শাকিল মুরাদ, শেরপুর
শেরপুরের নকলায় জিনের বাদশাহ'র খপ্পরে পড়ে সর্বশান্ত হয়েছেন হবিরণ বেগম। ভয় আর স্বর্ণের লোভে ছেলের জমানো টাকা দিতে হয়েছে কথিত জিনকে। তাই দিশেহারা হয়ে রবিবার নকলা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তিনি। হবিরণ বেগম বানেশ্বরদী ইউনিয়নের বানেশ্বরদী গ্রামের বাসিন্দা।
সাধারণ ডায়েরিতে তিনি উল্লেখ করেন, গত ১ সেপ্টেম্বর রাতে তার মোবাইল ফোনে (০১৭৬৪৯০৬০৯০) এই নম্বর থেকে কল আসে। রিসিভ করার পর অপরপ্রান্ত থেকে এক ব্যক্তি নিজেকে মসজিদের ইমাম বলে পরিচয় দেয়। এরপর কথিত সেই ইমাম একটি জায়নামাজ কেনার কথা বললে হবিরণ বেগম নেকির আশায় মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশের মাধ্যমে ৭শ টাকা পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু এখানেই ঘটনা শেষ হয়নি। কারণ কথিত জিনের আরও টাকা লাগবে তাইতো দুদিন পর ৩ সেপ্টেম্বর (০১৩০৫৩৯২১৭৪) এই নাম্বার থেকে তার কাছে আবার ফোন আসে। এবার হবিরন বেগমকে ভয় দেখানো হয়।
‘জিনের বাদশাহ’ পরিচয়ে বলা হয়, তার ছেলে ও নাতির সামনে অনেক বিপদ। তার কথামতো কাজ করলে বিপদ কেটে যাবে। শুধু তাই নয়, পাবেন স্বর্ণের কলস ও অলংকার। আর না শুনলে তার পরিবারের লোকজন মারা যাবে। তখন জিনের বাদশাহ বলে, আজ ২৮ হাজার ৬শ টাকা বিকাশে দিতে হবে। সহজ সরল হবিরন বেগম প্রিয়জন হারানোর ভয় আর স্বর্ণের লোভে ছেলের জমানো টাকা তিনি জিনের কথামত বিকাশ করেন।
ঠিক পরেরদিন একই নম্বর থেকে ফোন করে তার কাছে টাকা চাওয়া হয়। বালা-মসিবত দূর করার পাশাপাশি সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে এবার তার কাছে দাবি করা হয় ৫১ হাজার ৪শ টাকা। ধারদেনা করে সেই টাকাও বিকাশ করেন হবিরন। টাকা পাঠানোর পর সেই নম্বরটি বন্ধ করে কথিত জিনের বাদশাহ।
হবিরনের ছেলে সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমাদের জমানো টাকাগুলো আমার মা বিকাশে দিয়ে দিছে, আমাদের কিছুই বলে নাই। এমন প্রতারণা এই এলাকায় আগে আরও ঘটেছে। তাই প্রতারকদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি করছি।
বানেশ্বরদী এলাকার সমাজ সেবক মাফিজুল ইসলাম বলেন, আমাদের জেলায় অনেক মানুষ এভাবে প্রতারকের খপ্পরে পড়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাঠাচ্ছে। আমরা এর বিচার চাই।
নকলা থানার অফিসার ইনচার্জ মুশফিকুর রহমান বলেন, হবিরন বেগম একটা জিডি করেছেন। এটা সংঘবদ্ধ দল। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
ওডি/এমএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড