ওবায়দুল কবির সম্রাট, কয়রা, খুলনা
খুলনার কয়রা উপজেলায় কোভিড-১৯ গণটিকা কর্মসূচিতে গণদুর্ভোগ হয়রানি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। আর নিয়মিত টিকাদান কার্যক্রমেও দুর্ভোগের অন্ত নেই। দূর-দূরান্ত থেকে বিভিন্ন কেন্দ্রে টিকা গ্রহণ করতে এসে ফিরে যেতে হচ্ছে অনেককে। কোনো কোনো কেন্দ্রে দায়িত্বরত স্বাস্থ্যকর্মী বা হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট লোকজন বিশেষ ব্যক্তিদের টিকা দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
চেয়ারম্যান কিংবা আত্মীয়-স্বজন, দলীয় নেতাকর্মীদের টোকেন কিংবা সুপারিশে অনেকে দেরিতে এসেও সবার আগে টিকা গ্রহণ করে ফিরতে পারছেন। দ্বিতীয় ডোজের টিকার দিনও টোকেনের মাধ্যমে বিশেষ লোকদের প্রথম ডোজের টিকা ও দেওয়া হয়, যার সত্যতা স্বীকার করেছেন সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যকর্মী ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
এ দিকে, অনেকেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও টিকা নিতে ব্যর্থ হচ্ছেন। উপজেলার কয়েকটি টিকা কেন্দ্রে সরেজমিনে ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে এসব অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) উপজেলা সদরের কয়রা মদিনাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বুথে দ্বিতীয় ডোজের টিকা চলাকালে কিছু মানুষকে প্রথম ডোজের কোভিড-১৯ সিনোফার্ম (ভিরোসেল) টিকা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় শহীদুল্লাহ সানা আনিসুর রহমানসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, প্রথম ডোজের টিকা নিতে চাইলে দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, আজ দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হচ্ছে। এখানে শুধুমাত্র চেয়ারম্যান সাহেবের নিজস্ব কিছু লোককে প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া হবে। আর স্বাস্থ্য কর্মীরা বলেন, চেয়ারম্যানের অনুমতি হলে এই টিকা দেওয়া যাবে।
ভুক্তভোগীরা চেয়ারম্যানের অনুমতি না পাওয়ায় আক্ষেপ করে বলেন, মাত্র কয়েকদিন পর ইউপি নির্বাচন, আমরা আওয়ামী লীগ করি। নৌকার লোক হওয়ায় চেয়ারম্যান অনুমতি না দিয়ে তাড়িয়ে দেন। এ সময় টিকা বুথের সামনে বিশৃঙ্ক্ষলার সৃষ্টি হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ওই বুথের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য সহকারী রুহিত সরকার বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার নির্দেশে চেয়ারম্যানের নিজস্ব কিছু মানুষকে প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ সামনে নির্বাচন, স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন নিয়ম বহির্ভূতভাবে একজন প্রার্থীর পক্ষ নিয়ে টিকার মাঝেও স্বজনপ্রীতি করছে।
এ দিকে, দ্বিতীয় ডোজের গণটিকা বুথে প্রথম ডোজের টিকা দেওয়ার বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার সুদীপ বালা। তিনি বলেন, বিষয়টি অন্যায় হয়েছে, আমার নাম ভাঙ্গিয়ে যারা এটি করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে মঙ্গলবার দুপুরে কয়রা সদর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে চেয়ারম্যানকে পাওয়া যায়নি। পরে ইউপি চেয়ারম্যান এইস এম হুমায়ুন কবিরের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
আরও পড়ুন : উখিয়ায় মাদকসহ দুই রোহিঙ্গা আটক
বিষয়টিতে খুলনার সিভিল সার্জন ডাক্তার নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, দ্বিতীয় ডোজের টিকার বুথে প্রথম ডোজের টিকা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ ধরনের অনিয়ম যদি কেউ করে থাকে তদন্তপূর্বক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে সবাইকে টিকা দেওয়া হবে কাউকে হতাশ না হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
ওডি/আইএইচএন
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড