• রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ইঁদুরের উৎপাতে দিশেহারা কৃষক

  ওবায়দুল কবির সম্রাট, কয়রা (খুলনা)

০২ নভেম্বর ২০২১, ১১:৫৮
ইঁদুরের উৎপাতে দিশেহারা কৃষক
ছবি : সংগৃহীত

খুলনার কয়রা উপজেলা কৃষি বিভাগে প্রতি বছরের মতো এবারও ১১ অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত মাসব্যাপী ইঁদুর নিধন অভিযান শুরু করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত একটি ইঁদুরও ধরতে পারেননি তারা। এই অভিযান কাগজে-কলমে থাকলেও মাঠ পর্যায়ে বাস্তবে তার অস্তিত্ব নেই বলে অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। বর্তমানে উপজেলায় ইঁদুরের উৎপাতে দিশেহারা কৃষক।

সোমবার ২৫ অক্টোবর উপজেলা পরিষদ চত্বরে আলোচনা সভার মধ্যে দিয়ে অভিযানের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিমেষ বিশ্বাস। কিন্তু এই ইঁদুর নিধন কার্যক্রমের অভিযান শুধু উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে। ইঁদুর নিধন অভিযান বাস্তবে কখনও হয়নি, তেমনি কোথাও কোনো কৃষকের কাছে বিতরণ করা হয়নি ইঁদুর নিধনের ফাঁদ ও ওষুধ।

অভিযানের মাসে সুনির্দিষ্ট কোনো এলাকায় ইঁদুর নিধন করতেও কেউ দেখেননি। উপজেলার আমাদী, বাগালী, মহারাজপুর, মহেশ্বরীপর, কয়রা সদর, উত্তর বেদকাশী, দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের প্রায় সব এলাকাতেই ইঁদুরের উৎপাত দেখা দিয়েছে। মাঠের পর মাঠ ধান ইঁদুরে কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে। কৃষকরা বিভিন্ন ধরনের ওষুধ প্রয়োগ থেকে শুরু করে নানা পদক্ষেপ নিলেও ইঁদুর নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। কৃষকরা বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করে ইঁদুর দমনের চেষ্টা করছেন, কিন্তু আদতে কোনো কাজে আসছে না এসব চেষ্টা। এতে ধানের ফলনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন তারা।

আমাদীর কৃষক আয়ুব মোড়ল বলেন, গত মৌসুমে ধানের দাম ভাল পাওয়ায় এবারও এ মৌসুমে ধান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠি। কিন্তু ইঁদুর আমার ৪ বিঘা জমির ধান গাছ কেটে শেষ করে দিচ্ছে।

তিনি বলেন, যে যা বলছে সে মোতাবেক ওষুধ দিচ্ছি। তাতেও কোনো কাজে আসছে না। পলিথিন বেঁধে দিয়েছি তাতেও কোনো ফল পাইনি। ধানের বাপ্পার ফলন হতো, কিন্তু ইঁদুরের যে ভাবে উৎপাত বেড়েছে তাতে আশা ছেড়ে দিয়েছি।

উত্তর বেদকাশীর কৃষক রমেশ জানান, ইঁদুর তার আমন ধানও নষ্ট করতে শুরু করেছে। এবার আমন ধানের চাষ যারা করছেন, তাদের ক্ষতি হয়েছে বেশি। তিনি বলেন, শুধু আমি না উপজেলায় যত কৃষক আছেন, প্রত্যেকই ইঁদুরে উৎপাতে কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কৃষক ইঁদুর দমন অভিযানকে হাস্যকর বলে মন্তব্য করে বলেন, উপজেলা চত্বরে ব্যানার করে আলোচনা সভা করে কাগজ কলমে ইঁদুর নিধন অভিযান করলে মাঠের ইঁদুর যাবে না। এ জন্য কৃষককে আর্থিকভাবে অথবা প্রয়োজনীয় উপকরণ দিয়ে প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে। ইঁদুর নিধনের উপকরণ বিতরণে সরকারী কোনো বরাদ্ধ না থাকায় শুধু পরামর্শে এ অভিযান চলছে বলে স্বীকার করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।

আরও পড়ুন : ফুলতলায় জমে উঠেছে ৪ ইউপির নির্বাচনী মাঠ

উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অনুতাম সরকার বলেন, প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। ফসলেন বর্তমান অবস্থা ভাল। কোথাও কোথাও ইঁদুরের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। আমরা কৃষকের পরামর্শ দেয়া অব্যাহত রেখেছি। মাস ব্যাপী ইঁদুর নিধন অভিযান বিষয়ে বলেন, ইঁদুর নিধনে কৃষকের সরকারীভাবে তেমন কোনো বরাদ্ধ দেইনি। প্রতিবছর ইঁদুর নিধনের জন্য সরকারীভাবে ৪ হাজার টাকা বরাদ্ধ পাওয়া যায়। এতে কৃষককে উপকরণ দেওয়া সম্ভব নয়। তাই কৃষককে ইঁদুর দমন বিষয়ে নিয়মিত পরামর্শে দিয়ে যাচ্ছি।

ওডি/ এসএ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড