয়ারুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি জানান, ‘বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। ডিজিএমকে বলেছি তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।’
ওডি/এএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড