• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

নরসিংদীতে এশিয়ার সর্ববৃহৎ সার কারখানা নির্মাণ

  নাসিম আজাদ, পলাশ (নরসিংদী)

২৬ নভেম্বর ২০২১, ১৬:০৪
নরসিংদীতে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে এশিয়ার সর্ববৃহৎ সার কারখানার নির্মাণ কাজ
সার কারখানার নির্মাণ চলছে । ছবি : অধিকার

দেশে ইউরিয়া সারের উৎপাদন বাড়াতে নরসিংদীর পলাশে নির্মিত হচ্ছে এশিয়ার মহাদেশের সর্ববৃহৎ সার কারখানা। এটি বর্তমান সরকারের মেগা প্রকল্পের একটি। ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা প্রজেক্ট। যার দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা হবে ২ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। আর বছরে হবে ৯ লক্ষ ২৪ হাজার মেট্রিক টন।

জানা যায়, নরসিংদীর পলাশে ঘোড়াশাল ইউরিয়া সার কারখানা স্থাপন করা হয় ১৯৭০ সালে। পরবর্তীতে একই স্থানে পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা নামে আরও একটি সার কারখানা স্থাপন করা হয়। শুরুতে এই দুই সার কারখানার উৎপাদন ক্ষমতা ছিল প্রায় ৬ লাখ টন। উৎপাদন ক্ষমতা হারিয়ে যা শেষ পর্যন্ত দাঁড়িয়ে ছিল ৪ লাখ টনে।

অথচ প্রতিদিন কারখানা দুটিতে পোড়ানো হতো ৬৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। যা বাড়িয়ে দিয়েছে সারের উৎপাদন খরচ। তাই উৎপাদন বাড়াতে এ দুটি সার কারখানা ভেঙে আধুনিক একটি সার কারখানা স্থাপনের কাজ শুরু করেছে সরকার।

বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশন (বিসিআইসি) থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে ২০২০ সালের মার্চ মাসের ১০ তারিখে। শেষ হবে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে। কারখানাটি উৎপাদনে এলে এখান থেকে পাওয়া যাবে বছরে ৯ লক্ষ ২৪ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার। আমদানি নির্ভরতা কমে ৫ ভাগের ১ ভাগে নেমে আসবে।

বছরে সাশ্রয় হবে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা। আধুনিক আর পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তিতে নির্মাণ করা হচ্ছে কারখানাটি। যাতে খরচ হবে সারে ১০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের ১৮০০ কোটি টাকা। বাকি টাকা আসবে নির্মাতা দুই প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঋণ হিসেবে। কারখানাটি যৌথভাবে নির্মাণ করছে জাপানের মিটসুভিসি হেবি ইন্ডাস্ট্রিজ ও চায়না প্রতিষ্ঠান সিসি সেভেন।

এখন পর্যন্ত নির্মাণ ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ২৪৫.৩৫ মিলিয়ন ইউ এস ডলার। ধাপে ধাপে অর্থাৎ আগামি মাসে নির্মাণ ব্যায় আরও বাড়বে। এটি নির্মাণে বিশ্বের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বাংলাদেশে যতো সার কারখানা আছে তাতে কার্বন ডাই-অক্সাইড অর্থাৎ যে গ্যাসটা পরিবেশকে দুষিত করে, সেই গ্যাস আকাশে ছেড়ে দেই। শুধু সার কারখানা নয়, দেশের সবগুলো পাওয়ার প্লান্টেও এই দূষিত গ্যাসগুলো আকাশে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এটিই বাংলাদেশের প্রথম সার কারখানা হবে, যেখানে দূষিত গ্যাসগুলো আকাশে ছেড়ে না দিয়ে ধরে প্রজেক্ট প্রসেজের মধ্যে এনে অতিরিক্ত ১০ ভাগ ইউরিয়া সার উৎপাদন করা হবে।

এ গুলো সব সম্মিলিত ভাবে লেটেস্ট টেকনোলজি ব্যাবহার করার প্রেক্ষিতেই প্রতিদিন ২ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার তৈরি করা হবে। আগে যেখানে (ফিল)ইউরিয়া অর্থাৎ ছোট ছোট দানা ব্যাবহার করা হতো এখন বড়ো বড়ো দানা ব্যাবহার করা হবে। কারণ বড়ো দানার ইউরিয়া সার পরিবেশ বান্ধব।

ছোটগুলো এখন আর পৃথিবীতে নেই। কারণ এটা পরিবেশকে দূষিত করে। আর গাছ কিন্তু একসঙ্গে নাইট্রোজেন নিতে পারে না। দানাদার ইউরিয়া সারের সুবিধা হলো জমিতে আস্তে আস্তে নাইট্রোজেন পায় আস্তে আস্তে গ্রহণ করে। তিন বেলার খাবার যেমন একসাথে দিলে খাওয়া যায় না, ভাগ ভাগ করে খেতে হয়। অর্থাৎ তিন বেলাই ক্ষুধা লাগবে তিন বলাই খাবো এইভাবে। প্লান্টের খাবার হলো নাইট্রোজেন, যেটাকে স্লো রিলিজ ফার্টিলাইজার বলা হয়। তাতে সে আস্তে আস্তে খেতে পারে। তার পুষ্টিটাও পরিপূর্ণ হয়। আগে যে (প্রিল) ইউরিয়া ছিল সেখানে নাইট্রোজেন গুলো একসাথে রিলিজ হতো। তাতে যেটুকু প্রয়োজন হতো আর বাকিটুকু আকাশের দিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। দুষিত করে ফেলতো পরিবেশকে। এই সার কারখানাটির ন্যায় এখন থেকে বাংলাদেশের প্রতিটি সার কারখানা পরিবেশ বান্ধব হয়ে গড়ে উঠবে।

এই পজেক্টির কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। কোভিডের কারণে কিছুদিন বিদেশি শ্রমিক কম ছিল এখন কোভিড কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসায় বিদেশিরা আসতে শুরু করেছে। দেশি এবং বিদেশি শ্রমিক মিলে একসঙ্গে দ্রুত কাজ করছে। বর্তমানে সরকারকে ইউরিয়া সার আমদানিতে প্রতি বছর ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়, এটি উৎপাদনে আসলে আর তা দিতে হবে না।

বাংলাদেশে বছরে ২৫ লক্ষ টন ইউরিয়া সারের প্রয়োজন হলেও এটি উৎপাদনে আসলে ২০ লক্ষ টন পাওয়া যাবে। আর বাকি ৫ লক্ষ টন বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে। অর্থাৎ ৫ ভাগের ৪ ভাগ বাংলাদেশে উৎপাদন হবে। মোট কথা ৮০ ভাগ দেশে উৎপাদন আর ২০ ভাগ বিদেশ থেকে আনতে হবে। এখন বাংলাদেশে ৪০ ভাগ ইউরিয়া সার উৎপাদন হচ্ছে ৬০ ভাগ বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। এটি উৎপাদনে আসলে দেশের ৫ ভাগের ৪ ভাগ কৃষকের চাহিদা পূরণ হবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে ৯৬৮ জন স্থায়ীসহ ২৬ হাজার মানুষের।

বিসিআইসি আরও জানান, এসব প্রজেক্ট গুলো তৈরি করতে প্রধানত নদীর পারকেই বেছে নেওয়া হয়। মেশিনারিজ ইকুয়েভমেন্ট খুব সহজেই আনা যায়। যা সড়ক পথে আনা সহজ নয়। সার উৎপাদনে প্রচুর পরিমাণ পানি ব্যবহার করতে হয়। উৎপাদনের পর সার সরবরাহ করতেও সুবিধা। আর সার উৎপাদনে প্রধানত কাঁচামাল হিসেবে বাতাস ও ন্যাচারাল গ্যাস ব্যবহার করা হয়।

প্রজেক্টটিতে কর্মরত শ্রমিক খানেপুর গ্রামের ওমর আলী জানান, মহামারী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে বেকার হয়ে পরেছিলাম। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটত। বর্তমানে এখানে কাজ করে যা বেতন পাই তাই দিয়ে বউ ছেলে মেয়ে নিয়ে ভালোই আছি। অভাব অনটনের সেই দিনগুলো যেন আর দেখতে না হয়।

এখানে কর্মরত অপর একজন ইঞ্জিনিয়ার দিনাজপুরের শাহিনুর ইসলাম বলেন, আমি এই প্রজেক্টের শুরু থেকে কাজ করছি এই এলাকার মানুষজন খুবই ভালো। এখানকার পরিবেশও মনোরম। এখান থেকে উপার্জিত টাকা দিয়ে ছেলে মেয়ের পড়াশোনা সহ পরিবার নিয়ে সুখে আছি। সংসার চালিয়ে মাস শেষে কিছু টাকা আয় করতে পারছি।

বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক ও ঘোড়াশাল পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র আল মুজাহিদ হোসেন তুষার বলেন, ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা প্রজেক্ট বর্তমান সরকারের মেগা প্রকল্পের একটি। এটি আমাদের নরসিংদীর পলাশ শিল্পাঞ্চলে নির্মিত হচ্ছে। তাই আমি ঘোড়াশাল পৌরসভার একজন নাগরিক হিসেবে এই অঞ্চলের সর্বস্তরের জনগণের পক্ষ থেকে বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

এই মেগা প্রকল্পের কারণে প্রতি বছর বাংলাদেশে যে পরিমাণ ইউরিয়া সার আমদানি হয়। সে ক্ষেত্রে প্রায় ৫ থেকে ৬ লক্ষ মেট্রিক টন সার কম আমদানি করতে হবে। যা আমাদের দেশের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক একটি দিক। স্থানীয় ভাবে বেকারত্ব অনেকটাই কমে এসেছে। যারা ব্যবসায়ী আছেন নতুন করে ব্যবসার সুযোগ পাবে। দীর্ঘদিন দুটি কারখানা বন্ধ থাকার কারণে এই অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই প্রজেক্টকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। এখানে ফরেনার সহ স্থানীয় ও দেশের বিভিন্ন জেলার লোকজন শান্তিপূর্ণ ভাবে কাজ করছে। ব্যবসায়ীরা নতুন করে ব্যবসার স্বপ্ন দেখছেন। বর্তমান সরকার কৃষি ও কৃষক বান্ধব সরকার তাই প্রজেক্টের কারণে কৃষি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কৃষকরা খুব সহজেই সার পাবে। সবচেয়ে বেশি আমাদের এলাকার মানুষের মঙ্গল বয়ে আনবে। পরিবহনসহ বিভিন্ন ব্যবসার সুযোগ হবে। পলাশ উপজেলা আরও অনেক উন্নত হবে। সেই দিনটির জন্য এলাকার মানুষ অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।

এ ব্যাপারে বিসিআইসির প্রকৌশলী ও ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা প্রজেক্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজিউর রহমান মল্লিকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বাংলাদেশ সরকারের মেগা প্রকল্প গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা পজেক্ট। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যোগ্য নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনায় ঘোড়াশাল ইউরিয়া সার কারখানা কোম্পানি লিমিটেড ও পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা কোম্পানি লিমিটেড এই দুটিকে বন্ধ করে কিভাবে এখানে একটি আধুনিক সার কারখানা তৈরি করা যায়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় সার কারখানাটি স্থাপনে আমরা পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করি। এ ব্যাপারে আমরা বিভিন্ন ভাবে গবেষণা করে পরবর্তীতে ইন্টারন্যাশনাল ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমে আমরা এই প্রজেক্ট হাতে নেই। ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমে জাপানের মিটসুভিসি কোম্পানি সারা বিশ্বে সার কারখানা তৈরি করে। এই জন্য আমরা মিটসুভিসিকেই চূড়ান্ত করি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা ও যোগ্য নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আর এই খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতায় উল্লেখ যোগ্য ভূমিকা রাখছে, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশন। কৃষকদের হাতে যথা সময়ে এবং যথাযথ পরিমাণ সার তুলে দেওয়ার মাধ্যমে।

আপনারা আরও জানেন যে, বাংলাদেশে ২৫ লক্ষ টন ইউরিয়া সারের প্রয়োজন রয়েছে। তার মধ্যে বিসিআইসি প্রায় ১০ লক্ষ টন উৎপাদন করতে পারে। বাকি ১৫ লক্ষ টন বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা ও যোগ্য নেতৃত্বে আমরা যেই প্রজেক্টটা করতে যাচ্ছি। এই প্রজেক্টটার কাজ শেষ হলে আমরা প্রায় সারে ৯ লক্ষ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার উৎপাদন করতে সক্ষম হবো। ইতি মধ্যে বিসিআইসির অন্যান্য সার কারখানা উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আশা করি এই প্রজেক্টের কাজ শেষ হলে বাংলাদেশ ইউরিয়া সার উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করবে। কৃষি নির্ভর বাংলাদেশের কৃষকদের ইউরিয়া সারের চাহিদাও মিটে যাবে। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা বেঁচে যাবে এবং বাংলাদেশ যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ তা প্রমাণিত হবে।

আরও পড়ুন : পলাশে দুই ইউপি নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিল

বিশেষ ভাবে উল্লেখ করতে চাই, মহামারী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে সারা বিশ্ব যখন থমকে গিয়েছিল এই প্রজেক্টের কাজ তখনো থেমে থাকেনি। যার কারণে ইতোমধ্যে ৪০ ভাগের উপরে কাজ শেষ হয়েছে। আমাদের ইয়াং কন্ট্রাক্টর এম এস আই, সি সি সেভেন তারাও সমান তালে কাজ করছে। সেই জন্যই আমাদের এই অগ্রগতি। আশা করি আমরা যথাসময়ে এবং যথাযথ ভাবে এই প্রজেক্টের কাজ শেষ করে উৎপাদনে যেতে পারব।

ওডি/এসএ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড