• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বাঁশের সাঁকোই ৪০ হাজার মানুষের একমাত্র ভরসা

  মাহফুজ আলম প্রিন্স, রংপুর

১৪ অক্টোবর ২০২১, ১৫:৫১
বাঁশের সাঁকো
বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছেন স্থানীয়রা। ছবি : অধিকার

রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলার ১২টি গ্রামের মানুষের পারাপারের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। বর্ষা এলেই বাড়ে দুর্ভোগ। স্কুল-কলেজের ছেলে-মেয়েরাও চরম ভোগান্তিতে পড়ে। ঝড়বৃষ্টিতে বাঁশের সাঁকোটি দিয়ে পারাপার আরও বিপজ্জনক হয়ে পড়ে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ- জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন আসলে নেতাকর্মীদের মুখে শুধু কথার ফুলঝুরি ফোটে। নির্বাচন শেষ হলে তাদের আর সাক্ষাৎ মিলে না। বছরের পর বছর শুধুই আশ্বাস আর আশ্বাস।

বলছি, পীরগাছা উপজেলার নব্দীগঞ্জের আলাইকুড়ি খালের ওপর নির্মিত বাঁশের সাঁকোটির কথা। একটি সেতু নির্মাণের অভাবে এলাকাবাসীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বাঁশের সাঁকোটি দিয়ে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করছেন। তবে কবে নাগাদ এখানে একটি ব্রিজ হবে, তা কেউই জানেন না।

সম্প্রতি সরেজমিনে নব্দীগঞ্জের বাঁশের সাঁকোটি পরিদর্শনে গেলে জানা যায়, উপজেলার ১২টি গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণের। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিসহ সরকারের উচ্চ মহলে এ নিয়ে বারবার ধর্না দিয়ে আশ্বাস মিললেও সেতু বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। নানা জটিলতার কারণে গত তিন বছর ধরে ভোগান্তিতে রয়েছে হাজার মানুষ।

স্থানীয় বাসিন্দা আল আমিন জানান, এই খালের দুই পাড়ে রয়েছে স্কুল-মাদরাসাসহ হাট-বাজার এবং কমিউনিটি ক্লিনিক। ফলে প্রতিদিনই এই সাঁকো দিয়ে পাড় হতে হয় কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ হাজারও মানুষদের। অনেক সময় এই সাঁকো দিয়ে পাড় হতে গিয়ে দুর্ঘটনাও ঘটে।

দুধ বিক্রেতা আব্দুল মতিন বলেন, ‘ভাই আমি গরিব মানুষ। দুধ বিক্রি করে চলে আমার সংসার। এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন দুধ নিয়ে বাজারে যেতে হয় আমাকে। প্রায় চার থেকে পাঁচ দিন এই সাঁকো পারাপারের সময় দুধসহ নিচে পড়ে গিয়েছি।’

এ দিকে, ‘স্থানীয় বাসিন্দা আফসার আলী (৫৫) দৈনিক অধিকারকে বলেন, আমাদের এই গ্রামের দিকে কেউ দেখে না। আমরা কি ভোট দেই নাই? আমরা কি রোহিঙ্গা? আমাদের ১২ গ্রামে প্রায় ৪০ হাজার মানুষের বসবাস। বাবা আপনাদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমাদের আকুল আবেদন, যেন আমাদের জন্য এই ব্রিজটি করে দেয়।’

অপর বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা মেম্বার, চেয়ারম্যানকে বলছি আমাদের এই ব্রিজটা করে দেন। কিন্তু তারা কিছুই করে না। আমরা সবাই মিলে বাঁশের সাঁকো বানাইছি। এখন এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হইতে অনেক কষ্ট হচ্ছে।’

এ দিকে, কল্যানী ইউনিয়নের এক বয়োজ্যেষ্ঠ জানান, এখানে তিন বছর আগে পাকা সেতু ছিল। সেটি ভেঙে নতুন সেতু করার কথা বলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মিঠু কনস্ট্রাকশন এসে কাজও শুরু করে। কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যে পুরাতন রড-ইট বিক্রি করে চলে যায়। আর আসে নাই। সেতুর ওপারে অনেক গরুর খামার আছে। তারা ৫ কিলোমিটার ঘুরে ওই রাস্তা দিয়ে শহরে প্রবেশ করে। ফলে সেতু না থাকায় উৎপাদিত পণ্য পারাপারে সময়মতো বাজারে পৌঁছানোও দুরূহ হয়ে উঠে।’

আরও পড়ুন : সুনামগঞ্জে মোটরবাইক দুর্ঘটনায় যুবক নিহত

বিষয়টিতে ১ নম্বর কল্যানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আলম মিয়া দৈনিক অধিকারকে বলেন, এই ব্রিজের জন্য টেন্ডার হয়েছিল। ঠিকাদার সাহেব কাজ করার জন্য তার মালামাল নিয়ে এসেছিল। পড়ে আলাইকুড়ি খাল না নদী এবং ব্রিজ বর্ধিত করা জটিলতার কারণে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরে আবারও নতুন করে প্রকল্প অনুমোদন হয়ে আসলে আগামী দুই তিন মাসের মধ্যে সেতুর কাজ শুরু হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

ওডি/নিলয়

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড