• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

পলাশে পান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে চাষিরা

  নাসিম আজাদ, পলাশ (নরসিংদী)

১৭ নভেম্বর ২০২১, ১৫:১৮
পলাশে পান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে চাষিরা
পানের বাগান। ছবি : অধিকার

পান একটি অর্থকারী ফসল। পলাশ উপজেলায় পানের বরোজ খুব বেশি দেখা না গেলেও এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব কোনো অংশে কম নয়। দেশে বিদেশে রয়েছে এর ব্যাপক চাহিদা। এতে অনেক ঔষধি গুণ বিদ্যমান। কিন্তু রোগ বালাই পান উৎপাদনের একটি প্রধান অন্তরায়। পানের গোড়া পঁচা, সাদা গুঁড়া,ঢলে পড়া,পাতা পঁচা ইত্যাদি রোগ দেখা দেয়।

এ রোগ গুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে ফলন অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়। পান চাষের জন্য দরকার উঁচু, বন্যামুক্ত, বেলে দো আঁশ বা এটেল দো আঁশ যুক্ত জমি। ছায়াযুক্ত নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া পান চাষের জন্য ভালো।

এক সময় পলাশ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বেশকিছু পানের বরোজ থাকলেও বর্তমানে এর সংখ্যা অনেকটাই কমে এসেছে।

সময়ের বিবর্তনে চাষিরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। যদিও উপজেলার ডাংগা ও চরসিন্দুর ইউনিয়নের কিছু কিছু এলাকায় হাতে গোনা ১০-১২টি বরোজ রয়েছে। যা আগের তুলনায় খুবই কম। পুরাতন পদ্ধতিতে পান চাষ করার কারণে এখানকার চাষিদের লাভ কম হয়। ভেষজ চিকিৎসায় পানের ব্যবহার অনেকভাবে।

পানে প্রধানত ৭টি শিরা থাকে। এজন্য পানকে সপ্তর্ষিরা বলেও অনেকে অভিহিত করে থাকে। পান অত্যন্ত নরম, রসালো বলে জীবাণু আক্রান্ত হয়ে পচে যায়। বছরে দুবার লতা নামানোর হিসেব অনুসারে একটি পানের লতা সাধারণত ১২-১৩ হাত লম্বা হয়ে থাকে। হিসেব অনুসারে দেখা যায় ২০ বছরে ২৪০ থেকে ২৫০ হাত পর্যন্ত একটি লতা লম্বা হতে পারে। এই হিসেবে বলা যায়, পান লতাই পৃথিবীর দীর্ঘতম উদ্ভিদ লতা।

পানের ফলন ভালো পেতে হলে উন্নত মানের উপকরণ দিয়ে বরোজ তৈরি, প্রতিদিন দেখাশোনা, ভালো জাতের রোগমুক্ত লতা লাগানো, চারাগাছের যত্ন, লতা উঠলে শক্ত কাঠি ব্যবহার করা, ডগা ঝুলে পড়তে না দেয়া, বরোজের ছাউনি নিবিড় ঘন না করা, উপরের গাছের ডালপালা ছেঁটে দেওয়া, আস্তে করে লতা নামানো বা পাতা তোলা, বয়সী পান না রেখে দ্রুত বাজারজাত করা, জৈব সার পরিমাণ মতো ব্যবহার করা।

এক সারি থেকে অন্য সারির দূরত্ব ৪০-৫০ ইঞ্চ হওয়া, লোনা মাটি পরীক্ষা করে চুন প্রয়োগ করা, লতার সাথে শাখা ডাল না রাখা, পোকামাকড় ও রোগব্যধি সনাক্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারলে ক্ষতির সম্মুখীন না হওয়ার সম্ভাবনা।

পান চাষের সাথে যুক্ত স্থানীয় কৃষক মো. রোকন জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ পান চাষ করি।আমার পূর্ব পুরুষরাও এই চাষাবাদের সাথে জড়িত ছিল। তাই সেটাকে ধরে রেখেছি মাত্র।

পান চাষি আনোয়ার হোসেন জানান,আমার বাবাকে করতে দেখেছি কিন্তু আধুনিক চাষ পদ্ধতি গুলো তেমন জানা নেই। তাই পান বিক্রি করে কোন রকম সংসার চালিয়ে যাচ্ছি। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলায় ৩ হেক্টর জমিতে পানের আবাদ করা হয়েছে যার লক্ষ মাত্রা নির্ধারণ ধরা হয়েছে ৩১.৫০ মেট্রিক টন।

আরও পড়ুন : জৈববৈচিত্র রক্ষাকারী ব্যাঙের দিন ফুরিয়ে আসছে

এ ব্যাপারে পলাশ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আবু নাদির এস এ সিদ্দিকীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ উপজেলায় পানের আবাদ খুবই সীমিত। তার মধ্যে যারা জড়িত রয়েছেন আমরা তাদের বিভিন্ন ভাবে পরামর্শ দিচ্ছি। পানে পচন ধরা ও ছত্রাক আক্রান্তসহ রোগ বালাই প্রতিরোধে উঠান বৈঠকসহ বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকি। পানের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে পান চাষিদের আধুনিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।

ওডি/ এসএ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড