• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

কুড়িগ্রামে বন্যায় কৃষিতে ক্ষতি ৩১ কোটি টাকা

  হুমায়ুন কবির সূর্য, কুড়িগ্রাম

২০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৫:১৭
কৃষিকাজে ব্যস্ত কৃষক (ছবি : দৈনিক অধিকার)

কুড়িগ্রামে চলতি মৌসুমে পক্ষকালব্যাপী বন্যায় শুধুমাত্র কৃষিতে ক্ষতি হয়েছে ৩১ কোটি ৩ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৫৭৯ জন কৃষক। এছাড়াও পুকুর তলিয়ে যাওয়ায় মৎস্য বিভাগের ক্ষতি হয়েছে ৭৪ লক্ষ ৫১ হাজার টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ২২৬ জন মাছচাষি। পুকুর ডুবে গেছে ২৯১টি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ২১ আগস্ট থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থায়ী বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে রোপা আমনের। জেলায় এবার ২৬ হাজার ৪০৫ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত ছিল। এর ফলে সম্পূর্ণ ক্ষতি হয়েছে ২ হাজার ৭৯৬ হেক্টর রোপা আমন এবং আংশিক ক্ষতির পরিমাণ ২৫ হাজার ৪শ হেক্টর। লেট বন্যার কারণে শাক-সবজি চাষিরা কম ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এবার জলমগ্ন হওয়া ১ হাজার ১৯৫ হেক্টর সবজির মধ্যে ৬১ হেক্টর শাকসবজি সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়। অপরদিকে ৬৭ হেক্টর বীজতলা পচে সম্পূর্ণ চাষের অনুপযোগী হয়ে যায়।

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সদর, চিলমারী, নাগেশ্বরী ও উলিপুর উপজেলা। উপজেলা ভিত্তিক ফসলের ক্ষতি হয়েছে সদরে ৭৯২ হেক্টর, চিলমারীতে ৫১৪ হেক্টর, নাগেশ্বরীতে ৪৯৫ হেক্টর, উলিপুরে ৩৯৮ হেক্টর, রৌমারীতে ৩০৮ হেক্টর, চর রাজিবপুরে ১৬২ হেক্টর, ফুলবাড়ীতে ১২৫ হেক্টর, ভুরুঙ্গামারীতে ১২০ হেক্টর ও রাজারহাটে ১০ হেক্টর।

এর ফলে রোপা আমনচাষে ১ লক্ষ ৩৯০ জন কৃষকের ২৯ কোটি ১১ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা, ৪ হাজার ৪৯৫ জন শাকসবজি চাষির ১ কোটি ২২ লাখ টাকা এবং ২৮ হাজার ৬৯৪ জন বীজতলা কৃষকের ৭০ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকাসহ মোট ১ লক্ষ ৩৩ হাজার ৫৭৯ জন।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কালিপদ রায় জানান, চলতি বন্যায় ৪৪ দশমিক ৬০ হেক্টর আয়তনের ২৯১টি পুকুর প্লাবিত হয়ে ৬৪ দশমিক ৬০ মে.টন মাছ ভেসে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৬২ জন মাছচাষি। টাকার অংকে মোট ক্ষতি হয়েছে ৭৪ লক্ষ ৫১ হাজার টাকা।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা ডা. আব্দুল হাই সরকার জানান, এবারের বন্যায় গো-চারণভূমি ডুবে যাওয়ায় গবাদি পশুর জন্য কিছুটা সমস্যা হয়েছে। বিশেষ করে কুড়িগ্রাম সদর ও চিলমারীতে এই ক্ষতিটি বেশি হয়েছে। সরকার ক্ষতির দিকটি বিবেচনা করে ৩১ লক্ষ ৪২ হাজার টাকার গো-খাদ্য প্রণোদনা দিচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মঞ্জুরুল হক জানান, বন্যায় কৃষকদের একটা আগাম প্রস্তুতি থাকে। পানি নেমে যাওয়ার পর থেকে অনেকেই ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। চর এলাকাগুলোতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা স্থানীয় জাতের ধান ছিটিয়ে নতুন করে বপন শুরু করেছে। এছাড়াও সরকারিভাবে যে বীজতলা করে দেওয়া হয়েছে সেখান থেকেও কৃষক বীজ নিয়ে কাজে লাগাচ্ছে। এতে বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আরও পড়ুন : জয়পুরহাটে ধর্ষণ মামলায় একজনের যাবজ্জীবন

জেলা ত্রাণ ও পুণর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানান, এখন পর্যন্ত ৩৭০ মে.টন চাল ও ২০ লক্ষ টাকা এবং শিশুখাদ্য ১০ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকার উপ-বরাদ্দ উপজেলাগুলোতে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ৩৩৩ নম্বরে সহযোগিতার জন্য ১ কোটি ৫৯ লক্ষ টাকা মজুদ রয়েছে।

ওডি/এএম

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড