মোহাম্মাদ শাহআলম মিয়া, ঝিনাইদহ
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের মোবারকগঞ্জ চিনি কলটি রক্ষায় প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার ফলে লোকসানের পরিমাণ কমতে শুরু করেছে। মিলের শ্রমিকদের কাজে উৎসাহ যুগিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ আনোয়ারুল আজীম আনার।
দেশের এই চিনি কলটির শ্রমিক ও আখ চাষিরা যেমন তাদের বকেয়া বুঝে পাচ্ছেন, তেমনি লোকসানের হাত থেকে রক্ষা হয়ে হচ্ছে চিনিকলটি। গত দুবছর কৃষক ও কর্মকর্তা কর্মচারিদের বেতন-ভাতা বকেয়া থাকছে না, তারা নিয়মিত বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। পাশাপাশি আখ চাষিদের ও টাকা পড়ে থাকছে না। আখ বিক্রির সাত দিনের মধ্যে কৃষকদের মোবাইল ফোনে টাকা পেয়ে যাচ্ছে। মোবারকগঞ্জ চিনিকল নানা প্রতিকুলতা কাটিয়ে সফলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
জানা যায়, ঝিনাইদহের ৬ উপজেলা ছাড়াও যশোরের দু’টি উপজেলা নিয়ে গঠিত মোচিক জোন মিলের আটটি সাব জোনের আওতায় চাষ যোগ্য জমির পরিমাণ রয়েছে সাড়ে তিন লাখ একর। আখ ক্রয় কেন্দ্র রয়েছে ৪৮টি। চিনিকলের ৮টি সাব জোনের অধীনে ৪৮ কেন্দ্রের কৃষক রয়েছে প্রায় সাত হাজার। এবছর ১ সেপ্টেম্বর থেকে আখ রোপণ শুরু হয়েছে এবং মৌসুমের জন্য রোপণের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করেছে ৭ হাজার একর জমিতে।
মোবারকগঞ্জ চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি ও শ্রমিক ফেডারেশনের আইন ও দরকষাকষি সম্পাদক গোলাম রসুল জানান, মুজিববর্ষে একের পর এক রাষ্ট্রীয় কলকারখানা বন্ধ করে সোনার বাংলা গড়া সম্ভব নয়। দেশের ১৫টি চিনিকল প্রতি বছর সরকারকে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা ভ্যাট প্রদান করে। সেখানে এসব মিলে বিভিন্ন যৌক্তিক কারণে লোকসান হয় ২০০ কোটি টাকা। মিলের উন্নয়নে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছেন।
মোচিকের ইক্ষু উন্নয়ন বি সাবজোনে প্রায় ১০৭ একর জমি রয়েছে। সেখানে অর্ধেক জমিতে মিল কর্তৃপক্ষ আখ রোপণ করে যা তুলতে প্রায় দুটি মৌসুম পার হয়। অপর জমি ফেলে না রেখে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ৬ মাসের জন্য লিজ দেওয়া হয়। স্থানীয় কৃষকরা সে জমিতে ধানের আবাদ করে থাকে। এতে করে মিলের প্রায় মৌসুমে ১৭ লাখ টাকা লাভ হয়।
চিনি কলের জমি লিজ নেওয়া সময় জমিতে ফসল রোপণের আগেই চুক্তির টাকা মিলের হিসাব শাখায় জমা দিতে হয়। কৃষি ফার্মে ১৩ জন কৃষক ফেলে রাখা জমিতে ধানের চাষ করছেন। তন্দধ্যে আমিনুর রহমান ১২ একর, গোলাম মোস্তফা ১ একর, হাছানুর রহমান ১ একর, লাভলু ১ একর, অহিদুল ১ একর জমিতে ১৩ জন কৃষক ধানের চাষ করেছেন।
এছাড়া প্রতি একর জমি ৬ হাজার টাকায় কৃষকরা লিজ নিয়েছেন। সেখানে ৪৯ একর জমিতে মিল কর্তৃপক্ষ ২০২০/২০২ মৌসুমে আখ রোপণ করেছে তন্মধ্যে ২৫ একর রয়েছে ভিত্তি বীজ প্লট। ঈশ্বরদী- ৩৭ এ জাতের আখ চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি বীজ ক্ষেত রোপণ করে। এর আগে মোচিকের ইক্ষু উন্নয়ন বি সাবজোনে প্রায় ১০৭ একর জমিতে প্রতি বছর ১৯ লাখ টাকা লোকসান যেত সেখানে এখন প্রতি বছর আখ থেকে আয় হয় ১২ লাখ টাকা ও ধান থেকে ৫ লাখ টাকা।
লিজ নিয়ে ধানের আবাদ করা কৃষক অহিদুল ইসলাম, আমিনুর রহমান, লাভলু মিয়া জানায়, তারা এ মাসেই ধান কেটে জমি মিল কর্তৃপক্ষকে ফেরত দিবে এমন অঙ্গিকার দিয়ে জমি নিতে হয়েছে।
আরও পড়ুন : ঝিনাইদহে বজ্রপাত প্রতিরোধে তালবীজ রোপণ
মোচিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুর রহমান বলছেন, চিনি শিল্পের নিয়মনীতি মেনেই এসব করা হয়ে থাকে। কর্পোরেশনের নিয়ম রয়েছে কোনো জমি ফাকা রাখা যাবে না। পতিত জমি থাকলে সেটা থেকে আয়ের উৎস বের করতে হবে। যে কারণে জমি গুলি স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে লিজ দিয়ে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে থাকে চিনি কলটি।
ওডি/এসএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড