ওবায়দুল কবির সম্রাট, কয়রা (খুলনা)
বসন্ত যেমন শীতের রিক্ততা মুছে প্রকৃতিকে সাঁজায় নতুন রূপে। বসন্তের ছোঁয়ায় বিবর্ণ প্রকৃতিতে জেগে উঠে নতুন প্রাণের স্পন্দন। গাছে গাছে নতুন পাতা, ডালে ডালে কোকিল। রঙিন ফুলে প্রকৃতি সুশোভিত হয়ে ওঠে। তেমনি দেড় বছর পর প্রাণের স্পন্দন ফিরে এসেছে খুলনার কয়রার শিক্ষাপ্রাঙ্গণে।
বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে দীর্ঘ ১৭ মাস ২৬ দিন পর সারা দেশের ন্যায় খুলনার কয়রা উপজেলায় ১২ সেপ্টেম্বর খুলেছে স্কুল ও কলেজ। সকাল ৮টা থেকে কয়রা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বাস্থ্যবিধি মেনে, মাস্ক পরিধান করে ইউনিফর্ম পড়ে, কাঁধে বই-খাতার ব্যাগ ঝুলিয়ে সারি সারি শিক্ষার্থীরা আবারো ফিরেছে তাদের প্রিয় ক্যাম্পাসে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো প্রথম দিন উৎসব আয়োজনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানে বরণ করে নেন শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীদের কলরবে মুখরিত হয়ে উঠেছে প্রিয় শিক্ষাপ্রাঙ্গন। করোনার ভয়াল থাবার মধ্যেই চিরচেনা রূপে ফিরেছে স্কুল ও কলেজ। প্রিয় ক্যাম্পাসে ফিরতে পেরে খুশি শিক্ষার্থীরা। প্রিয় শিক্ষক-প্রিয় বন্ধু-সহপাঠীদের পেয়ে কিছুতেই থামছে না আনন্দের উচ্ছ্বাস। গত দেড় বছরের নানা অভিজ্ঞতা, আনন্দ-বেদনার কথা সহপাঠীদের জানাতে ভুলছে না।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বইছে এই উচ্ছ্বাস। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সর্বস্তরের মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ছবি ও ভিডিয়ো শেয়ার করে এই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কয়রা সদরের কয়রা মদিনাবাদ সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সুন্দরবন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, কয়রা সরকারি মহিলা কলেজ, কয়রা কপোতাক্ষ কলেজসহ সদরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায় স্কুলগুলোর ফটকে শিক্ষার্থীদের তাপমাত্রা মেপে প্রবেশ করানো হচ্ছে। তাদেরকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। ফটকে স্কুলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে শিক্ষকদের অবস্থান করতে দেখা গেছে।
তবে সদরের বাইরে অনেক স্কুলের ক্লাস রুমে দেখা যায়, এক বেঞ্চে তিন-চার জন গাদাগাদি করে বসছে। ক্লাসে গিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানছে না অনেকেই। অন্যদিকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে কিনা তা পরিদর্শন করতে দেখা যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ্বাসকে।
কয়রা সুন্দরবন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মাইশা জামান বলেন, কতদিন পর সবার সঙ্গে দেখা হয়েছে। আর যেন এমন পরিস্থিতি না হয়। আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠান খোলা দেখতে চাই। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই স্কুল আঙ্গিনায় থাকবো আমরা।
আরও পড়ুন : নৌকা দিয়ে পারাপার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা
কয়রা সরকারি মহিলা কলেজে অধ্যক্ষ আমিরুল ইসলাম বলেন আজ আমরা উচ্ছ্বসিত, আমাদের শিক্ষার্থীরাও উচ্ছ্বসিত। শিক্ষার্থী ছাড়া আমাদের জীবন অর্থহীন। আজ তারা এসেছে, ক্যাম্পাস প্রাণচঞ্চলতা ফিরে পেয়েছে। শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুমে ফিরে পেয়ে ভালো লাগছে।
এছাড়াও কোনো শিক্ষার্থী অসুস্থ হলে তাদের ওই সময় প্রতিষ্ঠানে না আসার অনুরোধ করেন তিনি।
ওডি/এফই
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড