• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

১৪ বছর ধরে উল্টে আছে সেতু, সংস্কারের নেই কোনো উদ্যোগ

  শাকিল মুরাদ, শেরপুর

১৭ অক্টোবর ২০২১, ২১:২২
অবহেলিত সেতু (ছবি : অধিকার)

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার ঘাগড়া কবিরাজপাড়া খালের পাড় সেতুটি উল্টে আছ ১৪ বছর ধরে। অথচ সংস্কারের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ। স্থানীয়রা বারবার জনপ্রতিনিধি ও এলজিইডিকে জানিয়েও সমাধান পায়নি। এ জন্য বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে ১০ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষকে। তাই স্থানীয়রা সেতুটি পুনঃনির্মাণের দাবি তুলেছেন।

জানা যায়, ২০০৭ সালে ঘাগড়া কবিরাজপাড়া খালের পাড়ে প্রায় ৪০ ফুট লম্বা একটি সেতু নির্মাণ করে এলজিইডি। কিন্তু নির্মাণের কয়েক মাস যেতে না যেতেই পাহাড়ি ঢলে সংযোগ সড়কের মাটি সড়ে গিয়ে খালের পাড় সেতুটি ধ্বসে খালের পানির মাঝখানে পড়ে যায়। এরপর ১৪ বছর পেরিয়ে গেলেও সেতুটি আর পুনঃনির্মাণ করা হয়নি। পরে স্থানীয়রা ওই সেতুর উপর একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করে যাতায়াত শুরু করেন। কিন্তু বারবার তা পাহাড়ি ঢলে ভেঙে যায়। এ জন্য প্রতিবছর একটি করে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে পারাপার হচ্ছেন। সেতুটি না থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কবিরাজ পাড়া, পটলপাড়া, মন্ডল পাড়া, সরকার পাড়া, শাকপাড়া, মাছপাড়া, তলতলাসহ ১০ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষের।

কবিরাজপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হায়দর আলী বলেন, ‘ভাই আমরা মেম্বার চেয়ারম্যানদেরকে বলছি ব্রিজটি ঠিক করার জন্য। কিন্তু কেউ কথা শুনে নাই। এখন পর্যন্ত এভাবেই আছে। আমরা বিভিন্ন সময় সাঁকো বানিয়ে চলাচল করলেও বারবার তা ভেঙে যায়। এখন আবার সাঁকোটি নড়েবড়ে হয়ে গেছে, কবে যে ভেঙে পানিতে যায় চিন্তায় আছি।’

ওই গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘কয়দিন আগে একজন গরীব মানুষ মাছ নিয়ে সাঁকো পার হতে গিয়ে পানিতে পড়ে গেছিল। পরে আমরা তাকে পানি থেকে উদ্ধার করি। কিন্তু মাছগুলো পানিতে ভেসে যায়। আর গাড়ির ব্যাটারি নষ্ট হয়ে যায়। বেচারা খুব কান্নাকাটি করেছে।’

খালের পাশের বাসিন্দা রোজিনা খাতুন ও হালিম খাতুন জানান, বাঁশের সাঁকোতে অনেকেই উঠতে ভয় পায়। এ জন্য তাদের বাড়ির উঠান দিয়ে পানি পেরিয়ে পার হয়।

নূর মোহাম্মদ, ওদু মিয়া, আজাহার আলীসহ অনেকেই জানান, বিভিন্ন জায়গায় জানিয়েও কোনো সমাধান পাননি তারা। পাহাড়ি ঢলে ভেঙে যায় সাঁকো। এ জন্য প্রতিবছর একটি করে সাঁকো নির্মাণ করেন এলাকাবাসী। এই সাঁকো দিয়ে কৃষিপণ্য ও গবাদি পশু পারাপারে কৃষকদের খুব ঝামেলায় পড়তে হয় বলে জানান তারা।

পটলপাড়ার বাসিন্দা রমজান আলী বলেন, ‘আমার ছেলে খালের ওই পাড়ের স্কুলে পড়ে। কয়দিন আগে সাঁকো পার হতে গিয়ে পড়ে গেছিল। পরে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করি। আমার ছেলের মতো মাঝেমধ্যেই এমন ঘটনা ওইখানে ঘটে। তাই ব্রিজটি হলে আমাদের জন্য অনেক ভালো হবে।’

ঝিনাইগাতী উপজেলা প্রকৌশলী মো. মোজাম্মেল হক বলেন, ‘ওইখানে ব্রিজের এমন অবস্থা এটা আমার জানা নেই। আপনার মাধ্যমে জানলাম। আমি শীঘ্রই পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যে নির্দেশনা দিবেন সেটা আমি যথাযথ বাস্তবায়ন করব।’

আরও পড়ুন : কুড়িগ্রামে কৃষি ঋণে ধীরগতি

ওই সেতু নির্মাণে কত টাকা খরচ হয়েছে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এমন কোনো তথ্য আমার কাছে নেই। কারণ ওইটা অনেকদিন আগের কথা।’

ওডি/এএম

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড