• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ধামইরহাটে কলেজ শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্ধ শতাধিক গাছ কাটার অভিযোগ

  মো. সাইফুল ইসলাম, ধামইরহাট, নওগাঁ

০৯ অক্টোবর ২০২১, ১৮:৪৩
গাছ
কেটে ফেলা নিম গাছের একটি টুকরো। ছবি : অধিকার

নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলায় মহিলা ডিগ্রী কলেজের গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে খোদ ওই কলেজের শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও সুধী মহল মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

এ দিকে, গাছ কাটার কথা স্বীকার করে অভিযুক্ত শিক্ষক বিষয়টি ধামাচাপা দিতেও মধ্যরাতে গোপন মিটিং ও বিভিন্ন মহলকে অনুরোধ করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। এমনকি ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল রাতের বেলায় গাছ চোর প্রভাষককে গেটের চাবি দিয়ে সহযোগিতা করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, ধামইরহাট মহিলা ডিগ্রী কলেজের চারপাশ প্রাচীরে ঘেরা থাকায় সম্প্রতি লোকচক্ষুর আড়ালে মহিলা ডিগ্রী কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক নাসির উদ্দিন কলেজ বাউন্ডারি সংলগ্ন আকাশমণি, নিম, বন কাঁঠালসহ বিভিন্ন গাছ কেটে স্থানীয় দুটি স-মিলে বিক্রয় করেছেন। পরে বিষয়টি কলেজের অন্যান্য শিক্ষক ও স্থানীয়দের মাঝে জানাজানি হলে শোরগোল পড়ে পুরো উপজেলায়।

এ দিকে, ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে শনিবার (৯ অক্টোবর) সকালে মহিলা ডিগ্রী কলেজে একদল সাংবাদিক গেলে সেখানে কাটা গাছের শেকড়ের অংশ দেখতে পাওয়া যায়। একই সাথে ঘটনা ধামাচাপা দিতে মাটি দিয়ে গাছের গোঁড়াগুলো ঢেকে দেওয়ার চেষ্টা করেন অভিযুক্ত শিক্ষক প্রভাষক নাসির উদ্দিন গং। পাশাপাশি নতুন করে আমের চারাও রোপণ করা হয়েছে। সুকৌশলে গাছ কাটার এই ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল ও সহকারী অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাকও জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে অভিযুক্ত রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।

কলেজে চাকরিরত এমএলএসএস আব্দুল ওয়াজেদ জানান, গত সপ্তাহে গাছের ডালপালা লাকড়ি হিসেবে ভ্যানযোগে অন্যত্র নাসির স্যার বিক্রয় করতে চাইলে আমি দরদাম করে ১ হাজার টাকায় ৩ ভ্যান লাকড়ি ক্রয় করেছি।

এ দিকে, ভাড়ায় চালানো স্থানীয় স-মিলের মালিক হারুনুর রশিদ বিদ্যুতের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ‘বিষয়টি আমি প্রথমে জানতাম না পরে শুনেছি।’ তবে স-মিলের মিস্ত্রি খালেক জানান, গত ৬ অক্টোবর ১৫টি আকাশমণি ও ৬টি নিম গাছের টুকরো নাসির প্রভাষক এখানে বিক্রয় করায় তাকে ২ হাজার ৯শ’ টাকা দিয়েছি। আকাশমণি অন্য পার্টির কাছে বিক্রয় হয়েছে। নিম গাছগুলো স-মিলেই এখনও আছে।’

অন্যদিকে, টি অ্যান্ড টি মোড়স্থ অপর স-মিলে গাছের সন্ধান নিতে গেলে সেখানে কোনো লোক পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত প্রভাষক নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমি ম্যানেজিং কমিটির দু-একজন সদস্যের অনুমতি সাপেক্ষে কয়েকটি আকাশমণি, নিম, বন কাঁঠালসহ ৮ থেকে ১০টি গাছ বিক্রি করে টি অ্যান্ড টি মোড়ে ৯৫০ টাকা, ১ হাজার টাকায় লাকড়ি ও ২ হাজার ৯শ’ টাকায় বিদুতের স-মিলে গাছ বিক্রি করেছি, তবে আমি ইচ্ছা করে গাছ কাটিনি।’

বিষয়টিতে ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল আশরাফুল ইসলাম জানান, ‘ঘটনাটি আমি জানি না এবং আমি জড়িত এটি সত্য নয়। তবে শিক্ষকদের মুখে শুনেছি ৪০টি গাছ কাটা হয়েছে। কেউ কেউ আরও বেশিও বলেছে। আমি আজই জরুরি মিটিং দিয়ে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।’

আরও পড়ুন : ধামইরহাটে সপ্তাহব্যাপী তাল বীজ রোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন

এ ব্যাপারে কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি প্রকৌশলী ড. ফিজার আহমেদ জানান, ‘আমরা গভর্নিং বডির পক্ষ থেকে কলেজের অতি পুরনো গাছগুলো কাটার অনুমতি চেয়ে সরকারি নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছি। কিন্তু তার তার আগে এভাবে গাছ কেটে রাতের আঁধারে বিক্রি করা অত্যন্ত নিগৃহীত কাজ। আমরা অনতি বিলম্বে জরুরি সভা ডেকে দোষী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

ওডি/নিলয়

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড