মিলন মাহমুদ, সিংগাইর (মানিকগঞ্জ)
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে গাজীখালী নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি গত বছরের বন্যার কবলে নদী গর্ভে চলে গেছে। সেতুটি পুনঃনির্মাণ না হওয়ায় ধামরাই ও সিংগাইর দুই উপজেলার মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ও চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
উপজেলার তালেবপুর ইউনিয়নের কলাবাগান মাজার সংলগ্ন গাজীখালী নদীতে সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে ভাঙা অবস্থায় পরে আছে। যা এখন ১৫টি গ্রামের জনসাধারণের গলার কাটায় পরিণত হয়েছে।
সবজি চাষে সমৃদ্ধ এ অঞ্চল। উৎপাদিত সবজি রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করতে হলেও এ সেতুর কারণে প্রায় ৭-৮ কিলোমিটার ঘুরে সিংগাইর সদর দিয়ে রাজধানীতে যেতে হয়। এতে পরিবহন খরচ আগের চাইতে দ্বিগুণ গুনতে হয়। ওই এলাকার কৃষকদের একদিকে সময় অপচয় ও অন্যদিকে আর্থিক ক্ষতির সম্মূখীন হতে হচ্ছে।
(ছবি : দৈনিক অধিকার)
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত বছরের বন্যায় পানির শ্রোতে গাজী খালী নদীর পূর্বপাশের কলাবাগান মাজার সংলগ্ন সেতুর গোড়ার মাটি ধ্বসে যায়। এরকিছু দিন পর পুরো সেতুটি নদীতে ভেঙে পড়ে। তখন থেকে কর্তৃপক্ষ সংস্কার ও সেতু নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
ফলে এবারের বর্ষা মৌসুমে সিংগাইর উপজেলার তালেবপুর, ইরতা, নতুন ইরতা, কাংশা, ধামরাই উপজেলার খরারচর, বহুতক‚ল, আটি মাঠাইনসহ ১৫টি গ্রামের হাজার হাজার জনসাধারণের একটি সেতুর কারণে চলাচলের জন্য মহাদুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বর্তমানে সেতুটি ভেঙে নদীগর্ভে পড়ে থাকায় জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
একদিকে নোভেল করোনা ভাইরাসের কারণে মানুষ ঘরবন্দী হয়ে কর্মহীন হয়ে পড়েছে। অপরদিকে দুই উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় এ অঞ্চলের হতদরিদ্র কৃষকের উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতে না পেরে আরও অসহায় হয়ে পরেছেন।
এমনকি সেতু ভেঙে যাওয়ার কারনে সরকারি-বেসরকারি ও ব্যক্তিগত সহায়তা পৌঁছান প্রায় অসম্ভব হয়ে পরেছে। ওই এলাকার মানুষের নিত্য দিনের বাজার করতে যেতে হয় সিংগাইর সদর ও ধামরাইয়ের খরারচর বাজারে। ১৫ গ্রামের মানুষ ওই সেতুটি পার হয়ে হাট-বাজার, স্কুল-কলেজসহ রাজধানী ঢাকায় যাতায়াত করত। সেতুটি ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে ঘরবন্দী মানুষের কষ্টের যেন শেষ নেই।
উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধিনে উপজেলার তালেবপুর ইউনিয়নের কলাবাগান মাজার সংলগ্ন গাজীখালী নদীর ওপর বীরমুক্তিযোদ্ধা সোহরাব হোসেন সেতুনির্মাণ করা হয়। ৪০ মিটার দৈর্ঘ্য সেতুর প্রাক্কালিক ব্যয় ধরা হয় ৫৬ লাখ ৫৮ হাজার ১০৬ টাকা। এটি নির্মাণ কাজ শেষে বিগত ২০১৭ সালের ১২ মে মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম উদ্বোধন করেন।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন এই সেতুর ওপর দিয়ে তালেবপুর ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষসহ স্কুল, কলেজ পড়ুয়া ছাত্র/ছাত্রীদের যাতায়াতের রাস্তা এটাই। সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় এ এলাকার মানুষ গুরুতর অসুস্থ হলে রোগী পরিবহন করতে অসুবিধার কারণে অনেক ক্ষতির সম্মূখীন হয়েছেন। তাই দ্রুত সেতুটি নির্মাণ করা হলে জনগণের আর কোন কষ্ট থাকবে না বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে তালেবপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. রমজান আলী বলেন, নদীটি বড় আর সেতুটি ছোট করে নির্মাণ করার কারনে ভেঙেছে। ওই খানে বর্ষার পরে নতুন ৬০ মিটারের সেতু দ্রুত নির্মাণ করা হবে।
আরও পড়ুন : রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ছাড়াই পরপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মো. রুবাইয়াত জামান বলেন, সেতুটি ভেঙে ব্রিজ হিসেবে অনুমোদন পেয়েছে। শ্রীঘ্রই সয়েল টেস্ট করে দরপত্র আহবানের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করা হবে। ব্রিজের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ কোটি টাকা।
ওডি/এফই
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড