মশিয়ার রহমান, নীলফামারী
নীলফামারীর সৈয়দপুরে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে সৈয়দপুর থানা পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী ও শাশুড়িকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ৭টায় উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মণপুর পশ্চিম পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরকীয়ার জেরে এ হত্যাকাণ্ড হতে পারে এমনটাই ধারণা করছেন এলাকাবাসী।
নিহত নারীর নাম লাভলী বেগম (২৬)। সে দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার মন্মথপুর ইউনিয়নের দাগলাগঞ্জ দলবাড়ীপাড়ার বাবলু মন্ডলের মেয়ে। ১২ বছর আগে লাভলীর বিয়ে হয়েছে সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মণপুর পশ্চিম পাড়া গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে দিনমজুর রেজাউল করিমের সঙ্গে। তাদের সংসারে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে।
লাভলী বেগমের মা মঞ্জুয়ারা বেগম বলেন, বিয়ের পর থেকেই রেজাউল তেমন কাজ কর্ম করে না। সংসারটা আমার মেয়েই অনেক কষ্ট করে চালিয়ে আসছে। সম্প্রতি জামাই তার ছোট ভাইয়ের বউর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছেন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ চলছিল।
তিনি আরও বলেন, মাঝেমাঝে আমার মেয়েকে পুরো পরিবার মিলে শারীরিক নির্যাতন করত। এরই মধ্যে বুধবার জানতে পারি সোমবার থেকে লাভলী নিখোঁজ। শুক্রবার তার লাশ পাওয়া গেলো বাঁশঝাড়ে। আমার মেয়েকে ওরা আগেই পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। এখন আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে লাশ বাঁশ ঝাড়ে রেখে এসেছে। আমি এর শাস্তি চাই।
নিহতের মা আরও বলেন, ছোট নাতনিটা বলেছে তার মাকে তার বাবা, দাদা ও দাদীরা মিলে পিটিয়ে মেরেছে। লাশ কয়েকদিন থেকে ঘরের ছাদে (সিলিং) রেখে নিখোঁজ হয়েছে বলে প্রচার করে। পরে দুর্গন্ধ বের হওয়ায় বাঁশ ঝাড়ে নিয়ে ফেলে রেখেছে। একথা বলার কারণে এখন আমার মেয়ের সন্তানদেরকে আমাদের কাছে আসতে দিচ্ছে না। পাশের বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, চারদিন থেকে লাভলী বেগমকে পাওয়া যাচ্ছিল না। বৃহস্পতিবার রাতে ওঝা এনে গণনা করা হয়। তাতেও কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় সকালে এক পেতিবেশি বাঁশঝাড়ে লাশ দেখতে পেয়ে চিৎকার করলে পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী উপস্থিত হয়। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত খান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি লাশ বাঁশঝাড়ের মধ্যে পড়ে আছে। অনেক কষ্টে বাঁশ কেটে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। জড়িত সন্দেহে স্বামী ও শশুড়িকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। অন্যরা পলাতক রয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নীলফামারী মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওডি/এফই
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড