• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

কীটনাশক ব্যবহারে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে কৃষকরা

  নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ)

০৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬:০৫
কৃষক
কীটনাশক ছিটাচ্ছেন একজন কৃষক (ছবি : অধিকার)

নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় জমিতে নিরাপদ কীটনাশক ব্যবহার না করায় স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে কৃষকরা। কিন্তু এ ব্যাপারে তাদেরকে সচেতন করার কোনো উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ কৃষকদের।

বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলত কৃষিনির্ভর। কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে মান্ধাতা আমলের চাষাবাদ পদ্ধতির পরিবর্তে সকল ক্ষেত্রে আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারের প্রসার এখনো ঘটেনি। উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে জমি চাষে এখন পাওয়ার টিলারের ব্যবহার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেলেও অন্যান্য যন্ত্রপাতির তেমন ব্যবহার তেমন লক্ষ্য করা যায় না। ফলে ফসলের চারা লাগানো, আগাছা পরিস্কারসহ ফসল কাটা, মাড়াইয়ের কাজ কৃষি শ্রমিকের উপর নির্ভরশীল।

আর ফসলকে পতঙ্গ ও রোগ-বালাই থেকে রক্ষায় বিভিন্ন সময় কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। বেশি জমিতে একসাথে কীটনাশক প্রয়োগের ক্ষেত্রে পাওয়ার স্প্রে ব্যবহার করা হয়। কৃষক সাধারণত হ্যান্ড স্প্রে (হস্ত চালিত যন্ত্র) দিয়ে জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করেন। কীটনাশক প্রয়োগ করার সময় মাস্ক ও গ্লাভস ব্যবহার করার প্রয়োজন হলেও সচেতনতার অভাবে কৃষক ও কৃষি শ্রমিক এগুলো ছাড়াই জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করছেন। ফলে নাক ও মুখ দিয়ে বিষ দেহে প্রবেশ করছে। এতে মাথা ঘোরাসহ নানা উপসর্গে ভোগেন কৃষক। কিন্তু এ ব্যাপারে গ্রামের কৃষক তেমন অবহিত নয়।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন মাঠ পরিদর্শনকালে দেখা যায়, কোনো নিরাপদ ব্যবস্থা ছাড়াই বিভিন্ন আবাদের খেতে কৃষক হ্যান্ড স্প্রে দ্বারা কীটনাশক প্রয়োগ করছেন।

এ বিষয়ে বজ্রপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ মন্ডল জানান, কীটনাশক জমিতে দেওয়ার সময় উৎকট গন্ধ সহ্য করতে হয়। এছাড়াও ওষুধ প্রয়োগের পর মাথা ঘোরাসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু কিভাবে ওষুধ প্রয়োগ করলে কোনো সমস্যা হবে না- তা আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে কখনো কেউ পরামর্শ দেয়নি। গ্রামের সকল কৃষক এভাবেই জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করেন।

জানা গেছে, গাছ বাড়ার জন্য ১৭টি মৌলিক পুষ্টি উপাদানের প্রয়োজন হয়। এসব পুষ্টি উপাদানের কিছু (হাইড্রোজেন, অক্সিজেন ও কার্বন) আসে পানি ও বাতাস থেকে। বাকি ১৪টি (নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, গন্ধক, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্লোরিন, লৌহ, ম্যাঙ্গনিজ, বোরন, দস্তা, তামা, মলিবডেনাম, কোবাল্ট) আসে মাটি থেকে। ১৯৫০ সালের পর থেকে মাটিতে মৌলিক পুষ্টি উপাদানের অভাব দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে আমাদের মাটির ৬-৭টি মৌলিক পুষ্টি উপাদানের অভাব দেখা দিয়েছে। আগামী ২০-৩০ বছর পর আরও ৩-৪টি পুষ্টি উপাদানের অভাব দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কেএম কাউছার হোসেন জানান, প্রথমত আমরা কৃষককে কীটনাশক প্রয়োগ থেকে বিরত থাকারই পরামর্শ দিয়ে থাকি। আলোক ফাঁদ’র মাধ্যমে চাষাবাদের পরামর্শ দিয়ে থাকি। ওসমানি পদ্ধতিতে (ওষুধ, সময়মাত্রা ও নিয়ম মাফিক সঠিক প্রয়োগ) বিষ প্রয়োগের জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। কৃষকরা জৈব সারের চেয়ে রাসায়নিক সার বেশি ব্যবহার করে। তবে জৈব সার ব্যবহারে কৃষকরা যেন উদ্বুদ্ধ হয়, তার জন্য আমরা কাজ করছি।

ওডি/এএম

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড