হুমায়ুন কবির সূর্য, কুড়িগ্রাম
উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে শুরু হয়েছে শীতের আগমনী বার্তা। শেষ বিকালে মাঝারি কুয়াশার সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে শীতের আমেজ। প্রতিদিন নামছে তাপমাত্রার পারদ। দিনে সূর্যের উত্তাপ থাকলেও রাতের চিত্র ভিন্ন। ভোর পর্যন্ত ঠাণ্ডার ফলে মার্কেটগুলোতে বেড়েছে গরম কাপড় কেনাকাটার ধুম।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগার অফিস সূত্র জানিয়েছে, এ মৌসুমে গত ১৬ নভেম্বর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়াও গত এক সপ্তাহে তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রি থেকে ২০ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করছে।
এ দিকে শীতের আগমনের সাথে সাথে দিনমজুর, ছিন্নমূল, নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষজন ভিড় জমাচ্ছে সেকেন্ড হ্যান্ড মার্কেট গুলোতে। এই মার্কেট গুলোতে বেশি বিক্রি বাট্টা হয় শীত মৌসুমে। বাকিটা সময় তাদের কেনাকাটা কম হওয়ায় লসের মধ্যে থাকতে হয়। ফলে এই সময়টাতে পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে তারা।
জেলা শহরে এ ধরণের সবচেয়ে বড় মার্কেট সাবেক ঝিনুক সিনেমা হল সংলগ্ন নছর উদ্দিন মার্কেটের ব্যবসায়ী আজমত আলী জানান, নভেম্বর মাস থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪ মাস আমাদের ব্যবসার মৌসুম। বছরের এই সময়টাতে ব্যবসা করে আমরা লাভের মুখ দেখি।
খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, শীত মৌসুমে নছর উদ্দিন ও শহরের অন্য প্রান্তে অবস্থিত আইনজীবী সমিতি মার্কেটসহ নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য প্রায় অর্ধশতাধিক দোকানপাট রয়েছে। এরা বাইরের জেলাগুলো থেকে পুরাতন কাপড়ের গাইট কিনে এনে সেসব কাপড় বিক্রি করেন।
নছর উদ্দিন মার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী হুজুর আলী ও দৌলত আলী জানান, আমরা রংপুর ও সৈয়দপুর থেকে পুরাতন কাপড়ের গাইট কিনে আনি। প্রতিটি গাইট ৮ থেকে ২০ হাজার টাকায় কেনা হয়। প্রতিদিন ৪ থেকে ৮হাজার টাকার পুরাতন কাপড় বিক্রি হয়। দিন শেষে ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা লাভ হয়।
অপর কাপড় ব্যবসায়ী রোস্তম আলী ও নজরুল ইসলাম জানান, এখন শীত কম থাকায় বেচাকেনা কম। শীত বাড়লে বিক্রি বেড়ে যাবে। আমাদের এখানে নিম্ন ২০ টাকা থেকে ঊর্ধ্বে ৩০০ টাকা পর্যন্ত মূল্যের কাপড় বিক্রি হয়। গাইট খুললে এখানে সব শ্রেণির মানুষ এসে তাদের পছন্দমত কাপড় কিনে নিয়ে যায়।
শহরের বকসীপাড়া এলাকার বাসিন্দা শাহানা আক্তার তার ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে এসেছেন আইনজীবী সমিতি মার্কেটে। তিনি বললেন, ২০০ টাকায় মেয়ের জন্য ৫ সেট গরম কাপড় কিনলাম। অন্য মার্কেটে এই কাপড় কিনলে তিনগুণ দাম নিতো। পাশর্বর্তী রাজারহাট উপজেলার চাকিরপশার ইউনিয়নের অচীনগাছ এলাকার মীনা রানী ও শ্রীকৃঞ্চ ৩০০ টাকায় বাচ্চাদের জন্য ৬ সেট কাপড় কিনেছেন। কমদামে পছন্দের কাপড় কিনতে পেরে খুশি তারা।
উলিপুরের জনতার হাট এলাকার অটোচালক খয়বর ও জামিল জানান, ভোরে ও সন্ধ্যার পর অটোচালাতে ঠাণ্ডা লাগে। এখানে ১২০ টাকায় গরম জ্যাকেট কিনতে পেরে খুশি তারা।
খবর আরও জানান, ফার্স্টহ্যান্ড মার্কেটে এক একটা জ্যাকেটের দাম ৩শ’টাকা থেকে ২ হাজার টাকা। মানও তেমন ভাল না।
এখানে মনের মত একটি জ্যাকেট কমদামে কিনতে পারলাম। এরকম দূর-দূরান্ত থেকে এই মার্কেটগুলোতে কাপড় কিনতে আসছে মানুষ। শীতের এই সময়টিতে যাদের কাপড় বিবর্ণ বা নষ্ট হয়ে যায় তারা সাধ্যের মধ্যে সেকেন্ড হ্যান্ড মার্কেটগুলো থেকে কিনতে পারেন তাদের নতুন পছন্দের কাপড়। ফলে শীত এলে কিছু স্বল্প পূঁজির ব্যবসায়ী কাপড় বিক্রি করে পরিবারে নিয়ে আসেন সচ্ছলতা।
এ সময় বৃদ্ধি পায় পুরাতন কাপড়ের চাহিদা পাশাপাশি নিম্ন আর খেটে খাওয়া মানুষ তাদের সাধ্যের মধ্যে কিনতে পারেন এসব কাপড়।
আরও পড়ুন : চাঁদপুরে শিক্ষার্থীদের টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন
কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবওহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগার কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, দিনে দিনে তাপমাত্রা আরও কমতে থাকবে এবং ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এ জেলার উপর দিয়ে একটি শৈত্য প্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
ওডি/এসএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড