• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

কয়রাবাসীর ভোগান্তি লাঘবে সড়ক প্রশস্তকরণ কাজ চলমান

  ওবায়দুল কবির সম্রাট, কয়রা (খুলনা)

২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৪:৫৪
কয়রা-বেতগ্রাম সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের চলমান কাজ (ছবি : দৈনিক অধিকার)

সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের আওতাধীন খুলনার কয়রা উপজেলার কাশিরহাট থেকে বেতগ্রাম পর্যন্ত প্রায় ৬০ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণ ও বাঁক সরলীকরণ প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ায় জনমনে স্বস্তি ফিরেছে। তুলনামূলক কম প্রশস্ত ও বেহাল এ সড়ক দিয়ে কয়রাসহ চারটি উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকি নিয়ে জেলা শহরে যাতায়াত করে আসছিলেন। এতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ও নানামুখী ভোগান্তি পোহাতে হতো তাদের। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান হবে এ অঞ্চলের মানুষের।

সংশ্লিষ্ট সূত্র অনুযায়ী, গত বছরের ২১ জুন ‘বেতগ্রাম-তালা-পাইকগাছা-কয়রা সড়ক উন্নীতকরণ’ প্রকল্পটি একনেক সভায় পাশ হয়। এ বছরের ২২ জানুয়ারি প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য মোজাহার এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয় সংশ্লিষ্ট দফতর। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩৯ কোটি ৫৮ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। ২০২২ সালের ৩০ জুন কাজের মেয়াদ শেষ হবে। এ মুহুর্তে প্রকল্পটির ২০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানা গেছে।

কয়রা সদর ইউনিয়নের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান এসএম বাহারুল ইসলাম বলেন, এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের যাতায়াত ভোগান্তির অবসান হবে। এ অঞ্চলের সকল ব্যবসায়ীর জন্য এ সড়কটি অধিক গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় চিংড়ি ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হবে।

স্থানীয়রা জানান, আশির দশকে এ সড়কপথে জেলা শহরে যাতায়াত শুরু হয়। সে সময় কয়রা থেকে পাইকগাছা পর্যন্ত কাঁচা রাস্তা ছিল। পাইকগাছা থেকে বেতগ্রাম পর্যন্ত ছিল ইটের সোলিং। নদীপথে দীর্ঘসময় এড়াতে শুষ্ক মৌসুমে এভাবেই সড়কপথে যাতায়াত করতো মানুষ। নব্বই দশকের শুরুতে সড়কের কিছুটা উন্নয়ন করা হলে বাস চলাচল শুরু হয়। পরে ’৯৮ সালের শুরুতে কয়রা থেকে বেতগ্রাম পর্যন্ত সড়ক শতভাগ উন্নয়ন করা হয়। তবে সড়কের প্রশস্ততা ও অর্ধশত বাঁক থাকায় যাতায়াতে নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয় যান চালকদের। ওই সময় থেকে সড়কটি প্রশস্তকরণ ও বাঁক সরলীকরণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন এ অঞ্চলের মানুষ। দীর্ঘ ২২ বছর পর স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ মো. আক্তারুজ্জামান বাবুর প্রচেষ্টায় তা বাস্তবায়ন হওয়ায় মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

সওজ সূত্র জানায়, প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম সমূহের মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ ১১.২৫ হেক্টর, বিদ্যমান পেভমেন্ট মজবুতিকরণ ২৫.৫১ কিলোমিটার, বিদ্যমান পেভমেন্ট পুনঃনির্মাণ ৬.৫৮ কিলোমিটার, বাঁক সরলীকরণ ৪.৮০ কিলোমিটার, সার্ফেসিং ৬০.৪৪ কিলোমিটার, আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ ২৩টি, নদী শাসন কাজ একশ’ মিটার, আরসিসি প্যালাসাইডিং ৯ হাজার মিটার, ব্রিক টো ওয়াল ৭ হাজার দুইশ’ মিটার, আরসিসি টো ওয়াল ১৮ শ’ মিটার, আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল (৫.০ মিটার উঁচু) ৭ শ’ মিটার, সার্ফেস ড্রেন নির্মাণ ২ হাজার ৩৫০ মিটার, কনক্রিট ইউ-ড্রেন নির্মাণ সাড়ে ৬ হাজার মিটার, পরিদর্শন বাংলো নির্মাণ, নির্মাণকালীন রক্ষণাবেক্ষণ, ইউটিলিটি সিফটিং, জেনারেল ও সাইট ফ্যাসিলিটিস, বনায়ন, ট্রাফিক সাইন, সিগনাল রোড মার্কিং ও কিলোমিটার পোস্ট ইত্যাদি কাজ করা হবে।

চলমান এ প্রকল্প সম্পর্কে কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম মোহসিন রেজা বলেন, প্রত্যন্ত জনপদের মানুষের কথা চিন্তা করে মেগা প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। এ প্রকল্পটির কাজ শেষ হলে স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্যে গতিশীলতার সাথে সাথে দক্ষিণের এ জনপদে আমূল পরিবর্তন হবে।

আরও পড়ুন : কুড়িগ্রামে বন্যায় কৃষিতে ক্ষতি ৩১ কোটি টাকা

এ অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নে সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জানিয়ে খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. আকতারুজ্জামান বাবু বলেন, জেলা সদর থেকে উপজেলায় যাতায়াতের জন্য বিপরীত কোনো সড়ক না থাকায় বিভিন্ন সময় সরু এ সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচলে দুর্ঘটনা ঘটে। আমার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অংশ হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার পরপরই বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট সকলকে অবহিত করি। দক্ষিণের এ জনপদের মানুষের কথা ভেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তা পূরণ করেছেন।

ওডি/এএম

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড