শেখ শান্ত ইসলাম, খুলনা
দীর্ঘদিন ধরেই সংস্কারের অভাবে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছিল খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এম এ বারী লিঙ্ক রোডে। বাসস্ট্যান্ড থেকে জয়বাংলা মোড় পর্যন্ত সড়কটির প্রায় তিন কিলোমিটার অসংখ্য খানাখন্দে ভরা। দীর্ঘদিন সেবাদাতা সংস্থাগুলোর কাছে ধর্না দিয়েও কোনো কাজ না হওয়ায় এবার ব্যক্তিগত উদ্যোগে সংস্কারকাজ শুরু করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা।
বুধবার (১৩ অক্টোবর) সকাল ৬টা থেকে সড়কটির সংস্কারকাজ শুরু হয়। নগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ও নগর ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ শাহাজালাল হোসেন সুজন এই কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এম এ বারী লিঙ্ক রোড মহানগরীর একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এই পথ দিয়ে প্রতিনিয়ত বাস-ট্রাকসহ অসংখ্য যানবাহন প্রবেশ করে। এ ছাড়া সড়কের দুই ধারে অন্তত তিনশত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তবে সড়কটির বিভিন্ন অংশ ভাঙা ও খানাখন্দে ভর্তি থাকায় ক্রেতাসাধারণ সড়কটিতে প্রবেশ করতে চান না। এতে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। অনেকে বিনিয়োগ করেও সর্বস্বান্ত হয়ে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন।
এ দিকে, দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছিল। বর্ষার কাদাপানি জমে গর্ত ও খানাখন্দ দিন দিন বড় হচ্ছিল। প্রায়দিনই রাস্তাটি নিয়ে বিপাকে পড়েন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পথচারীরা। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় হাঁটু পর্যন্ত কাদা জমে। তখন যানবাহন তো দূরের কথা, হেঁটে চলাচলও বিপজ্জনক হয়ে পড়ে। যা প্রতিনিয়ত জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে। অবশেষে নিজেরা ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে ও স্থানীয়দের চলাচলের সুবিধার্থে সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা আরও জানান, বুধবার সকালে বাসস্ট্যান্ড থেকে ময়ূর ব্রিজ পর্যন্ত ৭৮০ মিটার সড়ক সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। যা চলবে বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) পর্যন্ত। এই দুই দিনে সড়কটিতে ইট-বালু, সরকি দিয়ে খানা-খন্দ ভরাট করে জনগণ ও যানবাহনের চলাচলের উপযোগী করা হবে। যাতে স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা অন্তত কিছুদিন চলাচলের সুবিধা পান। পরবর্তীতে অবস্থা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওই রোডের ব্যবসায়ী ও তাকবীর মটরস্ এর পরিচালক সুমন আহমেদ বলেন, বারবার ধর্না দিয়েও কর্তৃপক্ষ সড়কটি সংস্কারের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। এতে আমাদের ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। ক্রেতা সাধারণ এই রোডে আসতে চান না। এবার নিজেদের সমস্যা দূরীকরণে ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেরাই এগিয়ে এসেছেন। এটি আসলেই প্রশংসনীয়।
এ দিকে, কামরুল এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. কামরুজ্জামান বলেন, এই রোড সংস্কারের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছি। ক্রেতারা এই রোডে না আসায় ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে ইতোমধ্যে একটি দোকান ছেড়ে দিছি। কেসিসি-কেডিএকে জানিয়েও কোনো কাজ না হওয়ায় অবশেষে ব্যবসায়ীরা সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।
আরও পড়ুন : দুই দিক থেকে বন্ধ স্কুলের সড়ক
উল্লেখ্য, সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল সংলগ্ন বাইপাস সংযোগ সড়ক নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০১৩ সালের ৩০ জুন। কাজ শেষ হওয়ার কিছুদিন পর খুলনা সিটি করপোরেশন ও এলজিইডিকে সড়কটি হস্তান্তর করে কেডিএ (খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ)। সড়কটির মহানগর অংশ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) এবং বাকি অংশ এলজিইডির। কিন্তু কাজটি নিম্নমানের দাবি করে প্রথম থেকেই রক্ষণাবেক্ষণে আপত্তি জানিয়ে আসছে কেসিসি। সেই থেকে কেসিসি-কেডিএ সমন্বয়হীনতার কারণে সড়কটি সংস্কারের অভাবে পড়ে আছে। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছিলেন হাজার হাজার পথচারী, স্থানীয় বাসিন্দারা।
ওডি/নিলয়
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড