মাদারীপুরে শিশু হত্যায় ৩ জনের ফাঁসি

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার সেনদিয়া গ্রামে শিশু আদুরী আক্তার (৫) হত্যা মামলায় ৩ জনের ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত। একই সাথে আসামিদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় একজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

মাদারীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নিতাই চন্দ্র সাহা সোমবার (২৯ নভেম্বর) সকালে এই রায় ঘোষণা করেন।

মাদারীপুরের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. সিদ্দিকুর রহমান সিং মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- রাজৈর পশ্চিম স্বরমঙ্গল গ্রামের রফিক হাওলাদারের ছেলে রাজিব হাওলাদার (৪১), কোদালিয়া বাজিতপুরের মুহিত গাছীর ছেলে রিমন হোসাইন ওরফে ইমন গাছী (৩২) ও পিরোজপুর জেলার ভৈরমপুরের রফিকুল ইসলাম মোল্লার ছেলে শফিকুল ইসলাম মোল্লা (৩১)।

এ ছাড়া মামলায় বাগেরহাট জেলার সেলিম হাওলাদারের (৪১) বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২০ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৬টার দিকে সেনদিয়া জামে মসজিদে আরবি পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হয় টুকু সরদারের মেয়ে আদুরী আক্তার। পরে আদুরী আক্তারের বাবা টুকু সরদার বাদী হয়ে ওই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪ থেকে ৫ জনকে আসামি করে রাজৈর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলা দায়েরের পর সেনদিয়া জামে মসজিদের ইমাম শফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করে রাজৈর থানা পুলিশ। পরে পুলিশের কাছে খুনের ঘটনা স্বীকার করলে শফিকুলের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মসজিদের পাশ থেকে আদুরী আক্তারের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়।

পরবর্তীকালে মামলার চার আসামিকে পুলিশ গ্রেফতার করলে তিন আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে অদ্যাবধি পলাতক রয়েছে। তবে মামলার রায়ের দিন আসামি রিমন হোসাইন ওরফে ইমন গাছী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এ দিকে, রায় ঘোষণার পর নিহত আদুরী আক্তারের বাবা টুকু সরদার অধিকারকে বলেন, ‘আমার মেয়ে হত্যার রায়ে আমি খুশি হয়েছি। আমার সরকারের কাছে একটাই দাবি- এই ফাঁসির রায় যেন দ্রুত কার্যকর হয়।’

আরও পড়ুন : নওগাঁয় নৌকার ভরাডুবি

মৃত্যুদণ্ডের রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করে মাদারীপুরের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. সিদ্দিকুর রহমান সিং অধিকারকে বলেন, ২০১৫ সালের ২০ সেপ্টেম্বর আদুরী নামে ওই শিশুকে হত্যা করে লাশ বস্তাবন্দি করে মাটিতে পুঁতে রাখা হয়। পরবর্তীকালে পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত মসজিদের ইমামকে গ্রেফতার করে এবং তার দেওয়া তথ্যে লাশ উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, সোমবার বিজ্ঞ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ নিতাই চন্দ্র সাহা এই মামলার রায় প্রদান করেন। রায়ে ৩ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় এবং একজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। এই রায়ে আমরা রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।

ওডি/নিলয়