কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক জোন তৈরির দাবি এমপি হাসানুল হক ইনুর

কুড়িগ্রাম জেলা জাসদের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে জাসদ সভাপতি এমপি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, এই সম্মেলনে আমাদের দাবি হচ্ছে- তিস্তা বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও। এ জন্য তিস্তা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, গরিব মানুষের চাকরির ব্যবস্থা করা এবং একটি অর্থনৈতিক জোন তৈরির মাধ্যমে ঢাকায় না গিয়ে স্থানীয়ভাবে ভাত-কাপড়ের ব্যবস্থা করা।

তিনি বলেন, গণতন্ত্রের নামে রাজাকার, জঙ্গি ও খুনিদের হালাল করার রাজনীতি বাংলাদেশে করতে দেওয়া হবে না, চলবে না। বাংলাদেশের সংবিধান যারা উড়িয়ে দিতে চায়, জাতির পিতাকে মানে না, ত্রিশ লাখ শহীদ মানে না, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দেয় না- তারা বাংলাদেশের কেউ না।

শুক্রবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে কুড়িগ্রাম শেখ রাসেল অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ওই সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

জাসদ সভাপতি বলেন, ‘আমি বহুদিন আগে বলেছিলাম- বেগম খালেদা জিয়া আপনি পাকিস্তানে চলে যান। বাংলাদেশ ভালো লাগে না, থাকার দরকার কি? উনি এখনো রাজাকারদের পার্টনারশিপে আছেন, জঙ্গি পার্টনারশিপে আছেন। তিনি এখনো পাকিস্তানের ট্রেনেই অবস্থান করছেন।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে বিস্ময়কর উন্নয়ন হচ্ছে। অনেক উন্নয়ন হচ্ছে। সেই উন্নয়নে তাক লাগছে সবাই। কিন্তু সেই উন্নয়নের রেলগাড়ির ভেতরে ঘরকাটা ইঁদুররা ঢুকে গেছে। উন্নয়নের সুফল খেয়ে ফেলছে। সাধারণ মানুষের কাছে সুফল যাচ্ছে না। এই ঘরকাটা ইঁদুররা হল দুর্নীতিবাজ। এদের কোনো জাত নাই, পাত নাই। এই ঘরকাটা ইঁদুররা হচ্ছে অর্থনৈতিক শত্রু, গরিবের শত্রু, দেশের শত্রু। এরা সরকারের ঘরের ভেতরের শত্রু। এরা দিনকে রাত আর রাতকে দিন করছে। এরা টেন্ডারবাজি, ডাণ্ডাবাজি করে মানুষকে অপমান করে। দুর্নীতির সিন্ডিকেটরা উন্নয়নকে আটকে দেবে।

তিনি বলেন, আমি বলি বাইরের শত্রু রাজাকার-জঙ্গিবাজরা, আর ঘরের শত্রু দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটরা। আর গুণ্ডাবাজি করা গুণ্ডা-দলবাজরা। মুক্তিযুদ্ধের যাত্রা করা ট্রেন আজ দুই শত্রু দ্বারা আক্রান্ত। বাইরের শত্রু রাজাকার-জঙ্গিবাদরা বোমাবাজি করেন। ঘরের ভেতরের শত্রু উইপোকার মতো, ঘরকাটা ইঁদুরের মতো উন্নয়নের সুফল খেয়ে ফেলছে। আমি বলি বঙ্গবন্ধুর আমলের মতো বিশ্বাসঘাতক মোসতাক, আর শেখ হাসিনার উন্নয়নে ঘরকাটা ইঁদুররা-গুণ্ডারা হচ্ছে খন্দকার মোসতাকের বংশধর। বিশ্বাসঘাতকের দল।

আরও পড়ুন : নির্দিষ্ট সময়ের আগেই গাইবান্ধায় স্কুল ছুটির অভিযোগ

তিনি আরও বলেন, জাসদ জঙ্গি দমনে, রাজাকার দমনে শেখ হাসিনার সাথে ঐক্যে আছে। এই ঐক্যকে বিজয় রূপে কার্যকর করতে হলে ঘরের ভেতরের শত্রু ঘরকাটা দুর্নীতিবাজ ইঁদুরদের আর গুণ্ডাদের ধ্বংস করার লড়াইয়েও আছি আমরা।

জাসদ নেতা লুৎফর রহমান বাচ্চুর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নইমুল আহসান জুয়েল, ওবায়দুর রহমান চুন্নু, আব্দুল্লাহিল কাইয়ুম, এমদাদুল হক এমদাদসহ জেলা নেতৃবৃন্দ।

সম্মেলনকে ঘিরে শেখ রাসেল অডিটোরিয়ামে ছিল উপচে পরা মানুষের ভিড়। পুরো অডিটোরিয়াম ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। জেলার ৯টি উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী জেলার প্রতিনিধিগণ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।

পরে সম্মেলনে গোলাম হাবিবুর রহমান বিদ্যুৎকে সভাপতি এবং তৌহিদুল ইসলাম বকসী ঠান্ডাকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা জাসদের ৪৪ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।

ওডি/নিলয়