বিয়ের প্রলোভনে কিশোরী ধর্ষণ, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মৃত্যু

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কল্পনা (১৫) নামে এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তার মৃত্যুতে একই এলাকার আশিক নামে এক যুবককে দায়ী করছেন ভুক্তভোগীর পরিবার।

সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ভোররাতে ময়মনসিংহ সদর হাসপাতালে চিৎিসাধীন অবস্থায় ওই নারী মারা যান। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করেছেন।

কল্পনা ভৈরব পৌর শহর আমলাপাড়া গ্রামের মোশাররফ মিয়ার মেয়ে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত আশিকের পরিবারের সদস্যরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।

ভুক্তভোগীর পরিবার ও ভৈরব থানা সূত্রে জানা যায়, আমলাপাড়া গ্রামের মোশারফ মিয়ার মেয়ে কল্পনা একই এলাকার ছগির মিয়ার বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন। অভিযুক্ত আশিক মিয়া ও তার মা ভাইদের নিয়ে ওই বাড়ির নীচতলায় ভাড়া থাকতো। আসা যাওয়ার সুবাদে আশিক ও কল্পনার মধ্যে প্রেমের সম্পর্কের এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠে।

গত বছরের ৫ ডিসেম্বর রাত আটটার দিকে আশিক মিয়া (১৮) বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরী কল্পনাকে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনায় শারীরিকভাবে কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যায়। বিভিন্ন পরীক্ষা শেষে জানা যায় কল্পনা অন্তঃসত্ত্বা। পরে বিষয়টি কল্পনার বাবা আশিকের পরিবারকে জানালে আশিকের পরিবার ঐ ঘটনার পর থেকে কিশোরীর পরিবারকে বিভিন্ন রকমের ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। পরে বিচার না পেয়ে কল্পনা বাদী হয়ে ২৬/০৮/২০২১ সালে ভৈরব থানায় নারী ও শিশু দমন নির্যাতন আইনে আশিক, বড় ভাই নূরুল আমিন (২৫) ও মা আসমা বেগমকে (৪৫) আসামী করে মামলা করেন। মামলা দায়েরের পর ২নং আসামীকে পুলিশ গ্রেফতার করে কিশোরগঞ্জ জেল হাজতে প্রেরণ করেন। মামলার ২০ দিন পাড় না হতেই আবারও অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় ময়মনসিংহ সদর হাসপাতালে। মঙ্গলবার ভোররাতে চিৎিসাধীন অবস্থায় কল্পনা সেখানেই মারা যায়।

আরও পড়ুন : ধামরাইয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে আ.লীগ নেতার বাড়িতে হামলা

এ বিষয়ে ভৈরব থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) কাজি মাহফুজ হাসান সিদ্দিকি বলেন, কিছু দিন পূর্বে কল্পনা বাদী হয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ৯ (১)/৩০ ধারায় একটি মামলা রুজু করা হয়। মামলার পর অভিযুক্ত এক আসামীকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। আজ জানতে পারলাম কল্পনা চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যায়। নিহতের ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ওডি/জেআই