• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ধর্ষণ মামলার আসামি এখন মাদরাসার সভাপতি

  মো. রুম্মান হাওলাদার, পিরোজপুর

১৪ নভেম্বর ২০২১, ০৯:৪৩
মঠবাড়িয়া
মাদরাসা (ছবি : অধিকার)

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার মধ্য দেবত্র এন এস দাখিল মাদরাসার সভাপতি ইলিয়াস খানের বিরুদ্ধে একাধিক নারী কেলেঙ্কারিসহ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ইলিয়াস খান মঠবাড়িয়া উপজেলার দাউদখালী ইউনিয়নের ৩ নম্ব র ওয়ার্ড দেবত্র গ্রামের মৃত হাবিবুল ইসলামের ছেলে।

জানা গেছে, ২০২০ সালে মধ্য দেবত্র এন এস দাখিল মাদরাসার নবসৃষ্ট পদে একজন করে সহকারী গ্রন্থাগারিক কাম কম্পিউটার, নিরাপত্তাকর্মী ও আয়া আবশ্যক হয়। বিষয়টি অবগত হয়ে নিয়োগ বানিজ্যের একটি চক্র তাদের পছন্দের লোককে সভাপতি বানাতে সক্রিয় হয়ে ওঠে। অবশেষে ওই চক্রটি আধিপত্য ও প্রভাব খাটিয়ে স্থানীয় ধর্ষণ মামলার আসামি ইলিয়াস খানকে সভাপতির চেয়ারে বসায়।

ইলিয়াস খান ২০২০ সালের ৩০ জুন সিলেকশনে সভাপতি হয়ে ওই তিনটি পদে নিয়োগের জন্য ম্যানেজিং কমিটির মিটিং ডেকে রেজুলেশন করেন। ২০২০ সালের ৩ ডিসেম্বর দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। এরপর একাই একশ হয়ে যান সভাপতি।

পছন্দের প্রার্থীর আবেদন নিয়ে তাকে তার পরিচিত ও আত্মীয় স্বজনের মধ্য থেকে আরও তিনটি আবেদন গোপনে জমা দিতে বলেন। এরপর সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে নিয়োগ বোর্ড গঠনের অনুমোদন পেয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম ভুঁইয়ার যোগসাজশে অতিগোপনে ও সুকৌশলে ওই তিনটি পদে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ সম্পন্ন করেন। মঠবাড়িয়া উপজেলার বাইরে অন্য কোন একটি উপজেলায় ডিজির প্রতিনিধিকে ঢাকা থেকে তড়িঘড়ি করে হেলিকপ্টারযোগে নিয়োগ বোর্ডে আনা হয়।

নিয়োগপ্রাপ্ত তিনজনই ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার। নিয়োগের ৬ মাস পর বিষয়টি জানাজানি হলে মাদরাসাটির দাতা সদস্য ও অভিভাবক সদস্যরা নড়েচড়ে বসে। শুরু হয় গোপন নিয়োগ ও নিয়োগ বানিজ্যের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দফতরে অভিযোগ ও মানববন্ধন।

নিয়োগ বানিজ্যের মূল হোতা মাদরাসার সভাপতি ইলিয়াস খানের কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। কল রেকর্ডে নিয়োগ বানিজ্য ও একাধিক নারীকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ চেষ্টাও প্রকাশ পেয়েছে।

মাদরাসার সভাপতি ইলিয়াস খানের বিরুদ্ধে মঠবাড়িয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। দেবত্র এলাকার রাবেয়া নামে এক নারী ধর্ষণের শিকার হয়ে ১১/০৬/২০২০ খ্রি. তারিখ মামলাটি দায়ের করেন। ধর্ষণের ঘটনার ১৯ দিন পরেই ধর্ষণ মামলার একমাত্র আসামি ইলিয়াস খান মাদরাসার সভাপতি সিলেকশন হন।

এ ব্যাপারে মাদরাসার সভাপতি ইলিয়াস খান বলেন, নিয়োগে কোন অনিয়ম হয়নি। সরকারি বিধি মোতাবেক নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা ধর্ষণ মামলাটি মিথ্যা ও হয়রানিমূলক।

নিয়োগ প্রক্রিয়া গোপনে কোথায় বসে সম্পন্ন করা হয়েছে তা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন মাদরাসার সুপার মাও. মো. এনামুল হক। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে আমি বাধ্য নই। আমি একজন ভারপ্রাপ্ত সুপার। আমার সাথে কথা বললে আগে অনুমতি নিতে হবে।

এ ব্যাপারে মাদরাসার শিক্ষা অধিদফতরের পরিদর্শক (বরিশাল বিভাগ) শহীদ লতীফ জানান, নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর ওই নিয়োগ ম্যানেজিং কমিটির মিটিংয়ে অনুমোদন হতে হবে। ম্যানেজিং কমিটির মিটিংয়ে অনুমোদন না হলে নিয়োগ অবৈধ বলে গণ্য হবে। গোপনে নিয়োগ দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট অধিদফতর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে।

ওডি/এফই

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড