• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

চুয়াডাঙ্গা শহর আবর্জনার ভাগাড়

  কামরুজ্জামান সেলিম, চুয়াডাঙ্গা

২৪ নভেম্বর ২০২১, ১১:০২
চুয়াডাঙ্গা
আবর্জনার স্তুপ (ছবি : অধিকার)

আবর্জনার শহরে পরিণত হয়েছে চুয়াডাঙ্গা। যেখানে সেখানে ডাস্টবিনের বাইরে আবর্জনা পড়ে থাকে। ডাস্টবিনের আশেপাশেও থাকে আবর্জনার স্তুপ। পৌরসভার গাড়ি নিয়মিত আসে না বলে রাস্তার পাশেপাশে ছাড়ানো ছিটানো থাকে আবর্জনা।

শহরবাসিকে দূর্গন্ধ অতিক্রম করে যাতায়াত করতে হয়। এগুলো হলো, শহরের ভেতরের চিত্র। শহর ছেড়ে বাইরে বের হতে হলেও একই দুর্ভোগ পেরিয়ে যেতে হয়। নাকে রুমাল চাপা দিয়ে অথবা কিছু সময়ের জন্য নিশ্বাস বন্ধ করে নির্দিষ্ট এলাকা পার হতে হয়। শহরের দূর্গন্ধযুক্ত নোংরা আবর্জনা ফেলার জন্য পৌর কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট কিছু স্থান চিহ্নিত করেছেন।

মাথাভাঙ্গা নদীর তীরের কয়েকটি স্থান, চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ প্রধান সড়কে শহরের বাস টার্মিনালের কাছে, চুয়াডাঙ্গা-কুষ্টিয়া সড়কের ঘোড়ামারা ব্রিজের কাছে এবং শহরের ভেতরের আরও কয়েকটি নির্দিষ্ট স্থানে। চুয়াডাঙ্গা শহর অতিক্রম করে ঝিনাইদহের দিকে যেতে বাস টার্মিনাল পার হওয়ার পরপরই নাকে আসে দূর্গন্ধ। টার্মিনাল পার হওয়ার পরপরই রাস্তার দুপাশে দেখা মেলে আবর্জনার স্তুপ। সপ্তাহে অন্তত দু’দিন পৌরসভার গাড়ি এসে রাস্তার পাশে আবর্জনা ফেলে চলে যায়।

চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ প্রধান এই সড়কটি অতি ব্যস্ততম সড়ক। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এই সড়কে সব ধরণের ভারি যানবাহন চলাচল করে। ঢাকা, বরিশাল, কুষ্টিয়া ও খুলনা রুটের গাড়িগুলোও এই পথে যাতায়াত করে। বাস ট্রাকের পাশাপাশি ইজিবাইক, মোটরসাইকেল ও পায়ে হেঁটেও মানুষকে এই সড়কে চলতে দেখা যায়। রাস্তার গা ঘেঁষে আবর্জনা পড়ে থাকায় চলাচলকারিদের প্রকট দূর্গন্ধ সহ্য করেই এই স্থান অতিক্রম করতে হয়।

একই অবস্থা চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা-কুষ্টিয়া সড়কেও। শহরের পৌর এলাকার ঘোড়ামারা ব্রিজের কাছে রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হয় আবর্জনা। এই সড়কেও যাতায়াতকারিদের দুর্গন্ধের দূর্ভোগ সহ্য করতে হয়। আবর্জনার স্তুপ বড় হলে তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সেই আগুনে ঝলসে যাচ্ছে পাশের গাছপালা। অনেক গাছ ইতমধ্যেই আগুনের উত্তাপে পুরোপুরি শুকিয়ে গেছে।

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার আবর্জনার কারণে এই দুর্ভোগগুলো ছাড়াও চুয়াডাঙ্গা-দর্শনা সড়কের রেললাইনের পশে ফেলা হচ্ছে দর্শনা পৌরসভার আবর্জনা। চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা সড়কের রেল স্টেশন এলাকার পাশের রাস্তায় ফেলা হচ্ছে আলমডাঙ্গা শহরের আবর্জনা। জীবননগর শহরের জীবননগর-দত্তনগর সড়কের পশু হাটের সামনে এবং ভৈরব নদের পাশে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এ অবস্থায় পুরো চুয়াডাঙ্গা জেলাবাসিকে শহরের আবর্জনা নিয়ে পড়তে হয়েছে নানা বিড়ম্বনায়। বিশেষ করে সব এলাকাতেই রাস্তার পাশে আবর্জনা ফেলার কারণে জনদুর্ভোগ বেশি বেড়েছে।

চুয়াডাঙ্গা শহরের গৃহবধু এনজিওকর্মি আসমা হেনা চুমকি গত ১৫ নভেম্বর ফেসবুকে আবর্জনার একাধিক ছবি দিয়ে লেখেন, শহরের চাঁদমারি মাঠ এলাকার রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন সব শ্রেণী পেশার মানুষ। দূর্গন্ধে এই রাস্তায় চলা মুশকিল। দেখার কি কেউ নেই?

শহরের কোর্টপাড়ার বাসিন্দা আব্দুল আজিজ বলেন, শহরের আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট স্থান যেহেতু নেই, পৌর কর্তৃপক্ষ রাস্তার পাশে না ফেলে আবর্জনা ফেলতে পরে রাস্তা থেকে দূরে অনাবাদি কোনো জমিতে। তাহলে এতো বেশি দুর্ভোগ হয় না।

রাস্তার পাশে ময়লা আবর্জনা ফেলা প্রসঙ্গে চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক বলেন, পৌর এলাকার কিছু অসচেতন বাসিন্দা দূর থেকে ডাস্টবিন লক্ষ্য করে আবর্জনার প্যাকেট ছুড়ে ফেলেন। আবর্জনা ডাস্টবিনে না পড়ে বাইরে ছিটকে পড়ে। এ দায়ভার পৌর কর্তৃপক্ষের নয়। পৌরবাসিকে সচেতন হতে হবে।

আরও পড়ুন : শেরপুরে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, আহত ১৫

চুয়াডাঙ্গা-জীবননগর ও চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা সড়কের পাশে যে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে তার সমাধান হয়ে যাবে কয়েক মাসের মধ্যে। ইতিমধ্যেই ড্যাম্পিং স্টেশর তৈরির কাজ শুরু হয়ে গেছে। ড্যাম্পিং স্টেশন চালু হলে সেখানে আবর্জনা নিয়ে ফেলে আসা হবে।

ওডি/এফই

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড