• রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বাড়তি টাকা না পেয়ে টিউমার রেখেই সেলাই দিলেন চিকিৎসক

  সারাদেশ ডেস্ক

১৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:২৩
মানিকগঞ্জ
মানিকগঞ্জ ডক্টরস ক্লিনিক (ছবি : সংগৃহীত)

মানিকগঞ্জে সিজারের সময় রোগীর পেটে টিউমার দেখে তা অপসারণ করতে অতিরিক্ত তিন হাজার টাকা রোগীর স্বজনদের কাছে দাবি করেন চিকিৎসক। বাড়তি ওই টাকা জোগাড় করতে কিছুটা সময় চান রোগীর পরিবার।

সকালেই টাকা জোগাড় করে দিয়ে দেবেন জানিয়ে সিজারের সময়ই টিউমার অপসারণ করার অনুরোধ করেন রোগীর স্বামী। তবে তাৎক্ষণিক টাকা জোগাড় করে দিতে না পারায় রোগীর পেটে টিউমার রেখেই সেলাই করে দেন চিকিৎসক।

অভিযুক্ত চিকিৎসকের নাম খায়রুল হাসান। তিনি মানিকগঞ্জ ডক্টরস ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। বাড়তি টাকা না পেয়ে পেটে টিউমার রেখে সেলাই দেওয়ার কথা নিজেও স্বীকার করেছেন এই চিকিৎসক।

শনিবার (১১ ডিসেম্বর) ভোরে মানিকগঞ্জ শহরের হেলথ কেয়ার মেডিক্যাল সেন্টার হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী নারীর নাম আফরোজা আক্তার। তিনি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার নয়াডিঙ্গী গ্রামের নাঈম ইসলামের স্ত্রী।

ভুক্তভোগীর স্বামী নাঈম ইসলাম জানান, শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে তার অন্ত:সত্ত্বা স্ত্রীকে হেলথ কেয়ার মেডিক্যাল সেন্টার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত ২টার দিকে তাকে নেওয়া হয় অপারেশন থিয়েটারে। শহরের ডক্টরস ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. খায়রুল হাসান এবং অ্যানেস্থেসিস্ট ডা. আশিককে অপারেশনের জন্য ডাকেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

তিনি জানান, সিজারের মাধ্যমে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তার স্ত্রী। অস্ত্রোপচারের সময় তার স্ত্রীর পেটে একটি টিউমার দেখতে পান চিকিৎসকরা। এসময় ডা. খায়রুল জানান, পেটের টিউমার অপসারণ করতে চাইলে আরও তিন হাজার টাকা লাগবে। টাকা দিতে রাজিও হন নাঈম। কিন্তু ভোররাতে টাকা সংগ্রহে একটু দেরি হওয়ায় চিকিৎসক টিউমার রেখেই পেট সেলাই করে চলে যান।

নাঈম ও তার পরিবারের সদস্য এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অনুরোধ করলেও টাকা ছাড়া টিউমার অপসারণ করতে রাজি হননি ডা. খায়রুল।

নাঈম ইসলাম বলেন, ‘মাত্র তিন হাজার টাকার জন্য চিকিৎসক এমন আচরণ করবেন, তা ভাবতেও পারিনি। এই টিউমার অপসারণ করতে আমার স্ত্রীর আবার পেট কাটতে হবে।’

হেলথ কেয়ার মেডিক্যাল সেন্টার হাসপাতালের ব্যবস্থাপক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সিজারের পর রোগীর স্বজনরা আমাকে ফোন করেন। আমি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসককে অনুরোধ করি। বলেছি, রোগী টাকা না দিলে আমি দেবো। তবুও তিনি টিউমারটি অপসারণ করেননি। পেটে টিউমার রেখেই সেলাই করে চলে যান। এটি খুবই অমানবিক কাজ হয়েছে। এতে আমার হাসপাতালের সুনামও নষ্ট হয়েছে।’

জানতে চাইলে অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. খায়রুল হাসান বলেন, ‘একটি অপারেশন করতে গিয়ে আরেকটি অপারেশন প্রয়োজন পড়লে তার জন্য বাড়তি টাকা চাইতেই পারি।’

তিনি বলেন, ‘দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর আবার অজ্ঞান করা লাগতে পারে। এর ফলে অন্য কোনো সমস্য হতে পারে। এজন্যই টিউমারটি অপসারণ করা হয়নি। এটা তো খুব জরুরি না। পরে আবার অপারেশন করা যাবে।’

আরও পড়ুন : আড়াই কোটি টাকা আত্মসাৎ, টেকনোলজিস্ট কারাগারে

মানিকগঞ্জ জেলার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। তবে এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। এটা অত্যন্ত অমানবিক কাজ হয়েছে। অভিযোগ পেলে ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

ওডি/এফই

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড