• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সাপাহারে চাষ হচ্ছে থাইল্যান্ডের ‘কাঠিমন’ আম

  সেলিম রেজা, সাপাহার (নওগাঁ)

০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১১:৫৭
রাজশাহী
কাঠিমন আম (ছবি : দৈনিক অধিকার)

আম হলো ম্যাঙ্গিফেরা গণের বিভিন্ন প্রজাতির গ্রীষ্মমণ্ডলীয় উদ্ভিদে জন্মানো এক ধরনের সুস্বাদু ফল। পৃথিবীতে প্রায় আমের কয়েকশ জাত রয়েছে। যেমন ফজলি, ল্যাংড়া, গোপালভোগ, খিরসাপাত, অরুনা, আম্রপালি, মল্লিকা, হাড়িভাঙ্গা, ছাতাপরা, গুঠলি, লখনা, আদাইরা, কলাবতী ইত্যাদি। আমের ফলের আকার, আকৃতি, মিষ্টতা, ত্বকের রঙ এবং ভেতরের ফলের বর্ণ, জাতভেদে পরিবর্তিত হয়। ভারতের মালদহ , মুর্শিদাবাদ-এ প্রচুর পরিমাণে আম চাষ হয়ে থাকে। আম ভারত ও পাকিস্তানের জাতীয় ফল, এবং বাংলাদেশের জাতীয় গাছ। বাংলাদেশের রাজশাহী, নওগাঁ, দিনাজপুর, নাটোর, সাতক্ষীরা, যশোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম চাষ বেশি পরিমাণে হয়ে থাকে। আমকে বলা হয় ‘ফলের রাজা’।

এক সময় আম বছরের একটি নির্দিষ্ট সময় পাওয়া গেলেও এখন বছরজুড়ে বাগানে থাকে আম ও মুকুলের খেলা। কোনো গাছে মুকুল, তো কোনো গাছে আম। আবার পরিপক্ক আমের সাথে গাছে থাকে নতুন মুকুলও। এমনভাবে বছরে তিন বার ‘কাঠিমন’ জাতের আম পান সাপাহার উপজেলার আম চাষিরা। ‘কাঠিমন’ একটি থাই ভ্যারাইটির উন্নতমানের ১২ মাসি আম। এটি থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, মালায়েশিয়ায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয়। এই বিদেশি আমটি বর্তমানে চাষ হচ্ছে বাংলাদেশে। এমনই একজন ‘কাঠিমন’ আম চাষি সাবেদুর রহমান মঞ্জু। তার ‘কাঠিমন’ জাতের আমের বাগান রয়েছে সাপাহার উপজেলার মানিকুড়া গ্রামে।

সাধারণত মে মাসের মাঝামাঝি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত সাপাহারে আম উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের মেয়াদকাল ধরা হলেও ব্যতিক্রম ‘কাঠিমন’ আমের বেলাই। বছর জুড়ে মিলবে ‘কাঠিমন’ আম। বর্তমানে আমের মৌসুম শেষ প্রায় ২মাস আগে। তবে ‘কাঠিমন’ জাতের আম বাজারে মিলছে এবং চাহিদা তুঙ্গে। প্রতিমণ ‘কাঠিমন’ আম বাজারে ১৪ থেকে ১৬ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাহলে প্রতিকেজি আমের মূল্য দাঁড়ায় সাড়ে ৩শ থেকে ৪শ টাকায়।

সাবেদুর রহমান মঞ্জু জানান, প্রায় দুই বছর আগে রংপুরের বিরগঞ্জ থেকে ‘কাঠিমন’ জাতের আমের চারা আনেন। তিনি প্রায় ৩শ চারাগাছ দুইবিঘা জমিতে রোপণ করেন। গাছ লাগানোর এক বছর পর থেকেই মুকুল আসতে শুরু করে।

তিনি আরও জানান, এটি মৌসুমি জাতের আম নয়। এই আম সুস্বাদু ও মিষ্ট। বাজারে চাহিদাও বেশি। এই আম অনেকটাই কাঁচামিঠা আমের মতো। কাঁচা অবস্থাতেও খাওয়া যায়। তবে কাঁচামিঠা আম পাকলে তেমন স্বাদ নেই, কিন্তু ‘কাঠিমন’ আম মিষ্টি হয়। কেজিতে ৪ থেকে ৫টি আম ধরে।

সাপাহার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, ‘কাঠিমন’ মৌসুমি আম না হওয়ায় চাহিদা বেশি। তার ওপরে স্বাদ ভালো। বাড়ির আঙিনায়, ছাদে ড্রামে, পুকুরপাড়ে, বাণিজ্যিক বাগানে এই জাতের আমগাছ লাগানো যায়। বসতবাড়িতে শখ করে দু-একটা গাছ লাগানো যেতে পারে। তবে কেউ যদি দু-এক হেক্টর জমিতেও এ জাতের বাণিজ্যিক বাগান গড়তে চান তো সে ক্ষেত্রে আম্রপালি আমের চেয়ে লাভ কম হবে না। এ জাতের আমের গাছ লাগানোর জন্য চাই উঁচু জমি, যেখানে বন্যা বা বৃষ্টির পানি আটকে থাকে না। বেলে, বেলে দোআঁশ ও উপকুলের লোনা মাটি ছাড়া যেকোনো মাটিতে এই জাতের আম চাষ করা যেতে পারে। চাষ করা যায় লাল মাটি ও পাহাড়েও। তবে দো-আঁশ ও এঁটেল দোআঁশ মাটি সবচেয়ে ভালো। এরূপ মাটিতে জৈবসার ব্যবহার করে চাষ করলে গাছের বাড়তি ও ফলন ভালো হয়।

তিনি আরও জানান, ‘কাঠিমন’ আম আমাদের দেশের আবহাওয়া উপযোগী। আম্রপালির মত ছোট গাছে আম হয়। এই জাতে প্রচুর আম ধরে। একই গাছে একসাথে মুকুল, ছোট, মাঝারি, বড়, পাকা আম থাকে। এই গাছে নতুন কুশি ছাড়লেই মুকুল আসে। এর কোন সিজন আর অফ সিজন নেই।

আরও পড়ুন : ৯ দিনেও ফেরত আসেনি দুই বাংলাদেশির লাশ

সাপাহার উপজেলার আম চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ‘কাঠিমন’ আম ১২মাসি হওয়ায় দাম ভালো পাওয়া যায়। ইতোমধ্যে এই আম চাষ করে লাভবান হচ্ছে অনেকে। তাই এই আমের প্রতি ঝুঁকছে সাধারণ কৃষকগণ। দিনদিন বাড়ছে সাপাহার উপজেলায় এই আমের চাষ।

ওডি/এফই

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড