শেখ শান্ত ইসলাম, খুলনা
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) আউট সোর্সিং (বহিরাগত) শ্রমিকদের ভুয়া হাজিরাসহ বেতনের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। গঠিত হয়েছে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি।
বুধবার (১৩ অক্টোবর) এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন কেসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. আজমুল হক।
গঠিত তদন্ত টিমের সদস্যরা হলেন- প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেন, বাজেট-কাম-একাউন্ট অফিসার এম এম হাফিজুর রহমান ও ভেটেরিনারি অফিসার ডা. রেজাউল করিম।
কেসিসির সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হাফিজুর রহমানের মূলপদ ট্রাক শ্রমিক। বর্তমানে তিনি আউট সোর্সিং শ্রমিকদের সুপারভাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার বিরুদ্ধে শতাধিক আউট সোর্সিং শ্রমিকের বেতনের টাকা কম দেয়া, ভুয়া হাজিরা দেওয়া, কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া শ্রমিকদের হাজিরা টিপ সই নেয়াসহ নানা অভিযোগে তাকে গত ৯ মে শোকজ করা হয়। তিনি ১৬ মে শোকজের জবাব দেন। জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় গত ২৭মে সংস্থাটির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজিবুল আলমকে অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব দেন সংস্থাটির কর্তৃপক্ষ।
প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে শ্রমিকদের স্বাক্ষর ব্যতীত টিপসই নিয়ে বিল প্রদান করা হয়েছে। এতে শ্রমিকদের বেতন কারচুপি করে নিজে (হাফিজুর) আত্মসাৎ করেছেন। গত ১৭ জুন এ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে গত ৩১ আগস্ট হাফিজুরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের হয়।
এ মামলা দায়েরের পর হাফিজুর গত ১৫ সেপ্টেম্বর জবাব দাখিল করেন। তারই প্রেক্ষিতে নতুন করে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সংস্থাটি।
কেসিসির ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রধান মো. আজমুল হক বলেন, প্রাথমিক তদন্তে হাফিজুরের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এখন চূড়ান্ত প্রতিবেদনের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ রিপোর্টে সে দোষী সাব্যস্ত হলে তবে বিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অন্যদিকে তার স্ত্রী বিউটি বেগম কেসিসির মাস্টাররোল ঝাড়ুদার শ্রমিক। ২০নং ওয়ার্ডে তার ঝাড়ু দেয়ার দায়িত্ব থাকলেও তিনি বর্তমানে দেন না। তার পরিবর্তে অন্য একজন আউট সোর্সিং শ্রমিককে দিয়ে ঝাড়ুর কাজটি করানো হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া চার মাসের বেতন না পেয়ে আন্দোলনে নামেন আউট সোর্সিং শ্রমিকরা। বিষয়টি জানার পর তাদের বেতনের ব্যবস্থা করে দেন সিটি মেয়র।
উল্লেখ, শ্রমিকদের দৈনিক হাজিরা চারশ’ টাকা হলেও তাদের হাজিরায় দেয়া হয় ৩৫০ টাকা করে। অন্যদিকে ১৮নম্বর ওয়ার্ডে আউট সোর্সিং শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন হাফিজুরের কলেজ পড়ুয়া ২১ বছরের ছেলে। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তার নিজ প্যাডে কাজ করার অনুমতি দিয়েছেন বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সুপারভাইজার হাফিজুর রহমান।
তিনি আরও বলেন, আমার স্ত্রী অসুস্থ। এজন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে অন্য লোক দিয়ে ঝাড়ুদারের কাজ করানো হয়েছে। এখন সুস্থ হয়ে তিনি (স্ত্রী) নিয়মিত ডিউটি পালন করছেন বলে দাবি তার।
আরও পড়ুন : টেকনাফ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করলেন : সাবেক এমপি বদি
তিনি বলেন, কোন টাকা আত্মসাৎ করা হয়নি। সিস্টেমে ভুল। শ্রমিকদের হাজিরা টিপসই অনেক আগ থেকে নেয়া হয়েছে। তখন কোন কর্মকর্তা এ ব্যাপারে আপত্তি করেননি। এখন করলে তার কিছু করার নেই বলেও তিনি দাবি করেন।
ওডি/এসএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড