শেখ জাভেদ, শরীয়তপুর
শরীয়তপুরে আনসার ভিডিপি সদস্য নিয়োগে ঘুষ দিতে না পারায় চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন দুই প্রার্থী। আলাউদ্দিন খান (২২) ও সুমন ভূঁইয়া (২৪) নামে ওই দুই চাকরিপ্রার্থী জেলা কমান্ড্যান্ট কার্যালয় ও প্রেসক্লাবে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
রবিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ওই দুই চাকরিপ্রার্থী প্রতিকার পাওয়ার আসায় তাদের অধিকারের কথা দৈনিক অধিকারকে জানায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তাদের সামনে জেলা আনসার ভিডিপির কমান্ড্যান্ট নাদিরা ইয়াসমিন কোরআন শরিফ এনে পাল্টা অভিযোগকারীদের বলেন, ‘আমাকে টাকা দিয়ে থাকলে কোরআন শরীফ ছুঁয়ে বলেন। আমি ছুঁয়ে বললাম।’ তিনি অভিযোগকারী ও সাংবাদিকদের সামনে বলেন, ‘এরা প্রথমে আনসার ভিডিপির নড়িয়ার টিআই বকুল ম্যাডামের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে, আবার আমাকেও জড়াচ্ছে।’
তিনি বলেন, গত ১২ জুলাই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ঢাকা রেঞ্জের এক আদেশে ফরিদপুরের আনসার ও ভিডিপির কমান্ড্যান্ট মো. সেলিমুজ্জামানকে যাচাই-বাছাই কমিটির প্রধান করা হয়। তার সঙ্গে শরীয়তপুর আনসার ও ভিডিপির জেলা কমান্ড্যান্ট নাদিরা ইয়াসমিন ও সহকারী পরিচালক মামুন হাওলাদারকেও কমিটির সদস্য করা হয়।
তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে গত ১০ আগস্ট তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে আনসার ও ভিডিপির জেলা কমান্ড্যান্টের সহকারী পরিচালক মামুন হাওলাদারকে প্রধান, সদর ও ভেদরগঞ্জ উপজেলা ভিডিপি অফিসারকে সদস্য করা হয়। আমাদের এই তদন্তের পূর্বে তারা ঢাকা সদর দফতরে আরেকটি লিখিত অভিযোগ পাঠান। এখন সদর দফতরের প্রশাসন শাখা থেকে তদন্ত কমিটি আসবে এবং সেই তদন্ত প্রক্রিয়াধীন আছে। যাচাই-বাছাই কমিটি গত ১৩ জুলাই ১৬ জনের মধ্যে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষে ১০ জনকে মনোনীত করে। এদের মধ্যে যোগ্যতাসম্পন্ন আটজনকে ১ আগস্ট থেকে এক বছরের চুক্তিতে জেলার চার উপজেলার পরিবার পরিকল্পনা গুদামের নিরাপত্তায় নিয়োগ দেওয়া হয়।
এই নিয়োগে মোট ৭০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে না পারায় চাকরি বঞ্চিত হয়েছেন বলে লিখিত অভিযোগ করেন আলাউদ্দিন খান ও সুমন ভূঁইয়া। অভিযোগকারী এই দুই যুবক বলেন, ‘আমরা আনসার ভিডিপির প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্য। নড়িয়া উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা গুদামে ভিডিপি সদস্য নিয়োগে আমাদের মনোনীত করা হয়েছিল। নিয়োগের আগের রাতে আনসার ভিডিপির নড়িয়ার টিআই বকুল ম্যাডাম ৩৫ হাজার টাকা করে আমাদের কাছে ৭০ হাজার টাকা ঘুষ চান। বেকার হওয়ায় ঘুষের টাকা দিতে পারিনি আমরা। ফলে চূড়ান্ত পরীক্ষায় মনোনীত হয়েও চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছি। তাই তদন্তপূর্বক অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। বর্তমানে নড়িয়ায় যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তারা প্রশিক্ষণ ছাড়াই চাকরি পেয়েছে।’
তারা বলেন, নিয়ম আছে চাকরির বিরতিকাল দুই বছর। কিন্তু এখানে টাকার বিনিময়ে বিরতিহীনভাবে বছরের পর বছর চাকুরি করছেন অনেকে। এমন অনেক লোক আছে, দেখিয়ে দিতে পারবো। এছাড়াও খোঁজ নিয়ে দেখবেন প্রতিজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চাকরি দিয়েছে। আমরা এলাকার কতিপয় সাংবাদিকের কাছে অভিযোগ নিয়ে গেলে তারা অফিসারদের কাছ থেকে ম্যানেজ হয়ে গেছে। এখন আমরা তাদের কাছে জিজ্ঞাসা করলে উল্টো বোঝায়। আমরা এর সুষ্ঠুবিচার চাই।
আরও পড়ুন : পদ্মা সেতু এলাকা থেকে গ্রেফতার ১৬ ভারতীয়
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আনসার ও ভিডিপির নড়িয়া থানার টিআই বকুল আক্তার বলেন, ‘তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। আমি আনসার ভিডিপির সদস্য নিয়োগ কমিটির কেউ না। কাউকে নিয়োগ দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই।’
ওডি/এএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড