কবির হোসেন, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল)
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের নিকরাইলে সরকারি খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষের পাঁয়তারায় মেতে উঠেছে একটি মহল। এতে খালের উজানের দিকে প্রায় ১৫শ একর তিন ফসলি আবাদি জমিতে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সম্প্রতি রোপা আমন রোপণ করতে পারছে না চাষিরা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে ৫ জন আহত হয়েছে।
ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জানা যায়, উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়নের নিকরাইল বাজার সংলগ্ন খাল হতে ধলেশ্বরী নদী পর্যন্ত সরকারি খালটি এলাকার পানি নিষ্কাশনের ব্যাপক ভূমিকা রাখে।
কিন্তু এপ্রিল মাসে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের অন্তর্ভুক্ত সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান শাকিলের স্বজনরা মাছ চাষের জন্য নিকরাইল বাজার সংলগ্ন ব্রিজের নিচে বাঁধ দিয়ে খালটি বন্ধ করে দেয়।
এদিকে, এসব ফসলি জমিতে রোপা আমন চাষের জন্য এবং জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য খালের বাঁধ কেটে দেয়াকে কেন্দ্র করে গেল শনিবার (৯ অক্টোবর) এলাকাবাসী এবং ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের স্বজনদের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ৫ জন আহত হয়েছে।
এর মধ্যে ৩ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আহতরা হলেন- নিকরাইল গ্রামের জুড়ান আলী ছেলে হামিদুল, সোহেল রানা ও শহিদুল।
অন্যদিকে, এলাকার ভুক্তভোগীরা স্থানীয়ভাবে দফায় দফায় বৈঠক করে সুরাহা না পেয়ে (৩ মে) ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর খালের ওপর ব্রিজের মুখটি কেটে দেওয়ার জন্য একটি লিখিত আবেদন করেন।
কিন্তু এতেও কোনো ফল না পেয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব বরাবর দুই শতাধিক ভুক্তভোগীদের স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগটি আমলে নিয়ে ২ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক বরাবর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি দেয়া হয়।
চিঠিতে ১৩ সেপ্টেম্বর উভয় পক্ষদ্বয়কে নিয়ে তদন্তের দিন নির্ধারিত ছিল। সেখানে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে তদন্ত হলেও ভুক্তভোগীরা কোনো ফল পায়নি বলে অভিযোগ করেন।
অপরদিকে, ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের স্বজনরা খালের ওপর ব্রিজের মুখ থেকে প্রায় ২শ মিটার দূরে পাকা রাস্তা কেটে আবাদি জমির ওপর দিয়ে পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা করে। এতে স্থানীয়রা বাধা দিলে দফায় দফায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ফলে যে কোনো মুহূর্তে ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব জানান, সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান মতিন সরকার জানান, পূর্বের ব্রিজটি অকার্যকর হওয়ায় নতুন কালভার্টের জন্য আবেদন করেছি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পেয়েছি এবং নতুন একটি ব্রিজ করার জন্য ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করেছি। তারা রাস্তা কাটতে পারে তবে মারামারির বিষয় আমি কিছু জানিনা। আগের ব্রিজটি সচল করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল ওহাব জানান, আমরা জানতে পারি নিকরাইল প্রাথমিক বিদ্যালয় এর পশ্চিম পাশে ব্রিজ বন্ধ করা এবং নতুন কালভার্ট তৈরির উদ্দেশ্য রাস্তা কাটা নিয়ে দুই পক্ষের ঝামেলা চলছে সাথে সাথে এস আই জুয়েলের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম পাঠাই পুলিশের উপস্থিতিতে দুপক্ষ সটকে পরে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তবে এ ব্যপারে কোনো পক্ষ লিখিত অভিযোগ করেনি অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
আরও পড়ুন : গাইবান্ধায় মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন
ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইশরাত জাহান জানান, ঘটনাটি মাধ্যমে জানতে পারলাম। আমি এখনো সরেজমিনে পরিদর্শন করিনি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিদর্শনা দিয়েছি তারা সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ওডি/এসএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড