শেরপুর প্রতিনিধি
শিবলু হাসান শিপুল। বয়স খুব বেশি হলে ১৬। পড়ে তাতিহাটি আইডিয়াল স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের দশম শ্রেণিতে। শিপুলের এক হাতে পরিবার চালানোর ভার, অন্য হাতে বই। বাবা-মাকে নিয়ে সংগ্রামী জীবন চলছে তার। পরিবারের দেখভালের পাশাপাশি নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে এখনো পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে সে। বলছি শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার কলাকান্দা গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে শিপুলের কথা। বাবা পেশায় দিনমজুর। মা শিফা বেগম গৃহিনী।
শিপুল জানায়, আর্থিক অভাব-অনটনের মধ্যেও সে উপজেলার পিমরোজ মডেল স্কুল থেকে পিএসসিতে গোল্ডেন পেয়েছে। এরপর সংসারে অভাবের কারণে একবেলা চায়ের দোকানে কাজ করে দি হলি চাইল্ড প্রি-ক্যাডেট থেকে জেএসসিতে ৩.৭১ নিয়ে সুনামের সঙ্গে কৃতকার্য হয়।
শিপুল আরও জানায়, তার ইচ্ছা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। কিন্তু এখনই পড়াশোনা চলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তার। স্কুল শেষ করে অর্ধেক বেলায় গরম চায়ের কেতলি নিয়ে দোকানে পড়ে থাকতে হয় তাকে। আর তাই কেতলিতেই আটকে আছে শিপুলের স্বপ্ন।
দিনমজুর শিপলুর বাবা নজরুল ইসলাম জানান, শিপলুর মা শারীরিকভাবে অক্ষম, এ জন্য বাড়িতেই থাকেন। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে সবার বড় শিপলু। তাই সংসারের চাকা ঘুরাতে বাধ্য হয়েই শিপলুকে চায়ের দোকানে কাজ করতে দিয়েছেন বাবা।
তার মা শিফা বেগম বলেন, আমরা গরীব মানুষ। আমাদের টাকাপয়সা নাই। তাই আমার ছেলে স্কুল শেষে একবেলা চায়ের দোকানে কাজ করে। আর তা দিয়ে সংসারের কিছু ও তার পড়াশোনার জন্য খরচ করে। আমি সরকারের কাছে সহযোগিতা চাই, যাতে সে পড়াশোনা করে তার ইচ্ছা পূরণ করতে পারে।
স্থানীয় বাসিন্দা সাঈদ, রুবেল মাহমুদ, আব্দুল হাকিমসহ অনেকেই জানান, শিপুল সকালে স্কুলে যায়। স্কুল শেষে বাড়িতে না গিয়ে চায়ের দোকানে যায়। আর সেখানেই রাত ১০টা পর্যন্ত কেটে যায় তার গরম কেতলিতেই। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে চলছে তার জীবন। তাকে সহযোগিতা করার জন্য সকলের এগিয়ে আসা উচিৎ।
তাতিহাটি আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক নূরুজ্জামান বাদল বলেন, আসলে বিষয়টা আমাদের জানা ছিলো না। আপনাদের মাধ্যমে জানলাম। ওই শিক্ষার্থীর যাবতীয় খরচ বিদ্যালয়ের দরিদ্র ফান্ড থেকে বহন করা হবে।
আরও পড়ুন : মার্চের মধ্যে ৮০ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিলুফা আক্তার বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে পড়াশোনা করার জন্য সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। পাশাপাশি তার পরিবারকে সরকারি সুযোগ-সুবিধার আওতায় আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ওডি/এএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড