• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

অনিয়মের ভারে ন্যুব্জ রাজাপুর ফাজিল মাদরাসা

  ঝালকাঠি প্রতিনিধি

০১ নভেম্বর ২০২১, ১৫:৫০
রাজাপুর ফাজিল মাদরাসা (ছবি : অধিকার)

ঝালকাঠির ঐতিহ্যবাহী রাজাপুর ফাজিল মাদরাসায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বাণিজ্যের পাঁয়তারা করার অভিযোগ উঠেছে। নিয়োগ বাণিজ্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগে বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড ও মাদরাসা অধিদফতরসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

২০১৭ সালে গঠিত কমিটির অধীনে নিয়োগের বিষয়ে মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবরে গত ২১ অক্টোবর লিখিত অভিযোগ করেন মাদরাসায় পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে আবেদনকারী মো. মাসুম নামের এক প্রার্থী। এছাড়াও পরিদর্শক ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বরাবরে একই বিষয়ে মাদরাসাটির উপাধ্যক্ষ মো. জাকির হোসাইন আরও একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।

এ ঘটনায় এলাকাবাসীসহ বিভিন্ন মহলে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সুরক্ষায় কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

জানা গেছে, ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে অনিয়ম-দুর্নীতি, প্রভাব বিস্তার ও ক্ষমতার অপব্যবহার ব্যাপকভাবে জেঁকে বসেছে। প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ পদে মাওলানা আসাদুজ্জামান গত ৩১ জানুয়ারি ২০১৯ সালে অবসরে গেলে পদটি শুন্য হয়। এরপর নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ম্যানেজিং কমিটি। অধ্যক্ষসহ কম্পিউটার অপারেটর ও আয়া পদে ১ জন করে মোট ৩ পদে ৩ জন লোক নেওয়ার জন্য বিভিন্ন পত্রিকায় ০৯-০৬-২০২০, ২০-০৬-২১, ০১-০৮-২০২১ ও ০৫-১০-২০২১ তারিখে আলাদা আলাদা বিজ্ঞপ্তি দেয় মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। পরিকল্পিতভাবে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ প্রত্যাশীর আত্মীয় ও বন্ধু মিলিয়ে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি প্যানেল তৈরি করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের নেতৃত্বে মাদরাসা পরিচালনা কমিটি এ নিয়োগের পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সরকারি বিধান মতে, মাদরাসার বর্তমান কমিটির সভাপতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামাল হোসেন সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর আজ পর্যন্ত সদস্যদের উপস্থিতিতে একটি মিটিংও করেননি মাদরাসা সংশ্লিষ্টরা। অপরদিকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের চাকরির মেয়াদ কয়েক মাস থাকায় তিনি দুর্নীতির অভিপ্রায়ে ষড়যন্ত্র করে সভাপতিকে ভুল বুঝিয়ে পদ্ধতিগতভাবে দুর্নীতিকে নীতি হিসেবে গ্রহণ করে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে নিচ্ছেন। এদিকে ২০১৭ সালের ২২ নভেম্বর অনুমোদিত চলমান কমিটির অভিভাবক সদস্য হিসেবে আছেন স্থানীয় মাহাবুবুর রহমান ও আ. রাজ্জাক, অথচ তারা মাদরাসাটির কোনো শিক্ষার্থীর অভিভাবক নন। অপর এক স্থানীয় লুৎফুর রহমানকে ম্যানেজিং কমিটির দাতা সদস্য হিসেবে দেখানো হলেও তিনি অত্র প্রতিষ্ঠানে নিজে কোনো জমি বা নগদ অর্থ দান করেননি। সাবেক অধ্যক্ষ ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের অত্যন্ত আস্থাভাজন হওয়ায় তাকে ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি হিসেবে রাখা হয়েছে। এছাড়াও একজন শিক্ষক প্রতিনিধি আবুল কালামের মৃত্যু হওয়ায় পদটি শুন্য রয়েছে।

আরও পড়ুন : একই ওয়ার্ডে মা-মেয়ের ভোটযুদ্ধ

এছাড়াও তিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদবি ব্যবহার করে নানা অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতামূলক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছেন। এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি এখন দুর্নীতির ভারে ন্যুব্জ হয়ে পড়েছে। তবে মাদরাসাটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মো. নুরুজ্জামান তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিধি সম্মতভাবে সভায় সবার সম্মতিতে এ নিয়োগ কার্যক্রমের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সে লক্ষ্যে সব প্রস্তুতি চলছে, এককভাবে আমি কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। আমার বিরুদ্ধে তদন্তে এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে মেনে নেব।

ওডি/এএম

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড